রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

বিএনপির নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত প্রস্তাবনা বাস্তবসম্মত নয়

এই লেখার শুরুতে দু একটি ঘটনার উল্লেখ করে পরে মূল বিষয় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নির্বাচন কমিশন গঠন ও তদসংক্রান্ত ১৩ দফা সুপারিশ প্রস্তাবনায় আসতে চাই। পাঠকদের অনুরোধ থাকবে প্রাসঙ্গিকতার ব্যত্যয় মেনে নিয়ে বিএনপির কর্মকাণ্ডের পর্যালোচনা দয়া করে বিবেচনায় নিবেন।

১.
নবম সংসদে বিএনপি বিরোধী দলে, খালেদা জিয়া সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা। নবম সংসদের মোট কার্যদিবসের মধ্যে মাত্র ১০ দিন তিনি সংসদে উপস্থিত থেকেছেন। ২০১০-২০১১ অর্থবছরের বাজেট পেশের প্রাক্কালে খালেদা জিয়া সংসদের বাইরে একটি অভিজাত হোটেলে তার বাজেট ভাবনা উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হয়ে সংসদের বাইরে বাজেট ভাবনা উপস্থাপন করেছিলেন- সেই বাজেটভাবনা বাস্তবতা বির্বজিত হওয়ায় জাতির কোনো কাজে আসেনি। তবে সংসদে উপস্থাপন করলে হয়তো বা আলোচনার সুযোগ থাকতো- তিনি তা করেননি।

২.
নবম সংসদে বিরোধীদলে থাকাবস্থায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে বিএনপি ও তাদের জোট অংশ নেয়, এমনকি ২০১১ সালে হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগ এমপি দেওয়ান ফরিদ গাজীর মৃত্যুর পর সে আসনে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হয়ে এমপি হয়েছিল। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলোতেও বিএনপির প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিল। আবার ২০১২ সালে নির্বাচন কমিশনের সাথে সংলাপে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে বলেও শেষে নানা অজুহাত দেখিয়ে সংলাপে যায়নি।

এবার মূল প্রসঙ্গে আসছি- অতীতে দেখা গেছে, বিএনপি অনেক গঠনমূলক কথা বললেও কাজ করেছে উল্টো, শুধু নিজেদের ফায়দা হাসিল করেছে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় ৮৮ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল, বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দল, জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্বে ৫ দল মিলে তিনজোটের একটা রূপরেখা ঘোষণা করা হয়। তিন জোটের রুপরেখায় বিএনপির সম্মতি থাকলেও পরে ১৯৯১ এ নির্বাচনে সরকার গঠন করার পর ক্ষমতাসীন হয়ে বিএনপিই সেই রুপরেখা নিয়ে কোনো কাজ করেনি। এমনকি ২০০৬ এর শেষে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংলাপ হলেও নির্বাচন দিতে বিএনপি আগ্রহী ছিল না- ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার বানিয়ে পুনরায় ক্ষমতায় যেতে নীলনকশা করেছিল। ২০১২ সালে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি আলোচনায় বসলে বিএনপি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিলেও সার্চ কমিটি গঠনের বিরোধিতা করে কোনো নামও পাঠানো হয়নি। মহামান্য রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি করে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়েছিলেন। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে, সারাদেশে সহিংসতা করেছে। এমন অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে যাতে দেখা যাবে, বিএনপির কথা ও কাজে বিস্তর ফারাক। সেই বিএনপিই যখন গঠনমূলক (!) কথা বলে তা স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নেওয়া মুশকিল।

২০১৬ এর মার্চ মাসে বিএনপির জাতীয় সম্মেলনে খালেদা জিয়া অনেক চটকদার প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন, যার মধ্যে ছিল প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদসহ ২০৩০ সাল নিয়ে পরিকল্পনা, এমনকি শেখ হাসিনাকে ছাড়া আগামী নির্বাচন করার ঘোষণাও দিয়েছিলেন। (সূত্র: ১৯ মার্চে সংঘটিত বিএনপির কাউন্সিলে খালেদা জিয়ার বক্তৃতা)। ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ প্রথম ২০২১ সালকে সামনে রেখে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের রূপকল্প ঘোষণা করেছিল। বর্তমান সরকার সেই রূপকল্প অনুসরণে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। বিএনপির ২০৩০ পরিকল্পনার অনেকগুলোই এই বর্তমান সরকারের সময়ে বাস্তবায়িত হয়ে গেছে। তাই বলা যায় খালেদা জিয়া ও বিএনপি কার্যত আওয়ামী লীগ প্রণীত সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও রূপকল্পকে অনুসরণ করেই ভিশন ২০২০-২০৩০ ঘোষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার রূপরেখা ঘোষণা করেছে যা অনুযায়ী সরকার কাজ করছে। ফলে তাদের সেই রুপরেখা জাতির মননে কোনো রেখাপাত করতে পারেনি, কার্যত ব্যর্থই হয়েছে।

