রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

‘যাই গা, গুড বাই’

সামনে পুলিশের তিনটি গাড়ি। পেছন পেছন যাচ্ছে কারাবন্দীদের প্রিজন বাস। তার পিছনে রয়েছে পুলিশ, র‌্যাবসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গাড়ি। প্রিজন বাসের উপরের দিকে কাটাতারের ফুটো দিয়ে ভেতরে থাকা বন্দীদের হাত ও অস্পষ্ট চেহারা দেখা যায়। উৎসুক জনতা দেখেই সমস্বরে চিৎকার চেঁচামেচি করছে। কেউ কেউ উচু স্বরে ‘যাই গা, গুড বাই’ বলে বিদায় নিচ্ছে। অন্য যেকোনো সময় এতো নিরাপত্তার মধ্যে রাস্তায় প্রিজন ভ্যান বা বাসে থাকা বন্দীরা চুপচাপ থাকতে দেখা গেলেও শুক্রবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জের নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরের সময় বন্দীদের উচ্ছ্বাস ছিল অনেক বেশি।

দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকার পর নতুন কারাগারে স্থান পেয়ে ভিষণ উচ্ছ্বসিত বন্দীরা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৯টা ৫০ পর্যন্ত ব্যাপক হই-হুল্লোর আর আনন্দ করতে করতে নতুন কারাগারে যান বলে জানিয়েছেন কারা কর্মকর্তারা।

সকাল থেকে ২৫টি প্রিজন ভ্যানে ৬ হাজার ৫১১ জন পুরুষ বন্দীকে নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। সারা দিনে মোট ১৯টি বহরে এসব বন্দীদের স্থানান্তর করা হয়। এছাড়া কেরানীগঞ্জ কারাগারে নারী ও শিশুদের থাকার ব্যবস্থা না থাকায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সব নারী ও শিশু বন্দীকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে যুদ্ধাপরাধী ও রাজনৈতিক হেভিওয়েট নেতাদেরও পাঠানো হয়েছে কাশিমপুরে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টায় বন্দীদের প্রথম বহর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছেড়ে গেলেও পুরো সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভোররাত সাড়ে ৪টা থেকে রাস্তায় সতর্ক অবস্থান নেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (পুলিশ), র‌্যাব, বিজিবি, এপিবিএন, দমকল বাহিনীর সদস্যসহ গোয়ান্দা বাহিনীর সদস্যরা।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, নবনির্মিত কারাগারে রজনীগন্ধা দিয়ে প্রত্যেক কারাবন্দিদের বরণ করে নেয়া হয়। কারাগারের প্রধান ফটকে প্রবেশের সময় প্রত্যেক বন্দিকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে দেখা যায়।

বেলা সাড়ে ১১টায় কারা অধিদপ্তরে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে করেন মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন। তিনি জানান, সকাল থেকে ২৫টি প্রিজন ভ্যানে বন্দিদের কেরানীগঞ্জের নবনির্মিত কারাগারে স্থানান্তর করা হচ্ছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৮ হাজার বন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে ৬ হাজার ৪শ’ বন্দিকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হচ্ছে। সেখানে নারী সেল না থাকায় নারীবন্দিদের কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, নবনির্মিত কারাগারে বেশ খুশি ও উচ্ছ্বসিত বন্দীরা। প্রিজন ভ্যানে ওঠা থেকে শুরু করে পুরো রাস্তা জুড়ে আনন্দ করতে করতে যায় তারা। নতুন কারাগারে গিয়েও তাদের হই-হুল্লোর করতে দেখা যায় বলে জানান তিনি।

বন্দীরা আনন্দ করতে করতে যাচ্ছিল উল্লেখ করে নাজিমউদ্দিন সড়কে ব্যবসায়ী সালাম মিয়া বলেন, আসামিরা সবাই দেখি খুব খুশি। মানুষ দেখলেই চিল্লা-পাল্লা কইরা মজা লইতাছে। মনে হয় বিয়া করতে যায়!’

