৭ বছরের দীর্ঘ আইনি লড়াই আর লাঞ্চনার পর অবশেষে ‘সুবিচার’ পেলো ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী
দীর্ঘ সাতটা বছর। সামাজিক লজ্জা, লাঞ্চনা অপমান আর ভয় মাথায় নিয়েই কেটেছে কিশোরীর রাতদিন। ঘটনার সময় মাত্র ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া ছিলো সে। আর দশটা মেয়ের মতই হাজারো স্বপ্ন ছিলো বড় হবার। সাজানো কোন সংসারে রাণী হবার স্বপ্ন দেখতো সেও। কিন্তু সেদিনের সেই কিশোরীর সব স্বপ্ন আর সম্ভাবনা নিমিষেই চুর্ন হয়ে যায় গুটিকয়েক অমানুষের বিকৃত লালসায়।
সেই কিশোরী বিচারের দাবীতে আদালতের দরোজায় কড়া নাড়তে নাড়তে আজ পরিনত এক যুবতী । হাজারো পারিপার্শিকতা, বাঁধা আর ভয় উপচে প্রভাবশালী সব লম্পটদের সাথে লড়াই করেছে দিনের পর দিন। কখনো কখনো হতাশ হয়েছে তবে পুরোদস্তুর ভেঙ্গে পড়েনি কখনোই সে । বিশ্বাস ছিলো একদিন না একদিন বিচার পাবেই সে,শাস্তি হবে নরপশুগুলোর ।
অবশেষে সে দিন দেখার ‘ভাগ্য’ হলো তার । এরই মধ্যে হারিয়েছে অনেক। প্রাপ্তির ঝুলিতে এটুকুই যে শাস্তি দিতে পেরেছে প্রকৃত অপরাধীদের।
অবশেষে মানিকগঞ্জে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবৎজীবন এবং দুইজনকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামীদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মানিকগঞ্জের বিচারক হাছিনা রৌশন জাহান
সাজাপ্রাপ্তরা হচ্ছে, সদর উপজেলা বৈতরা গ্রামে ফরজ আলীর ছেলে মো. রফিক, উচুটিয়া গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে হুমায়ুন ও বৈতরা গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে জুয়েল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি একেএম নূরুল হুদা রুবেল জানান, ২০০৯ সালে ১৮ জানুয়ারি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে তার পিতার অসুস্থ্যতার কথা বলে আসামীরা কৌশলে অপহরণ করে। এর পর তাকে ধর্ষন করে।
এই ঘটনায় ওই স্কুল শিক্ষার্থীর পিতা মজনু বাদি হয়ে ৫জনকে আসামী করে করে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। আদালত ১১ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩) এর ৭ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামী রফিককে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩) এর ৯ (১) ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবৎজীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত।
জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নজরুল ইসলাম বাদশা।
এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী /০৩) এর ৭ ধারায় দন্ড প্রাপ্ত অপর দুই আসামী হুমায়ুন ও জুয়েলকে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানিকগঞ্জে হুমকি দিয়ে মন্দিরের মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণ
প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে কালী মন্দিরের জায়গার মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণেরবিস্তারিত পড়ুন
মানিকগঞ্জে গলায় ফাঁস দিয়ে কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা
ফারিয়া আলম কাজল নামের এক কলেজ ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। নিহতবিস্তারিত পড়ুন
মানিকগঞ্জে কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে সাবরিনা আক্তার বন্যা (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীর লাশবিস্তারিত পড়ুন