‘সরকার একগুঁয়েমির ওপর দাঁড়িয়ে আছে’
রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী আন্দোলনে জনগণ, তথ্য-যুক্তি ও নৈতিক ভিত্তি সবকিছু আছে মন্তব্য করে জাতীয় তেল গ্যাস রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আপনাদের নাই কোনো তথ্য-যুক্তি, নাই কোনো নৈতিক ভিত্তি। আপনারা একটি অনৈতিক ভিত্তি, একটি বাগাড়ম্বর ও একগুঁয়েমির ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। লোভের ওপর, ক্ষমতাকে আঁকড়ে থাকার ও চিরস্থায়ী করার ওপর দাঁড়িয়ে আছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া রাজধানীতে আধাবেলা হরাতালে পুলিশের হামলাকে ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে তিনি বলেন, ‘সরকারের নৈতিক পরাজয় হয়েছে। আমরা সেই নৈতিক পরাজয়ের প্রতি ধিক্কার জানাই।’
জাতীয় কমিটির কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি একের পর এক চলতে থাকবে, যতদিন পর্যন্ত সরকার সর্বনাশা প্রকল্প বাতিল না করে। আমরা চাই সরকার সুন্দরবন বিনাশী এই প্রকল্প থেকে সরে আসবে, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।’
ভয়ভীতি, হুমকি ও নিপীড়ন উপেক্ষা করে হরতাল পালিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হরতালের মতো সাধারণ ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে সাধারণ জনগণের মতের প্রকাশ ঘটলো, ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশের মানুষ একটা ইতিহাস তৈরি করলেন। একটা বন ও প্রাণপ্রকৃতি রক্ষার জন্য ‘হরতালের কর্মসূচি শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম’ বলে মন্তব্য করেন আনু মুহাম্মদ।
তিনি বলেন, এই হরতালে শত বাধা, ভীতি ও ত্রাস সত্ত্বেও বহু প্রতিষ্ঠানের বহু কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতি পালন করেছেন, বহু প্রাইভেট গাড়ি আজ রাস্তায় বের হয়নি, বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ওই সময়টাতে সুন্দরবন নিয়ে তাদের চিন্তা ও স্বকীয়তায় সময় কাটিয়েছেন।
শাহবাগ এবং বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্লাস রুম হওয়ার পরিকল্পনা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সকল শিক্ষার্থীরা সুন্দরবন নিয়ে ক্লাস করবে রাস্তায়, সম্ভবত পুলিশ সেটা টের পেয়ে সকাল থেকে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে একের পর এক টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও জলকামান ব্যবহার করে বহুজনকে আহত করেছে।’
পোস্টার-লিফলেট লাগাতে গিয়েও নেতাকর্মীরা বাধার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেন আনু মুহাম্মদ।
গত সাত বছরের অনেক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার হামলা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কী কারণে এগুলোর ওপর হামলা করে আক্রমণ করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির হামলা করে? আপনারা সকলে বুঝতে পারেন, একজনের নিজের যুক্তি যদি শক্তিশালী হয়, নিজের পায়ের নিচে যদি মাটি থাকে তাহলে তার ক্রুদ্ধ হওয়ার জন্য দরকার হয় না, সন্ত্রাস করার দরকার হয় না। জনগণ তার কথা শোনে, বিশ্বাস করে, তার ওপর আস্থা রাখে এবং তার পেছনে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও সবচেয়ে বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দেশ চীন ১০০টি প্রকল্প থেকে সরে এসেছে। ভারত বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করছে। এখন তাদের বাতিল করা প্রকল্প তাদের চাকরি হারানো কনসালটেন্ট, তাদের বুরোক্র্যাট, তাদের যে ব্যবসা, সেই ব্যবসাটা বাংলাদেশে এসে বাংলাদেশকে একটি আবর্জনাগার, একটি ডাস্টবিন বানানোর উপক্রম করেছে।’
সমাবেশে কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ শাহবাগে পিকেটারদের ওপর পুলিশি হামলার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তোলেন।
তিনি বলেন, ‘কেন শাহাবাগে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে, তার জবাব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিতে হবে। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই। কেন এই হামলা হলো তার দায়িত্ব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিতে হবে।’
আবু জাফর আহমেদ বলেন, ‘সারা দুনিয়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা হচ্ছে। সকলের ফেলে দেওয়া প্রযুক্তি সরকার ব্যবহার করতে চাইছে। আল্ট্রাপ্রযুক্তি শুধু শেখ হাসিনা জানেন। আর কারো কাছে এই প্রযুক্তির খবর নেই।’
গণতান্ত্রিক বিপ্লোবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেছেন, ‘প্রবাসীরা আমাদের আন্দোলনের সমর্থনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাস্তায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এদিকে সরকার সুন্দরবন রক্ষার জন্য কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ভারতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে না পেরে এনটিপিসি শ্রীলঙ্কায় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গেলে সে দেশের আদালত বাতিল করার রায় দেয়। আর আমাদের সরকার প্রকৃতি ধ্বংস করা এই প্রকল্পের জন্য পক্ষ নিচ্ছে।’
উৎসঃ পরিবর্তন
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূস: নির্বিঘ্নে সব জায়গায় পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “এবার দুর্গাপূজারবিস্তারিত পড়ুন
সোমবারের বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার
এক কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাস করেনবিস্তারিত পড়ুন
১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৬৪ কোটি ডলার
এ মাসের প্রথম ১৪ দিনে এসেছে ১৬৪ কোটি ৬৭ লাখবিস্তারিত পড়ুন