যে কারণে প্রথম আলো বর্জন করলাম
আজ আমার অহংকার গুঁড়িয়ে দিলেন আপনারা। মাত্র গতকাল পর্যন্ত আমার ধারনা ছিল অন্যায় অনাচারের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে প্রতিবাদ জানানোর মানুষ বুঝি আর নেই। তাই হলুদ সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে একা প্রতিবাদ জানাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে মনের গভীরে একপ্রকার অহমিকাও তৈরী হয়েছিল। কিন্তু আজ আপনাদের সমবেত উপস্থিতি আমার সকল অহংকার ভেঙ্গে চুরমার করে বুঝিয়ে দিয়েছে ন্যায়ের লড়াইয়ে আমি একা নই। তাই বুক ফুলিয়েই বলতে চাই আমি আর এখন একা নই- অনেক আমির যোগফলে এখন হয়েছি আমরা। আমরাই সহস্র হব অজস্র শক্তিতে।
আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন কিছুদিন আগে মর্মান্তিক এক সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হয়ে স্বনামধন্য ফটোসাংবাদিক জিয়া এখন সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন। আমি জিয়ার সুস্থতার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি এবং জিয়ার পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। একইসাথে ঘাতক চালকটিকে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
আপনারা এটাও নিশ্চয়ই জানেন যে জিয়ার দুর্ঘটনাটি যে সময় ঘটে একই সময় আমাদের সতীর্থ অভিনয়শিল্পী কল্যান কোরাইয়া ভিন্ন আরেকটি জায়গায় ভিন্ন আরেকটি দুর্ঘটনার শিকার হন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, ভিন্ন দুটি জায়গায় ভিন্ন দুটি দূর্ঘটনা ঘটলেও জিয়ার দূর্ঘটনার মামলায় রহস্যজনকভাবে কল্যাণকে গ্রেফতার করা হয়। আর এরপরই শুরু হয় হলুদ সাংবাদিকতার বিচিত্র আগ্রাসন। আর এই হলুদ সাংবাদিকতার বিরুদ্ধেই আজকের এই প্রতিবাদ।
কল্যাণের মামলাটি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন আছে তাই কল্যাণ দোষী না নির্দোষ সে তর্কে আমি যেতে চাই না। কিন্তু পরিগতাপের বিষয় প্রথম আলোর কুখ্যাত কিছু হলুদ সাংবাদিক স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে সেখানে কল্যাণ সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালিয়ে বিচারাধীন একটি মামলার আসামীকে বিচারের আগেই অপরাধী বানাতে চলেছে। যা আদালত অবমাননার সামিল। শুধু তাই নয়, একই সাথে এই হলুদ সাংবাদিকের দল, শুধুমাত্র কল্যাণের সতীর্থ হবার অপরাধে সকল অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে নানারকম কুরুচীপূর্ণ বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার চালিয়ে অভিনয়শিল্পদের সামাজিকভাবে মর্যাদাহানী করেছে।
প্রথম আলোর কতিপয় হলুদ সাংবাদিকের কারনে আমরা এই ভেবে চিন্তিত হই যে প্রকৃত ঘাতক চালককে বাঁচাতে কৌশলে কল্যানকে অপরাধী বানানোর কোন অপচেষ্টা চলছে না তো? কেননা অতীতে বিভিন্ন সময়ে আমরা এ চক্রটির বিতর্কিত ভূমিকা দেখেছি-রাজনৈতিক অঙ্গন, সাহিত্যাঙ্গন, সাংস্কৃতিক অঙ্গন কোন জায়গায় তারা বিতর্কের বাইরে নেই।
আমাদের এভারেস্ট বিজয়কে তারা করেছেন প্রশ্নবিদ্ধ, গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন কে কটাক্ষ করে তারা ছাপিয়েছে কুখ্যাত সেই উপন্যাস স্লোগান কন্যা, ওয়ান-ইলেভেন নিয়ে তাদের ভূমিকাও আমরা দেখেছি। এমনকি ধর্ম নিয়ে দু:সাহিসক অবমাননা এবং সেই একই কারনে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দন্ডিত কুখ্যাত রাজাকারের কাছেও এ চক্রটিকে ক্ষমা চাইতে দেখেছি।
অতএব এহেন বিতর্কিত কর্মকান্ডের মাধ্যমে কল্যাণ ও তৎসঙ্গে অভিনয়শিল্পীদের অপমানের প্রতিবাদে আমি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আজ এই মুহূর্তে বর্জন করছি প্রথম আলো, একই সাথে প্রথম আলো কর্তৃক আমাকে দেয়া মেরিল প্রথম আলো সমালোচক পুরস্কার ২০০৫ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।
সবাইকে আহ্বান করছি মিথ্যা প্রচারনায় বিভ্রান্ত না হয়ে যৌক্তিক বিশ্লেষণে আপনারাও বর্জন করুন প্রথম আলো।
আবদুল্লাহ রানা
লেখক: নাট্যকার, পরিচালক, অভিনেত
সূত্র : বাংলানিউজ
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
খেলার জগতের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পেশাদারি কাঠামো
লাল-সবুজের তরুণ প্রজন্মের এ সময়ের প্রিয় শ্লোগান, ‘বাংলাদেশের জান, সাকিববিস্তারিত পড়ুন
আগস্টের শোককে শক্তি হিসেবে নিতে পারি আমরা তরুণেরা
“যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তিবিস্তারিত পড়ুন
বাবা যখন ধর্ষক
যেখানে আপন বাবাই ধর্ষণ করে, সেখানে সৎ বাবার ধর্ষণ আমাদেরবিস্তারিত পড়ুন