শনিবার, মে ১৮, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

সেন্সর নেই…

মঞ্চে ঠিক কোনটা দেখানো যাবে বা যাবে না— তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও নিয়মাবলি নেই। তাই মাঝে মাঝেই বিতর্ক ওঠে ‘অশ্লীলতা’ নিয়ে। থিয়েটারে শ্লীল-অশ্লীলের মাপকাঠি ঠিক কী ?

বাংলা নাটকে কোনও সেন্সরের বালাই নেই। কোনও সেন্সর বোর্ডও নেই। ভাল কথা। ‘প্রোগ্রেসিভ’ আর্ট ফর্মে কোনও বিধিনিষেধ না থাকাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু ঠিক কোন জায়গায় গিয়ে ‘স্বাধীনতা’ শ্লীলতার বেড়া টপকে হয়ে ওঠে অস্বস্তির কারণ? নাকি, থিয়েটারে শ্লীল কিংবা অশ্লীল বলে আদৌ কিছু থাকতে পারে না? কারণ, যুক্তি উঠতেই পারে সমাজের ডকুমেন্টেশন করে যে শিল্পমাধ্যম— তাতে নগ্নতা, আগলহীন ভাষার ব্যবহার, গোপনাঙ্গ প্রদর্শনের মতো বিষয়গুলো উঠে আসতেই পারে। কারণ মানুষের জীবনের অংশই সেগুলো। আবার এই একই জিনিস যদি কোনও প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই প্রদর্শিত হয়, তখন থিয়েটার এবং পর্নোগ্রাফির মধ্যে কোনও তফাত থাকে না আর! ফলে বিধিনিষেধের আলাদা করে প্রয়োজন না থাকলেও, কোথাও বোধহয় একটা রশি টানা প্রয়োজন। হাজার হোক, বিষয়টা তো শিল্প। তাতে মননশীলতা থাকাটাই কাম্য, তাই না?
image-14
মহারাষ্ট্রে সেন্সর
নাট্যনির্দেশক মণীশ মিত্র জানালেন, মহারাষ্ট্রে থিয়েটারের জন্য আলাদা করে একটা সেন্সর বোর্ড আছে। ‘‘আমরা যতবার ওখানে নাটক করতে গিয়েছি, মরাঠি পুলিশের কাছে আগে নাটকের স্ক্রিপ্টের একটা কপি জমা দিতে হয়েছে। ওঁরা সেটা ভালভাবে পড়ে, খুঁটিয়ে দেখে তবে ছাড়় দেন পারফর্ম করার।’’ গুজরাতেও একই ব্যবস্থা! তবে সেন্সর বোর্ডের না-থাকাই বাংলা থিয়েটারের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল বলে মনে করেন মণীশ। তাঁর কথায়, ‘‘ফিল্ম সেন্সর বোর্ডে ছিলাম কয়েক বছর। তখন দেখেছি, কিছু অহেতুক কারণ তুলে ছবি আটকে দেওয়ার বদভ্যাস। থিয়েটারে যেন কোনওভাবেই স্বাধীনতা খর্ব না হয়। কিন্তু আমার মনে হয়, অহেতুক অশ্লীলতা প্রদর্শনের কোনও মানে হয় না।’’ ঘটনাচক্রে মণীশের দল ‘কসবা অর্ঘ্য’ কয়েক বছর আগে ‘ওথেলো’ করেছিল মঞ্চে। ‘শেক্সপিয়র’স ট্র্যাজিক হিরোজ’এর অংশ হিসেবে। সে সময় নাটকটা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়, ওথেলোর ভূমিকায় যিনি অভিনয় করেছিলেন তাঁর ফ্রন্টাল ন্যুডিটি নিয়ে। ‘‘তাপস ওই চরিত্রে অভিনয় করত। বিতর্ক যে হয়েছিল, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু নাটকটা অনেকেই দেখেছেন। দেখার পর একজনও অস্বস্তিতে পড়েছিলেন বলে আমার মনে হয়নি। আমাকে কেউ কিছু বলেনওনি। এবং প্রতিবার ওই অংশটুকু অভিনয় করার পর তাপসের যে কী ভালনারেব্‌ল অবস্থা হতো, ভাবতে পারবেন না! একজন অভিনেতার পক্ষে বিষয়টা সত্যিই কঠিন। কারণ প্রসেসটা শুধু মানসিক নয়। শারীরিকও।’’

