আগস্টের শোককে শক্তি হিসেবে নিতে পারি আমরা তরুণেরা
“যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’’
আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা বলছি। যিনি একটি দেশের স্বপ্ন দ্রষ্টা। যিনি একটি জাতির পথ প্রদর্শক।
একটি জাতি যখন অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছিল, একটু আলোর জন্য হন্য হয়ে পাগলের মতো ছোটাছুটি করছিল, একটু স্বাধীনভাবে শ্বাস না নিতে পেরে দম বন্ধ হয়ে আসছিল, তখনই তিনি আলোকবর্তিকা বা অক্সিজেন হয়ে বাঙালি জাতির সামনে হাজির হয়েছিলেন।
কিন্তুু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য তাকে বাঁচতে দেয়নি কিছু কুলাঙ্গার, হায়েনার দল। যাদের বুলেট আর বেয়নেটের আঘাতে কলঙ্কিত হয়েছে একটি জাতি। ক্ষমতার লোভে তারা হয়েছিল উন্মোত্ত। তাই তারা একটি প্রাণও রাখতে চাচ্ছিল না। পুরো পরিবারের সবাইকে হত্যা করেছিল। এমনকি অন্তঃসত্ত্বা মহিলা বা নিষ্পাপ শিশুকেও বাঁচতে দেয়নি। তাই ইতিহাসও তাদের ক্ষমা করেনি। তাদের কুলাঙ্গার বলে সম্বোধন করে। তাদের নাম শুনলেই ঘৃনার বাক্য ছুড়ে দেয় বাতাসে।
১৫ আগস্ট জাতির জন্য এক কলঙ্কময় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে একদল বিপথগামী পাক হায়েনাদের প্রেতাত্মা তথা সেনাবাহিনীর একটি চক্রান্তকারী দল সপরিবারে হত্যা করে বাঙালি জাতির জনক, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ৪৭, ৫২, ৬৯, ৭০ সহ বিভিন্ন সময়ে মৃত্যুর মুখ থেকে বার বার ফিরে এসেছিলেন, ৭১-এ পাকিস্তানি হায়েনারা যা করতে পারে নাই, সেই কাজটিই অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় ও পূর্বপরিকল্পিতভাবে সম্পাদন করে পাপিষ্ঠ ঘাতকরা। ওরা শয়তানের প্রেতাত্মা। ওরা জঘন্য। ওরা বিপথগামী হিংস্র জানোয়ারের দল। কারণ কোন মানুষের দ্বারা এই কাজ করা সম্ভব না।
একদিন যে আঙ্গুল উচিয়ে বাঙালি জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন, বলেছিলেন-‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ঘাতকরা সেই স্বাধীন বাংলাদেশে তার আঙ্গুল চিরদিনের জন্য ভেঙে দেয় ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ঐতিহাসিক সেই বাড়িতে। আর কোনদিন ঐ আঙ্গুল আমাদেরকে প্রেরণা দিতে আসবেনা, দিবেনা মুক্তির বারতা। তবে একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে তিনি মৃত্যুহীন। প্রাণী হিসেবে মানুষ মরনশীল বলে সবারই একটি মৃত্যুদিন থাকে। তবে কোনো কোনো মানুষের শুধু দেহাবসানই ঘটে, মৃত্যু হয় না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যিনি আমাদের জাতির পিতা, তার কি মৃত্যু হতে পারে? না তিনি চিরঞ্জীব। চির অমর।
১৫ আগস্টের প্রেতাত্মারা ও তাদের দোসররা আজও সক্রিয়। তাই আমাদের সচেতন হতে হবে। আমরা যারা তরুণ প্রজন্ম আমাদের আদর্শ হবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। বঙ্গবন্ধুর যে নেতৃত্বের গুণাবলী আছে আমাদেরও তা আর্জন করতে হবে। এই সমস্ত বীরপুরুষ বার বার জন্মায় না। তারা ক্ষণজন্মা। বাঙালিরা বঙ্গবন্ধুর মতো একজন মানুষ পেয়েছিল বলেই তারা আজ স্বাধীন।
বঙ্গবন্ধুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কিছুটাও যদি আমরা ধারণ করতে পারি তাহলেই তার প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে। কে বলছে বঙ্গবন্ধু নেই? এখনো তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে আছেন। তিনি এখনো জীবিত। বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার কোন শক্তি পৃথিবীতে নেই। বঙ্গবন্ধুর শোককেই শক্তি হিসেবে নিতে পারি আমরা তরুণেরা। তাই আমরা যারা তরুণ প্রজন্ম আছি তাদের চলার পথের, জীবন যুদ্ধের হাতিয়ার হওয়া উচিত বঙ্গবন্ধু।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। আমাদের কণ্ঠস্বর-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
খেলার জগতের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পেশাদারি কাঠামো
লাল-সবুজের তরুণ প্রজন্মের এ সময়ের প্রিয় শ্লোগান, ‘বাংলাদেশের জান, সাকিববিস্তারিত পড়ুন
বাবা যখন ধর্ষক
যেখানে আপন বাবাই ধর্ষণ করে, সেখানে সৎ বাবার ধর্ষণ আমাদেরবিস্তারিত পড়ুন
দুই বড় দেশ যখন প্রতিবেশী ও প্রতিযোগী
ভারত ও চীনের মধ্যে কোনো না কোনো ইস্যুতে বাদানুবাদ, বিরোধিতাবিস্তারিত পড়ুন