রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

বরগুনায় স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগে সেই ‘ভুয়া’ ডাক্তার গ্রেপ্তার

বরগুনায় স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগে সেই ‘ভুয়া’ ডাক্তার মাসুম বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বরগুনা শহরের একটি ভাড়াবাসায় বন্দি রেখে গোপনে নিজের স্ত্রীকে নির্মম নির্যাতন করে আসছিলেন তিনি।

রবিবার বিকেলে বাড়ির মালিক পক্ষর তথ্যর ভিত্তিতে বরগুনার বাজার সড়কের পাঁচতলা ভবন ‘গোলাপ প্লাজা’র একটি ফ্ল্যাট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বরগুনা থানার পুলিশ।

দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ বলে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন মাসুম বিল্লাহ। এর আগে ২০১১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ‘কত রকমের চিকিৎসক’ শিরোনামে মাসুম বিল্লাহর চিকিৎসা প্রতারণা নিয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ভুল চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষ হত্যাসহ প্রতারণার বহু অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে শহরের প্রাণকেন্দ্র ফার্মেসি পট্টি এলাকায় বিশাল চেম্বার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বহাল তবিয়তে প্রতারণার মাধ্যমে চিকিৎসাবাণিজ্য চালিয়ে আসছিলেন মাসুম।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ কানিজ ফাতিমা সোনিয়া (২২) জানান, দীর্ঘ একবছর ধরে তাকে একটি ফ্ল্যাটে তালাবদ্ধ রেখে নির্মম নির্যাতন করে আসছিলেন মাসুম বিল্লাহ। তিনি আরও বলেন, নিজেকে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে আজ থেকে ১৪ মাস আগে ফুসলিয়ে তাকে বিয়ে করেন মাসুম। বিয়ের পরে তিনি জানতে পারেন যে, শিশু বিশেষজ্ঞ তো দূরের কথা মাসুম বিল্লাহ কোনো ডাক্তারই নন। কিছুদিন আগেও বরগুনার একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মো. আলমগীর হোসেন এর চেম্বারে ফুট ফরমাসের কাজ করতেন মাসুম বিল্লাহ।

নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কানিজ ফাতিমা সোনিয়া বলেন, এর আগে তিনি বিবাহিতা ছিলেন। তার স্বামী বিদেশ থাকতেন। তার একটি শিশুপুত্র রয়েছে। বছর দেড়েক আগে তার সাথে মাসুম বিল্লাহর পরিচয় হয়। সেই থেকে নিজেকে একজন বড় মাপের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয় দিয়ে মুঠোফোনে তাঁকে বিভিন্ন সময়ে প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকেন মাসুম। একপর্যায়ে ২০১৬ সালের ৫ মার্চ তাকে ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ে করেন মাসুম বিল্লাহ। বিয়ের পর থেকেই মাসুম বিল্লাহ তাকে যৌতুকের জন্যে শারীরিকভাবে নিষ্ঠুর নির্যাতন করতে থাকে। এরপর ছয় মাস ১০ দিন পর ২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কানিজ ফাতিমা সোনিয়াকে তালাক দেন মাসুম বিল্লাহ।

নির্যাতিত সোনিয়া আরও জানান, তাকে তালাক দেওয়ার পরপরই সব কিছু গোপন রেখে মাসুম বিল্লাহ বরগুনার পাতাকাটা এলাকায় তার আপন এক মামাতো বোনকে বিয়ে করেন। কিছুদিন পর সেই মামাতো বোনকেও তালাক দেন মাসুম বিল্লাহ। এ সময় সোনিয়া পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় তার খালুর বাড়ি অবস্থান করেন। এরপর পুনরায় সেই খালুর বাড়ি গিয়ে খালা-খালুর হাতে পায়ে ধরে কানিজ ফাতিমা সোনিয়াকে বরগুনায় নিয়ে আসেন মাসুম বিল্লাহ। এরপর আবারও বাসায় স্থানীয় একজন কাজি শহিদুল ইসলামকে ডেকে জোরপূর্বক তার স্বাক্ষর নেন মাসুম। কিন্তু বিয়ের রেজিস্ট্রেশন, কাবিননামা এমনকি তালাকের কোনো কাগজপত্র তাকে কাজি দেয়নি বলে জানান সোনিয়া।
সোনিয়া আরও জানান, বিয়ের পরে একপর্যায়ে তিনি সন্তানসম্ভবা হলে জোরপূর্বক তাকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে গর্ভপাত করান মাসুম। এ ঘটনার পরে তিনি অনেক দিন অসুস্থ ছিলেন বলে জানান সোনিয়া।

