শিশুদের দুর্বল বানাচ্ছে বাইরের খাবার
রংচঙা প্যাকেট, বাহারি বিজ্ঞাপন; আবার কোনও প্যাকেটজাত খাবার কিনলে খেলনা মিলছে ফ্রিতে। এসব প্রক্রিয়াজাত খাবারের কারণে শিশুদের খাদ্যাভাস পড়ছে মারাত্মক হুমকির মুখে। এসব খাবারের ফলে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে নানা দীর্ঘমেয়াদী ব্যাধিতে। কমছে শারীরিক সক্ষমতাও। বিশেষ করে বিভিন্ন ফ্লেভারযুক্ত ছোট প্যাকেটজাত পানীয়, ফলের কৃত্রিম স্বাদযুক্ত খাবার ছড়িয়ে রয়েছে বাজারে। এসব খাবারের ফলে মুটিয়ে যাওয়া থেকে কিডনির রোগ- এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে শিশুর; এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বাবা-মায়েদের দেখা যায় অনেক সময় শিশুকে শান্ত করতে হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে চকোলেট বা আইসক্রিম। এতে ক্ষণিকের পরিত্রাণ মিললেও দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির আশঙ্কাটা থেকে যাচ্ছে অজানা। আর তাই ঘরে তৈরি খাবারে শিশুদের আকৃষ্ট করাটা এখন সময়ের দাবি- বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের শিশুদের মধ্যে ব্যাপক মাত্রায় অণুপুষ্টি-কণার ঘাটতি রয়েছে বলে জাতীয় পুষ্টিনীতি ২০১৫’তে বলা হয়েছে। পুষ্টিনীতিতে আরও বলা হয়েছে, শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশে ভূমিকা রাখে এই অণুপুষ্টি-কণা। এরমধ্যে ভিটামিন এ, আয়রন, আয়োডিন, জিংক, ভিটামিন ভি-১২, ফলিক অ্যাসিড উল্লেখযোগ্য। আর খাদ্যে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন ভি ১২-এর ঘাটতির কারণে অনূর্ধ্ব ৫ বছরের শিশুদের অধিকাংশ রক্তস্বল্পতায় ভোগে।
অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রক্রিয়াজাত খাবারে অতিরিক্ত বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহার করায় শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে ক্যান্সার, কিডনি, জন্ডিস, লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ ও স্থূলতা রোগে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের বলেন, আমরা প্রক্রিয়াজাত খাবারের ঘোর-বিরোধী। প্যাকেটজাত খাবারে উচ্চমাত্রার ফ্যাট থাকে যেটা শিশুদের জন্য খুবই ক্ষতিকর।এসব প্রক্রিয়াজাত খাবার ব্রেস্ট মিল্ক সাব্সটিটিউট অর্থাৎ বিএমএস আইনের পরিপন্থী।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা শামসাদ বলেন, প্যাকেটজাত খাবার যেমন- চকোলেট, জুস এগুলোতে উপাদানগুলো কতোটা সঠিক পরিমাণে থাকে সেটা আমাদের জানা নেই। এসবকে আর্কষণীয় করতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষতিকর ফুড কালার। এমনকি শিশুরা এখন ক্যান্সারেও আক্রান্ত হচ্ছে এসব রাসায়নিকের জন্য।
ইফফাত আরও বলেন, এসব প্যাকেটের গায়ে মেয়াদের তারিখ লেখা থাকে না, আমরা নিজেরাও শিশুদের দেওয়ার সময় সচেতনভাবে খেয়াল করি না। এখন শহরের অলিগলি এবং গ্রামের মুদি দোকানে এসব খাবার থাকে। এগুলো কোথায় ম্যানুফ্যাকচার হচ্ছে, নকল কিনা সেসব দেখার কেউ নেই।
গ্রিন লাইফ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান চিকিৎসক কাজী রকিবুল ইসলাম বলেন, নানা কারণে আমাদের মায়েরা গুড়োদুধের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। যেসব প্রক্রিয়াজাত খাবার তারা শিশুদের দিচ্ছেন সেসবে প্রিজারভেটিভ, ঘনচিনি এবং কার্বোহাইড্রেট বেশি। এসব কারণে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ছে না। এসব খাবারের কারণে এ প্রজন্মের শিশুদের এনার্জি লেভেল তথা কায়িক শ্রমের সক্ষমতা নেই বললেই চলে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কল-কারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই: প্রতিমন্ত্রী
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, প্রতিষ্ঠানিকবিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলের কিশোরী জোনাকির মরদেহ যশোরে উদ্ধার
যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া মডেল মসজিদের পাশে একটি পুকুর থেকেবিস্তারিত পড়ুন
শিশুর স্কুল থেকে শেখা বদভ্যাস থামাবেন যেভাবে
স্কুল থেকে শিশুরা জীবনের দিকনির্দেশনা পেয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় বিভিন্ন নিয়মকানুনবিস্তারিত পড়ুন