খালেদা জিয়া নির্বাচন কমিশন নিয়ে ১৩ দফা প্রস্তাব পেশ করার পর স্বাভাবিকভাবেই আলোচনায় আসতে পারে যে তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীকরণে বা কাঠামোর বৃ্দ্ধি করতে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে, সেদিকে আলোকপাত করলে বিএনপির জন্য সুখকর ইতিহাস নেই। বিএনপি যখন সরকারে ছিল তখন কমিশনকে নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য করতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। উল্টো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা থেকে শুরু করে খালেদা জিয়া পর্যন্ত যখনই ক্ষমতায় থেকেছে কমিশনকে বিতর্কিত করেছে, মোটা দাগে কয়েকটি নির্বাচনের কথা উল্লেখযোগ্য হলো জিয়াউর রহমানের ১৯৭৭ সালের হ্যাঁ/না ভোট, ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে জিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়া যেখানে বেতার ক্যুর মাধ্যমে ফল পাল্টে দেয়া হয়েছিল। জিয়াউর রহমানের সৃষ্ট নষ্ট পথে হেঁটেছেন এরশাদ সাহেবও, ১৯৮৬ এবং ১৯৮৮ সালের নির্বাচন এদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে আস্থাহীনতার চরমে নিয়ে তুলেছিল। খালেদা জিয়া প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে জিয়া-এরশাদের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন, মাগুরা উপনির্বাচন, মিরপর ও ঢাকা-১০(বর্তমান ঢাকা-৮) উপনির্বাচন- এগুলো সংগঠিত করে বিএনপি প্রমাণ করেছিল তারা ক্ষমতার জন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে কোনো কুন্ঠাবোধ করে না।আরো বলা যায় ১৯৯৪ সালে মেয়র হানিফ ঢাকা মেয়র নির্বাচিত হবার পরদিন লালবাগে আওয়ামী লীগের বিজয় মিছিলে গুলি করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা সাত জনকে হত্যা করেছিল। সেই কলঙ্কিত অতীত নিয়ে যখন বিএনপি প্রস্তাব উপস্থাপন করে তখন অনেক প্রশ্নের পাশাপাশি এসবের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে নেতিবাচক মনোভাবের উদ্ভব যথেষ্ট যৌক্তিক!

তবে এটা পরিলক্ষিত হয়েছে যে বিএনপি যাই উপস্থাপন করুন তা সময়োপযোগী বা গ্রহণযোগ্য না হলেও বা সংবিধানের সাথে অসঙ্গতির্পূণ হলেও অনেকেই তা নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা করেন, পাশাপাশি সরকারকে এগিয়ে আসার কথা বলেন যার আদৌ কোনো ভিত্তি না থাকলেও জেনে বুঝে তারা এসব কাজ করেন, যাতে করে এসব ব্যক্তিদের নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে নানা সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তাদের মতামত অনেক সময় জাতিকে দিকনির্দেশনা না দিয়ে বরং হতাশ করে। কেউ কেউ ২০১৪ ও ২০১৫ সালের অবরোধ হরতালের সহিংসতায় মানুষ পুড়িয়ে মারা, পেট্রোলবোমাকে collateral damage বলে হত্যা, আগুন সন্ত্রাসকে বৈধতা দিয়েছিল। অসাংবিধানিক ও অযৌক্তিক বিষয়কে বৈধতা দেবার ফলে এদেশে বন্দুকের নলে ক্ষমতা দখলের ঘৃণ্য উদাহরণ রয়েছে, গণতন্ত্রের নামে রাতের পর রাত কারফিউ দেয়া এবং স্বৈরশাসকদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছে।

খালেদা জিয়া তার প্রস্তাবে তাদের আসল অশুভ উদ্দেশ্য আড়াল করতে কিছু ইতিবাচক প্রস্তাব রেখেছেন। জামায়াতের সঙ্গ বিএনপি ছাড়বে না এটা নিশ্চিত। তবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪০ টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে জামায়াত না থাকলেও খালেদা জিয়া তাদের সাথেও আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন যা মূলত যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দল জামায়াতকে আবারো রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠার অপকৌশল। এমনকি বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দিয়ে গঠিত দল ফ্রিডম পার্টির সাথে আলোচনায় বসতে হবে বেগম জিয়ার শর্ত মানতে হলে। জামায়াত ও ফ্রিডম পার্টির সাথে আলোচনা অসম্ভব, এরা যুদ্ধাপরাধী স্বাধীনতাবিরোধী। এদের সাথে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে খালেদা নিজেই আলোচনার দরজা বন্ধ করে দিলেন। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিএনপি নেত্রীকে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানালে তিনি তা প্রত্যাখান করে সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছিলেন আজ তিনিই জামায়াত, মুসলিশ, নেজামে ইসলাম ফ্রিডম পার্টির সাথে রাষ্ট্রপতির আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে জাতির সাথে এক প্রকার শঠতাই করলেন!

কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া হয়না। বাংলাদেশের আগের নির্বাচনগুলোতে প্রতিরক্ষা বাহিনীর অংশগ্রহণ ছিল বির্তকিত। নির্বাচনকালীন সময়ে প্রয়োজন হলে নির্বাচন কমিশন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে তলব করতে পারে কিন্তু কখনই প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা ছিল না বা দেয়া হয়নি। নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নিযুক্ত করার প্রস্তাবনার মধ্য দিয়ে দেশপ্রেমিক পেশাদার সশস্ত্র বাহিনীকে আবারো বির্তকিত করার চেষ্টা করছেন খালেদা জিয়া।

নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বেগম জিয়া দলগুলোর সাথে বারবার আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন, প্রশ্ন হলো সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত কি করে নেয়া হবে, ঐকমত্য কিভাবে পৌঁছানো সম্ভব আর প্রস্তাবিত নামের সাথে রাজনৈতিকদলগুলোর সম্মতি না পাওয়া গেলে এই আলোচনা কতোদিন চলবে?? সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হতেই হবে, দিনের পর দিন আলোচনা চলতে পারে না। আবার সরাসরি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থেকে বিএনপি সরে না আসলেও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের পক্ষে অভিমত দিয়েছে, যা বর্তমান সংবিধানের আলোকে সম্ভব নয়। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তাদের গঠিত নির্বাচন কমিশন অনেক বির্তকিত কাজ করেছে, ছাত্রদলের নেতাদের কমিশনে চাকরি দিয়েছে, উপনির্বাচনকে কলঙ্কিত করেছে। সেসময় আওয়ামী লীগ বিরোধীদলে ছিল, ২০০৫ সালের ১৫ জুলাই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশন সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তখনকার প্রধানমন্ত্রী আজকের বিএনপি নেত্রী তা অগ্রাহ্য করেছিলেন। কোনো আলোচনাই করেননি। আওয়ামী লীগ কিন্তু ২০০৫ সালের অনেক প্রস্তাব বাস্তবায়ন করে কমিশনকে শক্তিশালী করেছে।

খালেদা জিয়া তার প্রস্তাবে আরপিও সংশোধন করতে কিছু কথা বলেছেন, আমি প্রশ্ন রাখতে চাই, ২০১৩ সালে যখন সরকার দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়, তখন বিএনপি কেন তা বিরোধিতা করেছিল?? যুদ্ধাপরাধীদের সাথে সখ্যতাই প্রমাণ করে বিএনপি মুখে অনেক গঠনমূলক কথা বলে কিন্তু তাদের আত্মীক সম্পর্ক সেই স্বাধীনতাবিরোধীদের সাথেই।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সময়ের প্রয়োজনে অবশ্যই নিরপেক্ষ, শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে। বর্তমান বাস্তবতার আলোকে নির্বাচন ব্যবস্থাকে আধুনিক, শক্তিশালী ও সময়োপযোগী করাও জরুরি। আমাদের দেশেও সেই প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সবাই চায় স্বাধীন নিরপেক্ষ হয়ে নির্বাচন কমিশন কাজ করুক। একেক দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা একেক রকম, অনেক দেশে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আইন নেই যেমন ভারত, আবার অনেক দেশে আইন আছে যেমন ভারত ও বাংলাদেশ ছাড়া সার্কের অন্যান্য দেশগুলোতে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন রয়েছে। তবে কোনো দেশেই নির্বাচন বর্জনের নামে বিএনপির-জামায়াতের মতো মানুষ পুড়িয়ে মারা হয় না বা নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রগুলো পোড়ানো হয়না, এমন সহিংসতা শুধু আমাদের দেশেই সম্ভব!