বন্দীদের বহনকারী প্রিজন বাসে দায়িত্ব পালনকারী একজন পুলিশ কনস্টেবল বলেন, ‘সারা রাস্তাই চিল্লাইতে চিল্লাইতে গেছে। রাস্তা মোড়ে মোড়ে উৎসুক জনতা দেখেই চিৎকার করে হাত নেড়ে বিদায় নেয় বন্দীরা। নতুন কারাগারে যাওয়ার আনন্দে ভাসছে সবাই।’

বন্দীদের স্থানান্তরে সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে বেলা সাড়ে ৯টায় সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকেই ঢাকা নাজিমুদ্দিন রোড থেকে কেরানীগঞ্জ নবনির্মিত কারাগার পর্যন্ত ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। রাস্তায় ২০০ গজ পরপর অবস্থান নিয়েছে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও এপিবিএন।’

অতিরিক্ত নিরাপত্তার বিষয়ে শেখ মারুফ ইসলাম বলেন, ‘বন্দি স্থানান্তরে কোনো থ্রেট (হুমকি) নেই। তারপরেও যেহেতু এটি ইতিহাসের একটি বড় ঘটনা, তায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়েই বন্দি স্থানান্তর করা হচ্ছে।’

বন্দীদের স্থানার ভোর থেকে শুরু করে শেষ হয় প্রায় ১৬ ঘন্টা পর। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বন্দীদের নিয়ে কেরানীগঞ্জের নবনির্মিত কারাগারের উদ্দেশে শেষ প্রিজন ভ্যানের বহরটি ছেড়ে যায় রাত ৯টা ৫০ মিনিটে। এই বহরের মধ্য দিয়েই বন্দীদের নাজিমউদ্দিন সড়কের পুরোনো কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগারে বন্দী স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় বলে জানান, অতিরিক্ত কারা-মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) কর্নেল ইকবাল হাসান।

তিনি বলেন, ‘এই বহরের মাধ্যমে পুরো ৬ হাজার ৫১১ জন পুরুষ বন্দীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জে নবনির্মিত কারাগারে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শেষ হলো।’

প্রসঙ্গত, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশে বেশ কয়েকটি বড় আবাসিক ভবন গড়ে ওঠায় এর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা উভয়ই বিঘ্নিত হচ্ছে বলে উপলব্ধি করে সরকার। এরপর ১৯৯৪ সালে কারাগারটি সরিয়ে নিয়ে দুটি কারাগার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর মধ্যে একটি গাজীপুরের কাশিমপুরে ও অন্যটি কেরানীগঞ্জে। এরপর ২০০৬ সালে একনেকে কেরানীগঞ্জে এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় জমি অধিগ্রহণের কাজ। আর বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয় ২০১১ সালের জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু পরে তিন দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০১৭ সাল পর্যন্ত। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত ১০ এপ্রিল কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুরে সাড়ে চার হাজার বন্দী ধারণ ক্ষমতার নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ১৯৪ একর জায়গার ওপর ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এশিয়ার সর্বাধুনিক ও বৃহত্তম এ কারাগারটি।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

শিল্পকলা পুরস্কার পেলেন ১৩ জন আলোকচিত্র শিল্পী

 ‘উন্নয়নের বাংলাদেশ, নান্দনিক বাংলাদেশ’ শিরোনামে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত প্রতিযোগিতায় পুরস্কারবিস্তারিত পড়ুন

‘আমলাতন্ত্রকে ভেঙে গণমুখী বাজেট তৈরির আহ্বান’

জাতীয় বাজেটকে গণবান্ধব ও কর্মসংস্থানমুখী করতে হলে তেভাগা পদ্ধতিতে যেতেবিস্তারিত পড়ুন

চড়াই-উতরাই থাকবে হতাশ হবেন না: প্রধানমন্ত্রী

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,বিস্তারিত পড়ুন

  • দাম বাড়ছেই ডিমের
  • শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
  • নিরাপদে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছালো বাংলাদেশ দল
  • নীতি সহায়তা যুক্ত হচ্ছে রফতানিতে
  • ৪ হাজার কোটির খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রস্তুত 
  • বাকৃবি গবেষকের সাফল্য এই প্রথম সুস্বাদু দেশীয় শিং মাছের জিনোম সিকুয়েন্স উদ্ভাবন
  • এক ভিসায় ভ্রমণ করা যাবে উপসাগরীয় ছয় দেশ
  • আইসিসি পুরুষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা
  • কমরেড রনো চির জাগরূক থাকবেন
  • উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে শোকজ শুরু করেছে বিএনপি
  • সমাজ পরিবর্তনে পোশাক শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী
  • জাতির পিতার স্মৃতি বিজড়িত প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী