পরকীয়ার রকমফের এবং কারণ
আমাদের সকলেই ভালোবাসার মূল্যায়ন করি। কিন্তু এরপরও কেন আমাদের অনেকে বিয়েবহির্ভুত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন? জৈবিক নৃতত্ত্ববিদ হেলেন ফিশার বিষয়টিকে খুবই আকর্ষণীয়ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তার মতে, ভালোবাসা শুধু আবেগগত বিষয় বরং এটি মানব মস্তিষ্কের একটি জৈব-রাসায়নিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ইস্যুও বটে। ভালোবাসার ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের তিনটি পদ্ধতি ক্রিয়াশীল থাকে। প্রথমত, যৌন আকাঙ্খা, দ্বিতীয়ত, রোমান্টিক ভালোবাসা এবং তৃতীয়ত, সঙ্গী বা সঙ্গীনি সংশ্লিষ্টতা।
আর মস্তিষ্কের স্থাপত্য কৌশল এমন ভাবে কাজ করে যে, একজন সঙ্গী বা সঙ্গীনির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকা সত্ত্বেও আমরা আরেকজনের জন্য তীব্র ভালোবাসার অনুভূতি হতে পারে এবং একাধিক মানুষের প্রতি যৌন আকর্ষণ কাজ করতে পারে।
ভিন্ন ভিন্ন লোক বিয়েবহির্ভুত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ভিন্ন ভিন্ন কারণে। অনেকে বিয়েবহির্ভুত সম্পর্কে জড়ান তিনি এখনো আকাঙ্খনীয় কিনা তা যাচাই করার জন্য। অনেকে আবার একঘেঁয়েমি এবং অবসাদ থেকে মুক্তির জন্য, সঙ্গী বা সঙ্গীনির সাথে তাল মেলানোর জন্য বা বিয়ের বাইরেও একুট পরখ করে দেখার জন্য বিয়েবহির্ভুত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
এখানে এমন কয়েকটি বিয়েবহির্ভুত সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হলো:
শুধু লালসার সম্পর্ক
এই ধরনের বিয়েবহির্ভুত সম্পর্কের সংখ্যাই বেশি। এধরনের সম্পর্কের জড়িতরা শুধু যৌনতার জন্যই বিয়েবহির্ভুত সম্পর্কে জড়ান। নিজেদের জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে ত্যাগের কোনো পরিকল্পনা থেকে তারা সম্পর্কে জড়ান না। বরং তারা শুধু বিছানার উষ্ণতা উপভোগ করেন। এ ধরণের সম্পর্ক খুব বেশিদিন স্থায়ী হয় না। প্রথমে কিছুটা আবেগের সংশ্লিষ্টতা থাকলেও শিগগিরই তা কেটে যায়।
আবেগগত পরকীয়া
যৌন অবিশ্বস্ততার মতো আবেগগত পরকীয়াও সমানভাবে পাপের কাজ। একে অনেক সময় হৃদয়ের সম্পর্কও বলা হয়। এ ধরনের সম্পর্কে জড়ানোরা শারীরিকভাবে মিলিত না হলেও মানসিকভাবে পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত থাকেন। এরা জীবনের প্রতিটি বিষয়ের খুটিনাটি পরস্পরকে জানান। যৌনতা না থাকলেও যে যৌন আকর্ষণ থাকে না তাও নয়। এরা পরস্পরের সঙ্গে সারাক্ষণই মানসিকভাবে যুক্ত থাকতে চান। এ ধরনের সম্পর্কে জড়িতদের নিজেদের দাম্পত্য সম্পর্কে অচিরেই ফাটল ধরে।
প্রতিশোধমূলক পরকীয়া
বিদ্যমান জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি বিদ্বেষ থেকে এ ধরনের সম্পর্কে জড়ান নারী-পুরুষরা। সঙ্গী বা সঙ্গিনী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে তার প্রতিশোধ নিতে নিজেও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন অনেকে। অথবা সঙ্গী বা সঙ্গিনীর উদাসীনতার প্রতিশোধ নিতে এ ধরনের সম্পর্কে জড়ান তারা। বিশেষজ্ঞদের মতে পরকীয়ার সম্পর্কের ৯০ শতাংশই হলো প্রতিশোধমূলক।
কাল্পনিক পরকীয়া
কোনো সহকর্মী বা জিমের কোনে বন্ধু হয়তো আপনার সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্তদ করেন। আর আপনি মনে মনে ভেবে নিলেন আপনাদের মধ্যে হয়তো অনুরাগের সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে এবং তিনি আপনার জন্য তার বর্তমান সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে ছেড়ে আসবেন। এ শুধু আপনার একতরফা কল্পনা এবং এতে আপনার ওপর বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
দেহ ও আত্মার পরকীয়া
এই ধরনের পরকীয়া সবচেয়ে ক্ষতিকর। এটা অনেকটা সত্যিকার দাম্পত্য সম্পর্কের মতো। এ ধরনের সম্পর্কে জড়িতরা যৌন মিলন করেন, পরস্পরের ওপর আবেগগতভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েন এবং পরস্পরে সংস্পর্শে পূর্ণতা অনুভব করেন।
এরা নিজেরা পরস্পরকে আত্মার সাথী মনে করেন। এই ধরনের পরকীয়া বিয়ের সম্পর্ক ধ্বংস করাতে পুরোপুরি সক্ষম। কারণ এই ধরনের সম্পর্ক দুজনের কাছেই খুবই সঠিক মনে হয়! এই ধরনের সম্পর্ক শারীরিক বা আবেগগত হওয়ার চেয়েও বরং অনেক বেশি আত্মিক।
এ ধরনের সম্পর্কে জড়িতরা পরস্পরকে প্রতিনিয়ত অনুভব করেন। আর ক্ষণিকের বিচ্ছেদও তাদেরকে তীব্র বেদনা দেয়। এই ধরনের পরকীয়া নিশ্চিতভাবেই বিয়ে বিচ্ছেদ এবং পুনঃবিয়ের দিকে এগিয়ে যায়।
সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রার পারদ উঠল ৪৩ ডিগ্রিতে
চুয়াডাঙ্গায় ১৮ দিন ধরে অব্যহত রয়েছে তীব্র থেকে অতি তীব্রবিস্তারিত পড়ুন
যেসব অঞ্চলে টানা ৩ দিন ঝড়বৃষ্টি
চট্টগ্রাম বিভাগে টানা দুই দিন এবং সিলেট বিভাগে টানা তিনবিস্তারিত পড়ুন
২৪ ঘণ্টা না যেতেই ফের কমলো স্বর্ণের দাম
একদিন না যেতেই আবারও স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারিবিস্তারিত পড়ুন