ওরিজিন অফ…
দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ফ্যাতাড়ু’ এবং ‘আলতাফ গোম্‌স’এর সংলাপে গালিগালাজ এবং ‘অশ্লীল’ শব্দের ব্যবহার নিয়ে কিছু দ্বিমত রয়েছে। দেবেশের কথায়, ‘‘আমরা যদি থিয়েটারের ইতিহাস ঘেঁটে একটু শুরুর কথা ভাবি, তাহলে দেখব— গ্রিক মিথোলজি অনুযায়ী, থিয়েটারের দেবতা হলেন ডায়োনিসাস। তিনি একদিকে যেমন থিয়েটারের দেবতা, তেমনই আবার মদ (আঙুর চাষ, ওয়াইন মেকিং এবং ওয়াইন) এবং উর্বরতার দেবতাও। ফলে থিয়েটারের শুরুটা যদি আমরা গ্রিক ক্লাসিক্যাল ড্রামার সময় থেকে ধরি, তাহলে যৌনতা এবং নগ্নতার সঙ্গে তার স্পষ্ট যোগ দেখতে পাই।’’ দেবেশের মতে, সেখানে শরীরকে যে আলাদা করে কোনও ‘প্রায়োরিটি’ দেওয়া হচ্ছে, এমন নয়। কারণ যা স্বাভাবিক (যৌনতা) এবং প্রাকৃতিক (নগ্নতা), তাকে বিশেষভাবে আলাদা করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, ইতিহাসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে মানবসমাজের। এবং কোনও জিনিসকে কোনও বিশেষ সময়কালে ঠিক কীভাবে ‘দেখা’ হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করে তার ব্যাখ্যা। দেবেশ বললেন, ‘‘ভাষা তো আসলে একটা সংকেতের মতো। এবং তার ইন্টারপ্রিটেশন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টাতে থাকে। ‘নীলদর্পণে’ এমনভাবে ‘মাগি’ শব্দটা ব্যবহার হয়েছে, যে তাতে অস্বাভাবিক কিছু পাবেন না। কিন্তু ওই শব্দটাই এখন ব্যবহার করলে অনেকে অশ্লীল বলবেন। সুতরাং সবটাই নির্ভর করছে দেখার উপর। এবং অবশ্যই দেখানোর উপরেও। কানহাইলাল যখন মঞ্চে ‘দ্রৌপদী’ করেন এবং দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের রূপক হিসেবে সাবিত্রী মণিপুরের আর্মড ফোর্সেস’এর সামনে নিজেকে উন্মুক্ত করেন— তাতে দর্শকের কিন্তু একটা ধাক্কা লাগে। নির্দেশক ওই ধাক্কাটাই দিতে চেয়েছিলেন। সুতরাং সব মিলিয়ে থিয়েটারের বক্তব্য কী এবং তার সঙ্গে নগ্নতা কিংবা ভাষা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা কতটা, দেখতে হবে। ‘ফ্যাতা়ড়ু’ কিংবা ‘আলতাফ গোম্‌স’এ সেই প্রয়োজনীয়তা ছিল বলে আমার মনে হয়েছে। কারও আপত্তি থাকলে, সেটা তাঁর মতামত হতেই পারে।’’

সাম্প্রতিক…
দিনকয়েক আগে কৌশিক করের নির্দেশনায় একটি নাটক হল ‘পর্ণমোচী’ নামে। নাটকটায় কৌশিক ‘ডেলিবারেটলি’ই যৌনতার উপাদান রেখেছিলেন। নাটকের প্লটের সঙ্গে ভারসাম্য রেখেই। কৌশিকের কথায়, ‘‘পর্নোগ্রাফি ইন্ডাস্ট্রি’টা আমাদের রোজকার জীবনে কতটা প্রভাব ফেলে, সেটা ধরার চেষ্টা করেছি নাটকটার মাধ্যমে। সোশ্যাল মিডিয়া বা এমএমএস’এর চক্করে পর্নোগ্রাফি দেখা বা শেয়ার করার প্রবণতাও বেড়ে গিয়েছে ইদানীং। আমার কথা নয়। সমীক্ষা তাই বলছে।’’ এই গোটা বক্তব্যকে বাস্তব রূপ দিতেই তাঁর নাটকে কিছু ‘গ্রাফিক’ যৌনতাও ছিল। ফলে বিষয়টার মধ্যে কেউ কেউ একটা বৈপরীত্য দেখতেই পারেন। ‘পর্নোগ্রাফি’ নাগরিক সমাজের পক্ষে এবং জনজীবনের পক্ষে খুব ভাল কিছু নয়। এবং সেখানে নারী চরিত্রদের ভোগ্যপণ্য ছাড়া আর কোনওভাবেই দেখানো হয় না। কিন্তু এর বিরূপ প্রভাব দেখাতে গিয়ে মঞ্চেই যে পর্নোগ্রাফি দেখাতে হচ্ছে? সেটা কি প্রশ্নযোগ্য নয়? কৌশিকের উত্তর, ‘‘নাটকটার নামকরণই এমনভাবে হয়েছে, যাতে দর্শকের মনে কৌতূহল জাগে। সেই জায়গা থেকে তাঁরা যখন নাটকটা দেখতে আসবেন, একটা ধাক্কা খাবেন। কারণ নাটকের বক্তব্য এখানে জরুরি। পর্নোগ্রাফি’টা নয়।’’

সিদ্ধান্তটা কী?
প্রত্যেকেই মেনে নিলেন, অহেতুক যদি অশ্লীলতা দেখানো হয়— তাহলে সেটাকে শিল্পের আওতায় না ফেলাই উচিত। কিংবা শিল্পকীর্তি হিসেবে তাকে প্রতিষ্ঠা না দেওয়াই কাম্য। কিন্তু মাপকাঠিটা ঠিক কী? মণীশের বক্তব্য, ‘‘ওথেলো’ করার সময় অভিনেতার সঙ্গে দিনের পর দিন ওয়ার্কশপ করেছি একটা বিষয় ওর মধ্যে বসিয়ে দেওয়ার জন্য। তা হল, বডি অ্যাজ পার্ট অফ নেচার। বডি অ্যাজ আ পার্ট অফ আর্টিস্টিক টুল। ফলে যে অভিনয় করেছে, সেই তাপসের কাছেও বিষয়টা সোশ্যাল কোডের বাইরে এবং সেই কারণেই অশ্লীল— এটা মনে হয়নি। নিজের পারফরম্যান্সের ইনটেন্সিটি’র কারণে ও ওই চরিত্র করার পর মাঝেসাঝে ভালনারেব্‌ল হয়ে পড়েছে, এটা ঠিক। আবার ওই একই নাটক আমরা মালদহে অভিনয় করার পর সেখানকার বাড়ির আটপৌরে মহিলারা আমাদের হাত জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেছেন, এমন ঘটনাও হয়েছে!’’

দেবেশের মতে, ‘‘একটা থিয়েটার নির্মাণ হল যখন, তার মাধ্যমে অবধারিতভাবে দর্শক এবং নির্দেশকের মধ্যে একটা কমিউনিকেশন স্থাপন হবে। এবার প্রত্যেক দর্শক আলাদা। তিনি তাঁর জেনেটিক কোড এবং পারিপার্শ্বিকের বশবর্তী হয়ে এক রকমভাবে পৃথিবীটাকে দেখেন হয়তো। অন্যজন সেভাবে না-ও দেখতে পারেন। আমি রাফায়েলে নন্দনতত্ত্ব খুঁজতে পারি। অন্যজন নগ্নতা দেখতে পারেন। কীভাবে দেখছি, তার কোনও কমন প্ল্যাটফর্ম থাকতে পারে না। থিয়েটারের ক্ষেত্রে আরওই না, কারণ সেটা মাস কমিউনিকেশন পর্যায়ে পৌঁছে যায়। আর সকলেই যদি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেন, তাহলে শিল্পকর্ম আর শিল্পকর্ম থাকে না বলেই আমার মনে হয়!’’

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

এবার পরিবারের পছন্দে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন শাকিব খান

চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর সঙ্গে অনেক আগেই দাম্পত্যবিস্তারিত পড়ুন

বুবলী আগে থেকেই বিবাহিত, সেখানে একটি মেয়েও আছে: সুরুজ বাঙালি

ব্যক্তিজীবন নিয়ে কথা বলে বারবার শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছেন আলোচিতবিস্তারিত পড়ুন

এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা

এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে কয়েকজন চলচ্চিত্র শিল্পী। সেখানকারবিস্তারিত পড়ুন

  • অভিনেতা ওয়ালিউল হক রুমি মারা গেছেন
  • পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন
  • শাকিব ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পুরুষের জায়গা নেই: বুবলী
  • সিনেমা মুক্তি দিতে হল না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নায়ক
  • সংগীত শিল্পী খালিদ আর নেই
  • কঠিন রোগে ভুগছেন হিনা খান, চাইলেন ভক্তদের সাহায্য
  • মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে সমাহিত হবেন সাদি মহম্মদ
  • কে কোন ক্যাটাগরিতে জিতলেন অস্কার?
  • রাজকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য পরীমনির
  • মিস ওয়ার্ল্ড-২০২৪ জিতলেন ক্রিস্টিনা পিসকোভা
  • আর অভিনয় করতে পারবেন না সামান্থা!
  • তিশা থেকে জয়া আহসান, কপালে বাঁকা টিপের সেলফির রহস্য কী?