আগামী ২ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৪০ দিন শ্রীলঙ্কা সফর করবে বাংলাদেশ। সফরে দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে এবং দুটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ।

চলতি মাসের শেষ দিন শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার কথা মুশফিকদের। তার আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩-৪ দিনের ক্যাম্পে অংশ নেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আগামী সোমবার শ্রীলঙ্কা সিরিজের জন্য ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করবে বাংলাদেশ।

ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের স্কোয়াড থেকে শ্রীলঙ্কা সিরিজের দলে খুব বেশি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে শনিবার সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। যদিও নান্নুর ইঙ্গিত ফিটনেসজনিত কারণে রাখা হচ্ছে না ইমরুল কায়েসকে। এই ওপেনার ভারতের বিপক্ষে দলে থাকলেও চোটের কারণে ফিরে আসেন দেশে। এখনও পুরোপুরি ফিট নন ইমরুল, তাই তাকে নিয়ে বেশ সংশয় প্রধান নির্বাচকের মনে, ‘ইমরুলকে নিয়ে একটু সংশয় আছে। ফিজিও-ডাক্তারের যে রিপোর্ট আছে, তাতে বলা মুশকিল সে কত দ্রুত সেরে উঠবে। কাল ওর ম্যাচ আছে। শুধু ব্যাটিং করলেই তো হবে না। ফিল্ডিংটাও দেখতে হবে। স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকলেও চলবে না। রানিং-বল থ্রো করতে হবে।’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘পুরোপুরি ফিটনেস ফিরে পেতে বিসিএলে অন্তত ওর দুটি ম্যাচ খেলতে হবে। হায়দরাবাদের অভিজ্ঞতা থেকে এদিকে আমরা একটু গুরুত্ব দিচ্ছি।’

ইমরুলের শ্রীলঙ্কা সফর সুতোয় দুললেও মুস্তাফিজের মাঠে ফেরাটা একরকম নিশ্চিতই। নিউজিল্যান্ডে সীমিত ওভার ক্রিকেটে খেলেছিলেন চার ম্যাচ। চোট কাটিয়ে ফিরেছিলেন বলে তাকে নিয়ে খুব বেশি ঝুঁকি নিতে চায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। তাই টেস্ট সিরিজের দলে থাকলেও খেলেননি এক ম্যাচও। ভারত সফরেও তাকে রাখা হয়েছিল দলের বাইরে। তবে শ্রীলঙ্কা সফর দিয়ে আবার জাতীয় দলে ফিরছেন মুস্তাফিজ। বিসিএলে তার ফিটনেস ও পারফরম্যান্সই আশা জাগাচ্ছে প্রধান নির্বাচক নান্নুকে, ‘মুস্তাফিজ মাশাআল্লাহ ভালো। টেস্টের জন্য সে প্রস্তুত।’

মুশফিকের উইকেটকিপিং নিয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচক বলেছেন, ‘এটা নিয়ে নির্বাচকদের মধ্যে এখনও আলোচনা হয়নি। এটা নিয়ে পরে জানাতে পারব। অধিনায়কের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আমরা বসব। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।’

এদিকে, ইনজুরি ও পারফরমেন্স নিয়ে রুবেলের কিছুটা সমস্যা যাচ্ছে। এ জন্য জাতীয় দলে নিয়মিতও হতে পারছেন না। অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার কমতি নেই কোনো দিক থেকেই। কিন্তু মূল সমস্যা ইনজুরি। এতেই পারফরমেন্সটাও সেভাবে করতে পারছেন না। তবে এ অবস্থার উন্নতি করতে বদ্ধপরিকর রুবেল।

এক সময়ে দলের ছিলেন অপরিহার্য ক্রিকেটার। এখন লড়াই করতে হচ্ছে ১৫ সদস্যের দলে থাকতে। রুবেল জানেন তার হারানো স্থানটা ফিরে পেতে কী করতে হবে। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটে সব খেলোয়াড়েরই এ চ্যালেঞ্জে থাকতে হচ্ছে। আমি দলে ফেরাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আমাকে আবার ভালো বোলিং করতে হবে। ভালো বোলিং করেই আমাকে জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে হবে।’

ছুটি চলছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের; কিন্তু বিশ্রাম নেই রুবেলের।

নিজ উদ্যোগেই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি তার অনুশীলন। গতকাল সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি অনেক কষ্ট করছি, অনেক কঠিন পরিশ্রম করছি। মাঠেও এর প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে ভালোই মনে হচ্ছে আমার ছন্দ, নিজের পুরো গতিতে লম্বা স্পেল করছি। আমি এটিকে ধারাবাহিক করতে চাই, আমাকে আরো অনেক কঠিন পরিশ্রম করতে হবে।’ সামনেই শ্রীলঙ্কা সফর। রুবেলের টার্গেট মূলত সেটিই; কিন্তু মুখে ওগুলো বলতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘এটা নির্ভর করছে সম্পূর্ণ নির্বাচকদের ওপর। আমি এখন বিসিএল খেলছি, আমার ল্য এখানে ভালো বোলিং করা, উইকেট নেয়া। দলের যেভাবে ভালো হবে আমি সে চেষ্টাই করি।’ বিসিবি ও নির্বাচক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচকেরা সবাই মাঠে যাচ্ছেন, সব ম্যাচে তারা দেখছেন কে কেমন করছে। আমাকে দলভুক্ত করা হবে কি না এটা সম্পূর্ণ তাদের ওপর। অবশ্য আমি যদি সুযোগ পাই তাহলে সেটা পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’