রবিবার, মে ৫, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘকে ড. ইউনূসের চিঠি

মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের সামরিক আগ্রাসনের প্রতিবাদে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিকে চিঠি দিয়েছেন ১০ নোবেল বিজয়ীসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ২৩ বিশিষ্ট ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার ইউনূস সেন্টার থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।

চিঠিতে জানানো হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গত দুই মাস ধরে সে দেশের রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের উপর সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে। তাতে শত শত রোহিঙ্গা নাগরিক হত্যার শিকার হচ্ছে।

নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যদেরকে উদ্দেশ্যে করে ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আপনারা অবগত আছেন যে, জাতিগত নিধন ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধতূল্য একটি মানবীয় বিপর্যয় মিয়ানমারে বিস্তৃতি লাভ করছে। গত দুই মাসে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন প্রদেশে যে সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে তাতে শত শত রোহিঙ্গা নাগরিক হত্যার শিকার হচ্ছে।’

এর ফলে ত্রিশ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে, নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, বেসামরিক মানুষদের নির্বিচারে আটক করা হচ্ছে, শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। আরও ভয়ের ব্যাপার, মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলোকে সেখানে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে আগে থেকেই চরম দরিদ্র এই এলাকাটিতে (রাখাইন রাজ্যে) মানবীয় সংকট ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। হাজার হাজার মানুষ নিকটবর্তী বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে; যেখান থেকে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

কোন কোন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ঘটনাটিকে গণহত্যাতুল্য বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নিকট অতীতে রুয়ান্ডা, দারফুর, বসনিয়া ও কসোভোয় সংগঠিত গণহত্যাগুলোর সকল বৈশিষ্ট্য এখানে দৃশ্যমান বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ রিফিউজি হাইকমিশনের বাংলাদেশ কার্যালয় প্রধান জন ম্যাককিসিক মিয়ানমার সরকারকে জাতিগত নিধন পরিচালনার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন। মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি রাখাইন রাজ্যে প্রবেশের উপর বিধিনিষেধ আরোপকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিযোগ করেছেন।

চিঠিতে বলা হয়, রোহিঙ্গারা পৃথিবীর সবচেয়ে নির্যাতিত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর একটি; যারা দশকের পর দশক পরিকল্পিত প্রান্তিকীকরণ ও অমানবিক আচরণের শিকার। ১৯৮২ সালে তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয় ও তাদের রাষ্ট্রহীন করে ফেলা হয়। যদিও তারা বংশ পরম্পরায় মিয়ানমারে বসবাস করে আসছে। তাদের চলাচল, বিবাহ, শিক্ষা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

তাদের দুর্দশা নাটকীয়ভাবে ঘনীভূত হয় ২০১২ সালে যখন দু’টি ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনায় লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় এবং পাশাপাশি অবস্থিত মুসলিম ও বৌদ্ধ রাখাইনদের বর্ণবৈষম্যের ভিত্তিতে আলাদা করে ফেলা হয়। এরপর থেকে তারা চরম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিনাদিপাত করে আসছে।

সর্বশেষ সংকটটির সৃষ্টি হয় গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমার বর্ডার পুলিশের উপর আক্রমণের একটি ঘটনায়। যাতে মিয়ানমার বর্ডার পুলিশের ৯ জন সদস্য নিহত হন। এই আক্রমণ কারা, কীভাবে ও কেন করলো সে সত্য এখনো উদ্ঘাটিত হয়নি। তবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের একটি গ্রুপকে এজন্য দায়ী করছে। এই অভিযোগ যদি সত্য হয়েও থাকে, এতে সামরিক বাহিনীর প্রতিক্রিয়া একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এজন্য সন্দেহভাজনদের আটক, জিজ্ঞাসাবাদ ও বিচারের মুখোমুখি করা এক জিনিস, আর হাজার হাজার নিরীহ বেসামরিক নাগরিকের উপর হেলিকপ্টার গানশিপ দিয়ে গুলিবর্ষণ করা, নারীদের ধর্ষণ করা এবং শিশুদের আগুনে নিক্ষেপ করা সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কাছে প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে একজন রোহিঙ্গা বলেন, পলায়নরত মানুষদের উপর তারা গুলিবর্ষণ করে। তারা গ্রামটি ঘিরে ফেলে এবং ঘরে ঘরে তল্লাশি চালাতে শুরু করে। তারা গালিগালাজ করছিল এবং নারীদের ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছিল।

আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী নারী জানান কীভাবে তাঁর দুই ছেলেকে কোন কারণ ছাড়াই আটক করা হয়। ‘তখন সবেমাত্র ভোর হয়েছে। সামরিক লোকজন আমাদের বাড়ি ঘিরে ফেলেছে। কয়েকজন ঘরে ঢোকে এবং আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে বের করে আনে। তারা আমার দুই ছেলেকে বেঁধে ফেলে। তাদের পিঠমোড়া করে বাঁধা হয়, এরপর বেধড়ক পেটানো হয়। মিলিটারিরা তাদের বুকে লাথি মারে। আমার সামনেই এটা ঘটে। আমি চিৎকার করে কাঁদতে থাকি। আমি কাঁদতে থাকলে তারা (মিলিটারি) আমার দিকে বন্দুক তাক করে। আমার অন্য সন্তানরা মিলিটারিদের কাছে হাতজোড় করে তাদেরকে না পেটাতে অনুরোধ করে। তাদের নিয়ে যাবার আগে প্রায় ৩০ মিনিট এভাবে মারধর করা হয়।’ তিনি তাঁর ছেলেদের এরপর আর দেখেননি।
রোহিঙ্গা
চিঠিতে ২৩ বিশিষ্ট ব্যক্তি আরও উল্লেখ করেন, মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান অং সান সু চি’কে বারবার আবেদনের পরও তিনি রোহিঙ্গাদের পূর্ণ ও সম-নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় আমরা হতাশ হয়েছি। সু চি মিয়ানমারের নেত্রী এবং দেশটিকে সাহস, মানবিকতা ও সমবেদনার সঙ্গে পরিচালনা করার দায়িত্ব তাঁরই।

মিয়ানমার সরকারকে মানবিক সহায়তার উপর সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য সম্ভাব্য সকল উদ্যোগ নিতে আমরা জাতিসংঘের নিকট সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি, যাতে মানুষ জরুরি সহায়তা পেতে পারে। সাংবাদিক ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদেরও সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া উচিত। বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের উদ্দেশ্যে একটি নিরপক্ষে, আন্তর্জাতিক তদন্ত পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন।
রোহিঙ্গা
চিঠিতে বলা হয়, একইসঙ্গে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি জরুরি এজেন্ডা হিসেবে সংকটটিকে উপস্থাপনের জন্য আমরা নিরাপত্তা পরিষদকে বিশেষভাবে আহ্বান জানাচ্ছি। জাতিসংঘ মহাসচিবকে জরুরি ভিত্তিতে সামনের সপ্তাহগুলোতে মিয়ানমার পরিদর্শন করতে অনুরোধ করছি। বর্তমান মহাসচিবের পক্ষে এটা সম্ভব হলে আমরা তাঁকেই সেখানে যেতে অনুরোধ করবো; অন্যথায় নতুন মহাসচিবকে জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পরই এ বিষয়টিকে তাঁর কর্ম-তালিকায় অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করতে অনুরোধ জানাবো।
রোহিঙ্গা
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিরা হলেন- প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, হোসে রামোস-হরতা, আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু, মেইরিড মাগুইর, বেটি উইলিয়াম্স, অসকার অ্যারিয়াস, জোডি উইলিয়াম্স, শিরিন এবাদী, তাওয়াক্কল কারমান, লেইমাহ বোয়ি, মালালা ইউসাফজাই, স্যার রিচার্ড জে. রবার্টস, এলিজাবেথ ব্ল্যাকবার্ন, এমা বোনিনো, রিচার্ড কার্টিস, আলা মুরাবিত, অ্যারিয়ানা হাফিংটন, স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন, পল পোলম্যান, মো. ইব্রাহীম, জোকেন জাইট্জ, কেরী কেনেডী, রোমানো প্রদি প্রমুখ।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

প্রধানমন্ত্রী ১০ টাকার টিকিটে চোখ পরীক্ষা করালেন

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেবিস্তারিত পড়ুন

সন্ধ্যার মধ্যে ঝড়ের আশঙ্কা

আবহাওয়া অফিস কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগেবিস্তারিত পড়ুন

ইবির শেখ রাসেল হলের নয়া প্রভোস্টের দায়িত্বগ্রহণ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শেখ রাসেল হলের নতুন প্রভোস্টে হিসেবে দায়িত্ববিস্তারিত পড়ুন

  • পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত
  • অবশেষে রাতে ঢাকায় ঝরছে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি
  • থাইল্যান্ড সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে মাইলফলক হয়ে থাকবে : প্রধানমন্ত্রী
  • প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন সাড়ে ১১টায় 
  • গ্যাস নিঃসরণ কমাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হবে
  • দেশের দুই জেলায় ঝড়ের পূর্বাভাস
  • হবিগঞ্জে ট্রাক-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে ৫ জন নিহত
  • দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেন পাপ্পা গাজী
  • মে দিবস হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে শপথের দিন : জিএম কাদের
  • উত্তরায় ৮০ কোটি টাকা মূল্যের খাসজমি উদ্ধার
  • এমভি আবদুল্লাহ চট্টগ্রামের পথে 
  • প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরলেন