ঢাবির ইংরেজিতে মাস্টার্স, চাকরির ‘হতাশায় আত্মহত্যা’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন আবদুল মোমিন তালুকদার। লক্ষ্য ছিল প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা হওয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু করতে না পারায় ‘আত্মহত্যা’ করেছেন তিনি।
আবদুল মোমিন তালুকদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন ২০০৩-৪ শিক্ষাবর্ষে। থাকতেন স্যার এএফ রহমান হলের ৫২০ নম্বর কক্ষে। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জেরর সালঙ্গা থানার ধুপিল গ্রামে। বাবার নাম আবদুল মন্নাফ। বাবা-মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়।
স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাস্টার্সের পর মোমিন শুরু করেন বিসিএস প্রস্তুতি। কিন্তু কৃষক বাবার পাঁচ সদস্যের বড় পরিবার চালিয়ে মাস্টার্স শেষ করা ছেলের জন্য অর্থের যোগান দেওয়া আর সম্ভব হচ্ছিল না। তাই বেসরকারি একটি কলেজে ইংরেজির প্রভাষক হিসেবে যোগ দিলেন। হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটে যে বেতন ভাতা পেতেন তা নিতান্তই অপ্রতুল। অধিকাংশ সময় এ চাকরির পেছনে চলে যাওয়ায়, কাঙ্ক্ষিত চাকরির প্রস্তুতিও ঠিকমতো হচ্ছিল না।
এ অবস্থায়ও দুই বার বিসিএস প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হলেও ফেল করেন লিখিত পরীক্ষায়। এরই মধ্যে পেরিয়ে যায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর। এর মধ্যেই পরিবারের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করেন বছর দুই আগে। গেল বছর কোলজুড়ে আসে এক কন্যাসন্তান।
বন্ধুদের ভাষায়, ‘আত্মবিশ্বাসী এবং উচ্চাভিলাষী” এ ছেলেটি একসময় আত্মাভিমান নিয়েই ঢাকা ছাড়েন। যোগ দেন নিজ জেলা সিরাজগঞ্জের একটি মহিলা কলেজে। কিন্তু নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতায় বেতন ভাতা আটকে গেল। একদিকে পিতা মাতা ও নির্ভরশীল ভাই বোন অন্যদিকে নববিবাহিত স্ত্রী এবং নবজাতক কন্যা। তাই কার্যকর একটা কিছু করতে না পারার হতাশায় ক্রমশই ডুবে যাচ্ছিলেন মোমিন।
সালঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রফিক বলেন, ‘মৃত্যুর খবর পেয়েই আমি ছুটে যাই। পরিবার ও গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, ঢাকা ভার্সিটির ইংরেজির মতো বিভাগে পড়েও চাকরি নিয়ে হতাশার কারণে তিনি আত্মহত্যা করেন।’
পরিবারের আপত্তির কারণে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়নি বলে জানান ওসি।
বন্ধুর এমন অকাল মৃত্যুর সংবাদে হতবিহ্বল তার বন্ধু সহপাঠীরা। কথা বলার সময় বারবার গলা ধরে আসছিল মোমিনের সহপাঠি ও হলমেট আবু তাহেরের। রাজধানীর অগ্রণী স্কুলের শিক্ষক আবু তাহের বলেন, ‘আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না এমন হৃদয় বিদারক কিছু ঘটতে পারে!’
তবে চাকরি নিয়ে মোমিনের যে হতাশা ছিল তা জানতেন তাহেরও। তাহের জানান, ২০১২ সালের দিকে মোমিন রাজধানীর কুইন মেরি কলেজে যোগ দেন। ২৯তম বিসিএসসহ দুটি বিসিএসের প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েও ফেল করেন লিখিত পরীক্ষায়। এরপর চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা শেষ হওয়ার পর ২০১৬ সালে যোগ দেন সিরাজগঞ্জের তারাশ মহিলা ডিগ্রি কলেজে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
২৮ এপ্রিল খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
তীব্র তাপদাহে এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পরে আগামী রোববার (২৮বিস্তারিত পড়ুন
ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিগত ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেবিস্তারিত পড়ুন
রমজানে বিদ্যালয় বন্ধ: হাইকোর্টের আদেশ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যা বললো
রমজানে স্কুল বন্ধে হাইকোর্টের দেয়া আদেশের কপি হাতে পেলে সিদ্ধান্তবিস্তারিত পড়ুন