রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

বিধবাকে হাত-পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন

বিয়ের সময় বয়স ছিল ১৪ বছর। এখন প্রায় ৫৫ বছর। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে স্বামী গত হয়েছেন। চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেও বিয়ে করেছে। তার সংসারেও নতুন অতিথি রয়েছে। স্বামীকে যে ভিটায় দাহ করেছেন সেটাই প্রতিবেশী আবুল হোসেন এতদিন নিজের বলে দাবি করে আসছেন। শুধু তাই নয়, সেই ভিটা দখল করে ঘর তুলতে শুরু করেছেন।

স্বামীর ভিটে রক্ষায় বিধবা কানন বালা যখন এগিয়ে এলেন তখনই ভাগ্যে জুটল নির্যাতন। শুরুতেই তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে মাটিতে পরে গেলে রশি দিয়ে পা দুটো এবং ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে ফেলা হয়। এরপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। দখলদাররা কানন বালাকে মাটিতে ফেলে লাথি এবং পদদলিত করার একপর্যায়ে বিবস্ত্র হয়ে পড়েন তিনি।

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের পূর্ব আলীপুর গ্রামে এ ঘটেছে এ নির্যাতনের ঘটনা। গাছপালা কেটে ঘর তুলে সম্পত্তি দখলের চেষ্টায় বাধা দেওয়ায় বিধবা কানন বালাকে এভাবেই অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে উদ্ধার করে তাকে।

এদিকে নির্যাতনের শিকার কাকন বালাকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য দশমিনায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেলে মহড়া দিয়ে ওই তাকে চিকিৎসায় বাধা দেয়। সন্ধ্যার পর পালিয়ে অসীম চন্দ্র দাস তার মা কানন বালাকে পটুয়াখালী এনে ২৫০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তবে এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। স্থানীয়রা বলছে, নির্যাতনকারীরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সভা সমাবেশে সামনের সারিতেই থাকেন তারা। তবে কোনো পদে নেই।

কানন বালার ছেলে অসীম জানান, সরকারের কাছ থেকে তারা ৬০ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত নেন এবং নিজেদের রেকর্ডের সম্পত্তি ১৯ শতাংশ। এই সম্পত্তিতে তাদের বসতঘর, পুকুর ও গাছপালা রয়েছে। সেই সম্পত্তির ওপর দৃষ্টি পড়ে স্থানীয় আবুল হোসেনসহ আশপাশের লোকজনের। দীর্ঘদিন ধরে তাদের সম্পত্তি দখলের জন্য নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয় তাদের। এমনকি সম্পত্তি না দিলে দেশছাড়া করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনার সময় তিনি ও তার স্ত্রী বাসায় ছিলেন না। শুনেছেন আবুল হোসেন ও তার আত্মীয়রা তার মাকে মেরে বিবস্ত্র অবস্থায় হাত-পা বেঁধে রেখেছিল। পুলিশ এসে তার মাকে উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে তিনি বাদী হয়ে দশমিনা থানায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তার মা কানন বালা এখন পটুয়াখালী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

কানন বালা জানান, তার ছেলে অসীম ও ছেলে বৌসহ মাধবী লানী দশমিনা উপজেলার একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে মাস্টাররোলে নৈশ প্রহরী ও ঝাড়ুদারের কাজ করেন। ঘটনার দিন বাড়িতে কেউ ছিল না। সোমবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে আবুল হোসেন ও তার ভাই বারেক প্যাদা লোকজন নিয়ে এসে তার বাড়ির গাছ কেটে ফেলতে থাকে। একপর্যায়ে লোকজন দিয়ে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। এ সময় তিনি তাতে বাধা দিলে দখলদাররা তাকে ধাক্কা দিয়ে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে পড়ে গেলে রশি দিয়ে পা দুটো এবং ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে ফেলেন। এরপর চলে অমানবিক নির্যাতন। দখলদাররা তাকে মাটিতে ফেলে লাথি ও পদদলিত করার একপর্যায়ে তিনি বিবস্ত্র হয়ে পড়েন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে পটুয়াখালী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কানন বালা বলেন, “অগো কাছে কতবার পাও ধইরা মাফ চাইছি। বাড়িঘর ছাইরা ভারতে চইলা যামু কইছি, তবু অরা আমারে পাড়াইয়া মাটিতে ফালাইয়া রাখে। প্রকৃতিক ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য একটু আড়ালে যাইতে চাইলেও দখলদাররা মোরে বাইরে যেতে দে নাই। ” এভাবে নির্যাতন চলতে থাকে। প্রতিবেশীরা বিষয়টি মুঠোফোনে পুলিশকে জানানোর পর বেলা ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কানন বালাকে উদ্ধার করে।