বরগুনা শহরের বাজার সড়কে গোলাপ প্লাজার মালিক আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী সামসুন্নাহার (৫০) জানান, গত একবছর ধরে তাদের ভবনের পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রী কানিজ ফাতিমা সোনিয়াকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন মাসুম বিল্লাহ। প্রায় প্রতিদিনই মাসুম বিল্লাহ তাঁর স্ত্রী সোনিয়াকে শারীরিক নির্যাতন করে তালাবদ্ধ করে রেখে যেতেন। প্রথম দিকে বিষয়টি বুঝতে পারেননি তারা। রবিবার বিকেলে পুনরায় স্ত্রী সোনিয়াকে নির্মম নির্যাতন শুরু করলে তিনি পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে মাসুম বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

এদিকে গ্রাম ডাক্তার সমিতির সভাপতি গ্রাম ডাক্তার এম এ মোতালেব জানান, মাসুম বিল্লাহ বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের খাকবুনিয়া গ্রামের একিন আলী পহলানের ছেলে। নিজেকে ডিএমএফ এবং ডিএমসিএইচ পাস একজন ডাক্তার বলে পরিচয় দিয়ে বরগুনা শহরে ডাক্তারি করে আসছে সে। অথচ তারা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, তিনি কোনো বিষয়েই ডাক্তারি পড়াশোনা করেননি। কোনো সার্টিফিকেট যদি মাসুম বিল্লাহ যোগাড় করেও থাকেন তা বানোয়াট ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বছর কয়েক আগেও বরগুনার শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আলমগীর হোসেনের চেম্বারের একজন পিওন ছিলেন মাসুম বিল্লাহ।

বরগুনার গ্রাম ডাক্তার সমিতির সাধারণ সম্পাদক গ্রাম ডাক্তার আনোয়ার হোসেন শিমুল জানান, ভুল চিকিৎসায় এক দরিদ্র নারীর মৃত্যুর অভিযোগে মাসুম বিল্লাহর বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে। তিনি আরও জানান, এর আগে মাসুম বিল্লাহ তার চেম্বারে কর্মরত একজন দরিদ্র নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরে টাকা পয়সা দিয়ে সে ঘটনাকে ধামাচাপা দেন মাসুম বিল্লাহ।

মাসুম বিল্লাহর গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের খাকবুনিয়া গ্রামের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ মো. জালাল আহমেদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাসুম বিল্লাহর ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে স্থানীয় অধিবাসী শাহিন খানের স্ত্রী ফরিদা বেগমের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মাসুম বিল্লাহর বিরুদ্ধে সে সময় বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলাও দায়ের করা হয়েছিল বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে বরগুনা থানার ওসি মাসুদুজ্জামান বলেন, নির্যাতনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নির্যাতিত স্ত্রীকে উদ্ধারের পর অভিযুক্ত মাসুম বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করে বরগুনা থানার পুলিশ। এ বিষয়ে নির্যাতিত গৃহবধূ কানিজ ফাতিমা সোনিয়া বাদী হয়ে রবিবার রাতেই বরগুনা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ৫

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রিলাক্স পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশেরবিস্তারিত পড়ুন

৪ হাজার কোটির খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রস্তুত 

ট্রেন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত নতুনবিস্তারিত পড়ুন

উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে শোকজ শুরু করেছে বিএনপি

চলমান উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপের ভোটে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেবিস্তারিত পড়ুন

  • ময়মনসিংহের এমপি শান্ত দলীয় বিরোধে পদত্যাগের ঘোষণা 
  • লক্ষ্মীপুর জেলায় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু
  • কাউন্সিলর ও তার ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ 
  • মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ সমাবেশ
  • কামরাঙ্গীরচরে বিষপান করে পগৃহবধূর আত্মহত্যা
  • বানিয়াচং উপজেলায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে, ৩ জনে মৃত্যু
  • সাতক্ষীরা জেলায় আম সংগ্রহ উদ্বোধন
  • ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ শুরু
  • ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে : ওবায়দুল কাদের
  • পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক আটক
  • মোহাম্মদপুরে ৬০ কোটি টাকা মূল্যের খাস জমি উদ্ধার
  • বগুড়ার ৩টি উপজেলায় নির্বাচন; ১৫৭ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