রোজা অতীত গুনাহের কাফফারা

মাহে রমজানের প্রথম রোজা অর্থাৎ রহমতের বিশেষ ১০ দিনের একদিন শেষ হয়ে গেল আজ। এই রমজানের প্রথম রোজা থেকেই মহান আল্লাহ পাক রোজাদারের জন্য তার রহমতের সব দরজা খুলে দিয়েছেন।
বান্দা ইসলামী হুকুম আহকাম মেনে যদি প্রত্যেকটি রোজা পালন করেন, তাহলে এই রোজাই হবে তার অতীতের গুনাহের কাফফারা। বিশুদ্ধ হাদিসগ্রন্থ সহিহ বুখারী শরীফের মধ্যে এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণনা রয়েছে।
সাহাবি হযরত হুযায়ফা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদিন হযরত ওমর (রা.) বললেন, ফিতনা সম্পর্কিত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসটি কার মুখস্থ আছে? তখন হুযায়ফা (রা.) বললেন, আমি মহানবী (সা.) কে বলতে শুনেছি, পরিবার, ধন সম্পদ এবং প্রতিবেশীই মানুষের জন্য ফিতনা। আর সালাত, সিয়াম (রোজা) এবং সদকা গুনাহের জন্য কাফফারা হয়ে যায়… ।’
মাহে রমজান বিশ্ব মুসলিমের জন্য মহান আল্লাহ পাকের বড় নিয়ামত। এর মহত্ব ও গুরুত্ব অনুধাবন করে সঠিকভাবে আমল করতে পারলে নিশ্চয় বান্দা তার অতীতের গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে খাঁটি (খালেছ) বান্দায় পরিণত হবেন। রমজানের রোজাকে বান্দার জন্য গুনাহ মাফের মাধ্যম করে দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সাহাবি হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রেখেছে, সেটার সীমারেখা চিনেছে এবং যা থেকে বিরত থাকা চাই, তা থেকে বিরত থেকেছে, তবে সে (যেসব গুনাহ) ইতোপূর্বে করেছে, সেগুলোর কাফফারা হয়ে গেল।’ (আল ইহসান বিতরতীবে সহীহ ইবনে হাব্বান, ৫ম খণ্ড, ১৮৩ পৃষ্ঠা)
সঠিকভাবে রোজা পালনের মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার বান্দাকে অতীতের সমস্ত গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়ার বড় সুযোগ করে দিয়েছেন। মাহে রমজান উপলক্ষে এটি বান্দার জন্য তার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে বিশেষ নিয়ামত ও রহমত। রোজার প্রথম থেকে আমরা যেন এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারি।
আমাদের সমাজে সাধারণত দেখা যায়, কেউ কেউ সারাদিন উপবাস থেকে নামমাত্র রোজা রাখেন। ফরজ নামাজ ও এবাদত বন্দেগির ধারে কাছে নেই, আবার হালাল-হারামের প্রতি তোয়াক্কা করেন না। ব্যবসা বাণিজ্যে কিংবা কাজ কারবারেও ঠকাচ্ছেন, আগের মতোই মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। কিন্তু দিনভর উপবাস থেকে ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইফতার করেন, রোজা রাখেন। তার জন্য কী আল্লাহ এই বিশেষ অনুগ্রহ থাকবে? নিশ্চয়ই নয়।
মূলত নামমাত্র উপবাস থাকার নাম রোজা পালন নয়। ইসলামী বিধান অনুযায়ী আপনাকে রোজা পালন করতে হবে, প্রকারান্তরে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। তবেই আপনি প্রকৃত রোজাদার। আর রোজাদার হিসেবে আপনি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ পুরস্কার পাবেন।
যে ব্যক্তি মাহে রমজানের রোজা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রাখেন, তার জন্য জাহান্নামকে অনেক দূরে রাখা হবে। এ প্রসঙ্গে সাহাবি হযরত সালমা ইবনে কায়সার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য একদিনের রোজা পালন করেছে, আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে এতদূরে রাখবেন, যেমন একটা কাক (শৈশব থেকে) বুড়া হয়ে মরে যায়।’ (মুসনাদে আবী ইয়ালা, ১ম খন্ড, ৩৮৩ পৃষ্ঠা)
মাহে রমজানের ফরজ রোজা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এবাদত বন্দেগি সবকিছুই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। তাই বান্দাকে খেয়াল রাখতে হবে তার আমলে যেন প্রতিপালক সন্তুষ্ট হন।
আসুন! সঠিক আমলের সঙ্গে যেন প্রত্যেকটি রোজা পালন করি। রোজা রাখার মধ্য দিয়ে যেন অতীতের গুনাহ মাফ করাতে পারি। সর্বোপরি বান্দা হিসেবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন- আমিন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ঈদের ছুটির পর বুধবার থেকে নতুন অফিস সময়সূচি
পবিত্র ঈদুল আজহার পর সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিতবিস্তারিত পড়ুন

সৌদিতে হজে বিভিন্ন দেশের ৫৫০ হাজির মৃত্যু
সৌদি আরবে এ বছর হজ পালনে গিয়ে কমপক্ষে ৫৫০ জনবিস্তারিত পড়ুন

ঈদে ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮ টি গবাদিপশু কোরবানি
এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৪বিস্তারিত পড়ুন