ইলিশে সয়লাব চাঁদপুর, বরফ সংকটে লবণ দিয়ে মজুদ
রূপালী ইলিশে সয়লাব চাঁদপুরের প্রতিটি আড়ৎ। প্রতিদিন দক্ষিণাঞ্চল থেকে হাজার হাজার মণ ইলিশ আসছে প্রতিটি আড়তে। তবে বরফ সংকট থাকলেও দাম না কমিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা এসব ইলিশ লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করছেন।
সোমবার বিকালে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন রেলওয়ে এলাকায় ইলিশের মোকামে গিয়ে আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ তেমন ধরা না পড়লেও দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকায় প্রতিদিন জেলেদের জালে হাজার হাজার মণ ইলিশ ধরা পড়ছে। রাতভর সংগ্রহের পর এসব ইলিশ ট্রলারযোগে চাঁদপুরে পাঠানো হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শত শত ইলিশবাহী ট্রলার চাঁদপুর ডাকাতিয়া নদীর তীরে মৎস্য আড়তের কাছে এসে ভেড়ানো হচ্ছে। শত শত শ্রমিক প্রতিদিন ইলিশ নামানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
চাঁদপুর মৎস্য বনিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া জানান, এখানে ৫১টি আড়ৎ রয়েছে। প্রতিটি আড়তে প্রতিদিন ৭০-৮০ মণ করে ইলিশ আমদানি হচ্ছে। প্রায় এক মাস ধরে এসব আড়তে এমন অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে। আগে ইলিশের আমদানি কম থাকলেও বর্তমানে ইলিশের আমদানি অনেক বেশি। প্রতিদিন হাজার হাজার মণ ইলিশ বরফজাত করে ঢাকা, গাজীপুর, জামালপুর, দিনাজপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁওসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে।
তবে গত কয়েকদিন ধরে ইলিশের আমদানি বেশি হলেও বরফ সংকটের কারণে দেশের বিভিন্নস্থানে বরফজাত করে পর্যাপ্ত ইলিশ পাঠানো যাচ্ছে না। এর ফলে ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার জন্য লবণ দিয়ে ইলিশ মজুদ করে রাখছেন। এছাড়া অনেক ব্যবসায়ী ভালোমানের ইলিশ দেশের বিভিন্নস্থানে বরফজাত করে পাঠাচ্ছে। আর যেসব ইলিশ নরম হয়ে গেছে সেগুলোকে লবণাক্ত ইলিশে রূপান্তরিত করে গুদামজাত করে রাখা হচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় বাজারে আমদানির তুলনায় ইলিশের দাম তেমন একটা কমছে না।
আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, ১ কেজি সাইজের ইলিশ ১১শ’ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ১৫শ’ গ্রাম থেকে ২ কেজি পর্যন্ত ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮শ’ টাকা করে। এছাড়া ৮-৯শ’ গ্রাম ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬শ’ টাকা কেজিতে এবং ৫-৬শ’ গ্রাম ইলিশ প্রতি কেজি ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
৮০ বছর বয়সী ইলিশ ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদ হাওলাদার জানান, ‘আমি ৬০ বছর ধরে ইলিশের ব্যবসা করছি। বিগত বছরের তুলনায় এবার ইলিশের আমদানি বেশি। তবে বড় সাইজের ইলিশের চাইতে এ বছর ৫-৮শ’ গ্রাম ইলিশের আমদানি বেশি। কিন্তু বরফ সংকটের কারণে ইলিশ পচন থেকে রক্ষা করতে লবণ দিয়ে লোনা ইলিশ বানিয়ে রাখা হচ্ছে। প্রতিদিন কয়েকশ মণ ইলিশ লবণ দিয়ে লোনা ইলিশ বানিয়ে রাখছি। এসব ইলিশ আগামী বৈশাখ মাসে বিক্রি করা হবে’।
চাঁদপুর মৎস্য আড়তের পাশে বসে ইলিশ কেটে লবণ দিচ্ছিলেন জান্নাত (১৭), বিউটি (২৬), জয়তন বেগম (৪০), ফয়ছাল (২৫)। তারা জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তারা ইলিশ কেটে লবণ লাগিয়ে লোনা ইলিশে রুপান্তরিত করছেন। এতে তারা প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১৫শ’ টাকা পর্যন্ত হাজিরা পাচ্ছেন। একেকজন গড়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ মণ পর্যন্ত ইলিশ কেটে লবণজাত করেন।
ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব ইলিশ লবণ দিয়ে রাখায় ইলিশের আমদানি ব্যাপক হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ তা কিনতে পারছেন না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পালিয়ে আসা ২৮৮ বিজিপি-সেনাকে ফেরত পাঠালো বিজিবি
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারদলীয় বাহিনী ও বিদ্রোহীদের সঙ্গে চলমান সংঘাতবিস্তারিত পড়ুন
বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযানে কেএনএফের ২ সদস্য নিহত
বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) দুই সদস্যবিস্তারিত পড়ুন
সাজেকে ডাম্প ট্রাক উল্টে ৬ শ্রমিক নিহত
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে শিজকছড়া-উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রিবিস্তারিত পড়ুন