সূরা জুমায় যে আজান আছে, তা কোন ধরনের?
প্রশ্ন : সূরা জুমায় যে আজানে নামাজের জন্য ডাকা হয় এবং বেচাকেনা বন্ধ করে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়, তা কি প্রথম আজান নাকি খুতবার আজান?
উত্তর : সূরাতুল জুমায় যে আজানের পর বেচাকেনা নিষেধ করা হয়েছে, আল্লাহ সুবানাহুতায়ালা যে এরশাদ করেছেন, ‘যখন জুমার সালাতের জন্য আজান দেওয়া হবে, আহ্বান করা হবে, তখন তোমরা তোমাদের বেচাকেনা, লেনদেন পরিহার করো।’
এই যে নির্দেশ, মূলত এটি জুমার খুতবার যে আজান দেওয়া হয়ে থাকে, সে আজানের। কারণ হচ্ছে, যেহেতু রাসূল (সা.)-এর সময়ে মূলত ওই আজানই প্রচলিত ছিল। শুধু একটিই আজান ছিল, সেটি হচ্ছে খুতবার জন্য আজান দেওয়া হতো। রাসূল (সা.) যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন, তিনি সালাম দিয়ে মিম্বরে অথবা মিম্বরে উঠে সালাম দিতেন। তার পরে তিনি বসতেন এবং পরে খুতবার জন্য আজান দেওয়া হতো। সেটি একটিই আজান ছিল।
আবু বকরের (রা.) সময়ে ঠিক একইভাবে একটি আজান ছিল। ওমরের (রা.) সময়েও পুরা সময়টায় একটি আজান ছিল। কিন্তু ওসমান (রা.) যখন ক্ষমতায় এলেন, তখন তাঁর খিলাফত সময়ে দেখা গেল যে মানুষ বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে সালাতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের দেরি হয়ে যায়। তখন ওসমান (রা.) জওরা নামক স্থানে একটা বাজার, যাতে করে বাজারের লোকদের সতর্ক করা যায়, সতর্কীকরণের জন্য মূলত ওসমান (রা.) এই প্রথম আজান, যেটাকে বলা হচ্ছে এটা হলো থার আজান (শরিয়তের পরিভাষায় এর পরিচয় হচ্ছে তৃতীয় আজান), এটি বাজারের মধ্যে চালু করেন।
তৃতীয় এই জন্য হলো, কারণ প্রথমে তো একামতই ছিল। একামত এবং আজান মূলত একই অর্থ। খুতবার আজান দ্বিতীয়। তার পরে তৃতীয় হচ্ছে এই যে ওসমান (রা.) চালু করলেন।
সতর্কীকরণের জন্য মূলত ওসমান (রা.) এই তৃতীয় আজান চালু করেন। কোথাও যদি এই সতর্কীকরণের প্রয়োজন হয়, সেখানে সেটা চালু করতে পারে। কিন্তু সুন্নাহর অনুসরণ করা হচ্ছে, যেহেতু এখন মাইকের মাধ্যমে আজান দেওয়া হয়ে থাকে। শুধু মসজিদ এলাকা নয়, মসজিদের আশপাশে অন্য কোনো মসজিদেও একসঙ্গে আজান শুনতে পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে যদি কেউ সরাসরি সুন্নাহর অনুসরণ করতে চান, তাহলে তিনি শুধু খুতবার আজানই দেবেন। সেখানে আর ওসমানের (রা.) আজানের কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, এটা একটা সুনির্দিষ্ট কারণে আজানটি প্রবর্তন করা হয়েছে এবং ওসমানের (রা.) কারণও উল্লেখ করে দিয়েছেন কেন এই আজান প্রবর্তন করেছেন।
এই আজান কিন্তু সালাতের উদ্দেশ্যে নয়। এই আজান হচ্ছে লোকজনকে সতর্ক করার জন্য। যদি সালাতের উদ্দেশ্যে দেওয়া হতো, তাহলে তো মসজিদে আজান দেওয়া হতো। যেহেতু বাজারে এই আজান দেওয়া হয়েছিল, এখান থেকেই বোঝা যায় যে এর উদ্দেশ্য হলো সালাতের যে সময়, সে সময় ঘনিয়ে আসছে, সেটি মানুষকে সতর্ক করার জন্য।
এখনকার মানুষ তো আরো ব্যস্ত। তাহলে ওই আজানের প্রয়োজনীয়তা রয়ে যেত? না, ওই আজানের প্রয়োজনীয়তা হলো, মসজিদে যে খুতবার জন্য আজান দেওয়া হতো, তখন তো আজকের এই লাউড ব্যবস্থা ছিল না, মানুষের কাছে আজান শোনার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এখন আরো সহজ হয়ে গেছে। সেটা হলো, অনেক যন্ত্র এসেছে, প্রযুক্তি এসেছে। মানুষের হাতে এখন ঘড়ি আছে, সময়টা এখন মানুষের কাছে খুব স্পষ্ট হয়েছে। সময় সম্পর্কে সতর্ক হলেই হয়ে যায়।
মাইকে আজান দেওয়া হয়ে থাকে। সুতরাং এলাকার লোকদের দ্বিতীয়বার আর সতর্কীকরণের প্রয়োজন নেই। রাসূল (সা.) যেহেতু এই আজানটিই দিয়েছেন, এটাই হচ্ছে মূলত সালাতের আজান অথবা সালাতুল জুমার আজান। তাই এই আয়াতের মধ্যে যে আজানের কথা বলা হয়েছে, আপনি যে বলেছেন দ্বিতীয় আজান, সেটি হচ্ছে মূলত খুতবার আজান । এই আজানটিই হচ্ছে মূলত এখানে উদ্দেশ্য। এর পরে আল্লাহ সুবানাহুতায়ালা বেচাকেনা, লেনদেন, দুনিয়ার পার্থিব যেসব লেনদেন আছে, সেটাকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিষেধ করেছেন। এরপর এই কাজ যদি কেউ করে থাকেন, তাহলে তিনি হারাম কাজ করলেন। যেহেতু এটি নিষিদ্ধ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ঈদের ছুটির পর বুধবার থেকে নতুন অফিস সময়সূচি
পবিত্র ঈদুল আজহার পর সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিতবিস্তারিত পড়ুন
সৌদিতে হজে বিভিন্ন দেশের ৫৫০ হাজির মৃত্যু
সৌদি আরবে এ বছর হজ পালনে গিয়ে কমপক্ষে ৫৫০ জনবিস্তারিত পড়ুন
ঈদে ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮ টি গবাদিপশু কোরবানি
এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৪বিস্তারিত পড়ুন