মাথায় বল রাখা অবস্থায় স্কেটিং, সাইকেল চালানো কিংবা সাঁতরানোর মতো নানা কাজে পারদর্শী তিনি। গোটা বিশ্ব হতবাক তার এই অসাধারণ নৈপুণ্যে। সন্তুষ্ট নিজেও, তবে রয়ে গেছে হতাশা।

৪১ বছর বয়সী আব্দুল হালিমের বাড়ি মাগুরায়। ছোটবেলায় হতে চেয়েছিলেন পেশাদার ফুটবলার। সেই চেষ্টায় কমতিও ছিল না। কিন্তু ফুটবলার হিসেবে সাফল্য না এলেও এসেছে অন্যত্র। মাথায় বল রেখে দিব্যি তিনি পারেন সাইকেল চালাতে, দৌঁড়াতে, এমনকি জুতা বদলাতেও। এমনকি বলের ওপর দাঁড়িয়ে আরেক বল মাথায় রেখে, দুই হাতে দুটি বল ঘোরাতেও পারেন তিনি। দেখে মনে হবে, বল বুঝি তার মাথায় কেউ আঠা দিয়ে আটকে দিয়েছে।

বল মাথায় রেখে সব কাজ করার সামর্থ্য অবশ্য একদিনে অর্জন করেননি আব্দুল হালিম। বছরের পর বছর ধরে চর্চা করেছেন। এরপর এসেছে সাফল্য, যা ইতিমধ্যে এনে দিয়েছে গিনেস বিশ্ব রেকর্ডের স্বীকৃতি। তা-ও একভাবে নয়। মাথায় বল নিয়ে সর্বোচ্চ পথ হাঁটার রেকর্ডের পাশাপাশি বল মাথায় রেখে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে ১০০ মিটার রোলার-স্কেটিংয়ের রেকর্ডও তার। নিজের নৈপুণ্যে বাংলাদেশকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া এই ক্রীড়াবিদের সাফল্যের কথা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে ব্রিটেনের ডেইলি মেইল পত্রিকা।

ডেইলি মেইলকে সাফল্যের কথা জানানোর পাশাপাশি হতাশার কথাও বলেছেন আব্দুল হালিম। তিনি মনে করেন, গিনেস বিশ্ব রেকর্ড গড়লেও স্থানীয় মানুষের কাছে তার এই বিশেষ গুণের আলাদা কোনো মূল্য তিনি পান না। বল নিয়ে নানা কসরত দেখিয়ে কিছু অর্থ উপার্জন তিনি করতে পারছেন ঠিকই, কিন্তু পরিবারের চাহিদা পূরণে তা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করেন তিনি।

আব্দুল দুই সন্তানের পিতা। একটি সন্তান রোগে ভুগছে, যার চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু সেই টাকা কোথা থেকে আসবে তিনি জানেন না। আব্দুলের আশা, সরকার তার সাফল্যের কথা শুনবে এবং প্রতিভার যথার্থ মূল্য দেবে।

ডেইলি মেইলকে নিজের এক স্বপ্নের কথাও জানিয়েছেন আব্দুল হালিম। সুযোগ পেলে বিশ্ব ভ্রমণে বেরিয়ে হাজার হাজার মানুষের সামনে তার ফুটবল মাথায় রাখার নৈপুণ্য দেখাতে চান তিনি। উপযুক্ত সহায়তা পেলে সেটা সম্ভব বলেও মনে করেন আব্দুল হালিম।