এটা হতে পারে যে নির্বাচন কমিশন বিষয়ে প্রস্তাব পেশ করার মধ্য দিয়ে দিনকতক বিএনপি নানা আলোচনা চালাবে, তারপর আরেক বিষয়ে তারা প্রস্তাব দিবে- এভাবে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত নিজেদের সাংগঠনিক ব্যর্থতা ঢাকতে মানুষকে নানা প্রস্তাবনা বা তত্ত্বের বিতর্কে আবদ্ধ রেখে সময় অতিবাহিত করতে চায়। বিএনপি জানে যে আগামী তিনমাসের মধ্যে তাদের প্রস্তাব মেনে কমিশন গঠন সম্ভব নয়, বিএনপি আজ ক্ষমতায় থাকলেও তারাও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে পারত না, তা সত্ত্বেও এসব প্রস্তাব দিয়ে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করতে চাইছে এবং তাদের মনপুতঃ কমিশন না গঠন হলে, ২০১৭ সালের নতুন নির্বাচন কমিশনকে তারা প্রত্যাখ্যান করবে, এই নিয়ে কর্মসূচী দিতে পারে, আন্দোলনে নামতে পারে যার মধ্য দিয়ে বিএনপি আগামী বছর আবারো আন্দোলনের নামে সহিংসতার পথ বেছে নিতে পারে! সরকারের উচিত হবে এখনই এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া। কারণ বিএনপিকে বিশ্বাস করার কোন সুযোগ নেই।

বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে আসতেই হবে নতুবা তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। তাই এও ধারণা করা যায় যে হয়তো বিএনপি নির্বাচনমুখী হতে চাইছে, কিন্তু জামায়াতকে ছাড়বে না তাই এসব প্রস্তাব দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করছে অর্থাৎ জামায়াতও সাথে থাকল, নির্বাচনেও তারা অংশ নিল- যা দুরভিসন্ধিমূলক। কারণ আগেও তারা সংলাপের(!) জন্য হাহাকার করলো কয়েকদিন, তারপর অন্য কর্মসূচী ঘোষণা করল, যদিও প্রতিটি আন্দোলন কর্মসূচীতে বিএনপি ব্যর্থ হয়েছে। তবে বিএনপি যদি মনে করে জামায়াতকে তারা আবারো ভোটের রাজনীতিতে আনবে তবে সেই চিন্তা কোনোদিন সত্যে পরিণত হবে না। আর নির্বাচন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গে কার্যত বিএনপি অতীতে শুভ কোনো কিছুর উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারেনি; বির্তকিত প্রস্তাবনাও তাই জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, ফলে প্রস্তাবনা বিএনপির শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমেই ফাইলবন্দি থাকবে বলে মনে হচ্ছে!

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। আমাদের কন্ঠস্বর-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

খেলার জগতের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পেশাদারি কাঠামো

লাল-সবুজের তরুণ প্রজন্মের এ সময়ের প্রিয় শ্লোগান, ‘বাংলাদেশের জান, সাকিববিস্তারিত পড়ুন

আগস্টের শোককে শক্তি হিসেবে নিতে পারি আমরা তরুণেরা

“যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তিবিস্তারিত পড়ুন

বাবা যখন ধর্ষক

যেখানে আপন বাবাই ধর্ষণ করে, সেখানে সৎ বাবার ধর্ষণ আমাদেরবিস্তারিত পড়ুন

  • দুই বড় দেশ যখন প্রতিবেশী ও প্রতিযোগী
  • মৌসুমি নৌকা শোরুম
  • ভারতবিদ্বেষ কেন বেড়ে চলেছে?
  • জনগণের কাছে শেখ হাসিনাই জয়ী
  • ‘গুলিস্তান’ নেই, তবু আছে ৬৪ বছর ধরে
  • পদ্মা ব্রিজ দিয়ে কী হবে?
  • যুদ্ধাহতের ভাষ্য: ৭০– “এখন অমুক্তিযোদ্ধারাই শনাক্ত করছে মুক্তিযোদ্ধাদের”
  • আসুন, বড় হই
  • আসুন, পিঠের চামড়া না তুলে পিঠ চাপড়ে দিতে শিখি
  • বাড়িওয়ালা মওদুদ ও বাড়িছাড়া মওদুদ
  • ব্রিটেনের নতুন সরকার নিয়ে যে শঙ্কা!
  • আওয়ামী লীগ ছাড়া কি আসলে কোনো বিকল্প আছে?