আবুল হোসেন জানান, কানন বালা যেখানে বসবাস করছেন, সেখানে প্রায় ৩০ বছর আগে তার একটি দোকান ছিল। সেটা সরকারি জমি (খাস)। ওই জমি বরাদ্দ পেতে তিনি আবেদন করেছেন। কিন্তু সেটি এখনো পাননি। গ্রাম্য সালিসে ওই জমিতে আপাতত ঘর তুলে ব্যবসা করতে রায় দিয়েছেন। সেই আদেশেই তিনি ঘর তুলতে গেলে কানন বালা চিৎকার চেচামেচি করে নিজের ঘরের আসবাবপত্র বাইরে ফেলে দিয়েছেন। তাকে ফাঁসাতেই নিজের কাপড় ছিড়ে ফেলেছেন। আসলে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। রাজনীতির ব্যাপারে তিনি বলেন, “এক সময় বিএনপির সঙ্গে ছিলাম, এখন আওয়ামী লীগের কর্মী। ”

দশমিনা থানার এএসআই হিরন চন্দ্র বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে কানন বালা কান্নাকাটি করছিলেন। তাকে একটি কাপড়ের ওড়না দিয়ে ঢাকা ছিল। প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদরে নিয়ে আসি। ” এ ছাড়া তিনি ঘর তোলার কাজ বন্ধ করে দিয়ে আসেন বলে জানান।

দশমিনা থানার ওসি (তদন্ত) ইউনুচ আলী বলেন, “বিধবা কানন বালাকে নির্যাতনের পর আটকে রাখা হয়েছিল। পুলিশ তাকে উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার কানন বালার ছেলে অসীম চন্দ্র দাস বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যতন দমন আইনে দশমিনা থানায় মামলা করেছেন। আবুল হোসেনসহ ১৪ জনের নাম আসামির তালিকায় রয়েছে। ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক। তবু গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে। ”

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

শিল্পকলা পুরস্কার পেলেন ১৩ জন আলোকচিত্র শিল্পী

 ‘উন্নয়নের বাংলাদেশ, নান্দনিক বাংলাদেশ’ শিরোনামে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত প্রতিযোগিতায় পুরস্কারবিস্তারিত পড়ুন

‘আমলাতন্ত্রকে ভেঙে গণমুখী বাজেট তৈরির আহ্বান’

জাতীয় বাজেটকে গণবান্ধব ও কর্মসংস্থানমুখী করতে হলে তেভাগা পদ্ধতিতে যেতেবিস্তারিত পড়ুন

চড়াই-উতরাই থাকবে হতাশ হবেন না: প্রধানমন্ত্রী

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,বিস্তারিত পড়ুন

  • দাম বাড়ছেই ডিমের
  • শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
  • নিরাপদে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছালো বাংলাদেশ দল
  • নীতি সহায়তা যুক্ত হচ্ছে রফতানিতে
  • ৪ হাজার কোটির খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রস্তুত 
  • বাকৃবি গবেষকের সাফল্য এই প্রথম সুস্বাদু দেশীয় শিং মাছের জিনোম সিকুয়েন্স উদ্ভাবন
  • এক ভিসায় ভ্রমণ করা যাবে উপসাগরীয় ছয় দেশ
  • আইসিসি পুরুষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা
  • কমরেড রনো চির জাগরূক থাকবেন
  • উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে শোকজ শুরু করেছে বিএনপি
  • সমাজ পরিবর্তনে পোশাক শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী
  • জাতির পিতার স্মৃতি বিজড়িত প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী