স্ত্রীর গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা: স্বামী-দেবরের যাবজ্জীবন
সাতক্ষীরা: স্ত্রীর শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও দেবরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার এক জনাকীর্ণ আদালতে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু মনসুর মো. জিয়াউল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আবু তালের গাজীর ছেলে আসাদুল গাজী ওরফে আসাদুল (৩৪) ও তার ভাই মমতাজুল ওরফে ইনতাজুল (২৮)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০২ সালে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার দক্ষিণ ইলিশপুর গ্রামের আবু বক্কর সরদারের মেয়ে তরুল পারভিনের সঙ্গে বিয়ে হয় যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে মিজানুর রহমানের। দীর্ঘদিন তাদের কোনো সন্তান না হওয়ায় মিজানুরকে তালাক দিয়ে ঝিকরগাছা উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আবু তালেব গাজীর ছেলে আসাদুল গাজীকে ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে বিয়ে করে তরুল। বিয়ের পর নির্যাতন চলতে থাকায় তরুল পারিভন ২০১০ সালের ৮ মে আসাদুলকে তালাক দেয়। তালাকনামা পাওয়ার পর তরুল ও তার বাবা মাকে হত্যার হুমকি দেয় আসাদুল ও তার লোকজন। একপর্যায়ে ৯ মে রাতে বাবার বাড়ির ঘরের পশ্চিম দিকের বারান্দায় রাতে শুয়ে থাকা অবস্থায় তরুলকে উঠানে এনে মশারি জড়িয়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে দেয় নামিয়ে আসাদুল, তার ভাই ইনতাজুলসহ কয়েকজন। পরে তারা তরুলের আগুন দেয়। মারাত্বক জখম অবস্থায় তরুলকে প্রথমে কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুম, পুলিশ ও ডাক্তারের সামনে মেয়ের দেয়া জবানবন্দি অনুযায়ী আবু বক্কর সরদার বাদী হয়ে ১০মে সকালে জামাতা আসাদুল, তার ভাই ইনতাজুল, একই গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে আরশাদ আলী, জোহর আলীর ছেলে মুজিবর রহমান ও আবুল হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলামের নামে কলারোয়া থানায় একটি মামলা (৭নং) দায়ের করেন।
স্বামী আসাদুল ও দেবর ইনতাজুলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৪ (১)/৩০ ধারায় অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে যাবজ্জীবন দিলেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আরশাদ আলী ও মিজানুর রহমানকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। মামলার প্রধান সাজাপ্রাপ্ত আসামি আসাদুল পলাতক রয়েছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অ্যাড. আসাদুজ্জামান দিলু, অ্যাড. শাহ আলম, অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সাতক্ষীরা জেলায় আম সংগ্রহ উদ্বোধন
আমের গুণগত মান বজায় রেখে নিরাপদে আম বাজারজাত করতে সাতক্ষীরাবিস্তারিত পড়ুন
সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু
ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ ও গ্রামবাসী একত্রে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
কোটি টাকার স্বর্ণসহ ইউপি মেম্বার গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী সীমান্ত থেকে ৯ পিছ স্বর্ণের বারসহবিস্তারিত পড়ুন