বাংলাদেশে কোনো নারীর ফাঁসি হয়নি
দেশের ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারীর সংখ্যা ১২। সেই তালিকায় গতকাল থেকে যুক্ত হলো ঐশী রহমান। মা-বাবাকে হত্যার দায়ে কালই ফাঁসির রায় হয়েছে তার। রায় ঘোষণার পর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থান মিলেছে কনডেম সেলে। এই কারাগারটিতে আরো একজন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারী আসামি রয়েছে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের কারাগারগুলোতে ঐশীর রায় হওয়ার আগ পর্যন্ত ১২ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারী আসামি ছিল। এদের মধ্যে কেউ কেউ ১০-১৫ বছর ধরে কনডেম সেলের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন আগে তাদের ফাঁসির রায় হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। দেশে আজ পর্যন্ত বহু পুরুষ আসামির ফাঁসি হলেও কোনো নারী আসামির ফাঁসি হয়েছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। এক কারারক্ষী জানান, তিনি ২৬ বছর ধরে চাকরি করছেন, আজ পর্যন্ত কোনো নারী আসামির ফাঁসি হয়েছে এমন কথা শোনেননি।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারী আসামিদের মধ্যে সবাই হত্যার দায়ে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছে বলে কারা সূত্রে জানা গেছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে নিজ পরিবারের কোনো সদস্যকে হত্যার দায়ে ফাঁসির দণ্ড পেয়েছে এদের বেশির ভাগই। কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, ২০০৯ সালে সারা দেশের কারাগারগুলোতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারী আসামি ছিল ৩০ জন। তাদের অনেকের উচ্চ আদালতে আপিল শুনানির পর ফাঁসির দণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। ফলে দণ্ডপ্রাপ্তদের সংখ্যা কমেছে। বেশির ভাগ নারী ফাঁসির আসামিই রয়েছে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে।
কারা সূত্র জানায়, ফাঁসির আসামিকে যে সেলে রাখা হয় তার নাম কনডেম সেল। প্রতিটি সেল কম-বেশি ১০ হাত দৈর্ঘ্য ও ছয় হাত প্রস্থ। প্রতিটি সেলে তিন-চারজন করে ফাঁসির আসামিকে রাখা হয়। প্রতিটি সেলে গ্রিলঘেরা বারান্দা রয়েছে। ওই বারান্দাতেই তাদের হাঁটার সুযোগ মেলে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই তাদের থাকতে হয় সেলের ভেতর ও বারান্দায়। এক কারা কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিন দুপুরে গোসল করার জন্য তাদের বের হতে দেওয়া হয়। গোসলের আগে সেলের আশপাশে ১৫-২০ মিনিট হাঁটার সুযোগ দেওয়া হয়। এভাবেই মাসের পর মাস বছরের পর বছর পেরিয়ে যাচ্ছে তাদের। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা মাসে এক দিন সুযোগ পায় তাদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করার। তখন তারা কনডেম সেল থেকে বেরিয়ে কারাগারের গেটে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করে।
সূত্র জানায়, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে একটি করে থালা, বাটি ও কম্বল। এর বাইরে তাদের জন্য কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা নেই। এমনকি তাদের সেলে কোনো টেলিভিশনও নেই, যা দেখে তারা সময় পার করতে পারে।
ফাঁসি হয়নি কারো : এক হিসাবে দেখা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে শতাধিক নারীর ফাঁসির আদেশ হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো নারীর ফাঁসি কার্যকর হয়নি। তাদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন কারাভোগ করার পর বেরিয়ে গেছে, কেউ কেউ মারা গেছে, কারো কারো আপিলে শাস্তি কমেছে। বর্তমানে যারা কনডেম সেলে আছে তাদের করা আপিল আদালতেই ঝুলে রয়েছে। নিয়মানুযায়ী ফাঁসির আসামিরা সর্বশেষ সুযোগ হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারে। রাষ্ট্রপতি তাদের ক্ষমা না করলে ফাঁসি থেকে বাঁচার কোনো সুযোগ নেই। তবে আজ পর্যন্ত কোনো নারীর আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে গেছে এমন নজির নেই বলে জানা গেছে। একজন ঊর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তা বলেন, আমার জানা মতে এখন পর্যন্ত ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো নারীর আবেদন ক্ষমা প্রার্থনার জন্য রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত যায়নি। তাদের মামলার বেশির ভাগের কাগজপত্র আদালতের আপিল বিভাগে আটকে আছে।
২০০৭ সালে কাশিমপুরে একমাত্র মহিলা কারাগার উদ্বোধন করা হয়। দেশের প্রতিটি কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ থাকলেও সেখানে কোনো মঞ্চ নেই। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাবেক আইজি প্রিজন্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাকির হাসানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানিয়েছিলেন, অতীতে কোনো নারী আসামির ফাঁসির রেকর্ড না থাকায় ফাঁসির মঞ্চ বানানো হয়নি।-কালের কণ্ঠ
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
তুকতাক করার অভিযোগে গ্রেফতার মালদ্বীপের নারী মন্ত্রী
মালদ্বীপের নারী মন্ত্রী ফাতিমা শামনাজ আলী সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারবিস্তারিত পড়ুন
ওডিশার প্রথম নারী মুসলিম এমএলএ সোফিয়া ফিরদৌস
ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্য ওডিশা থেকে প্রথম নারী ও মুসলিম এমএলএবিস্তারিত পড়ুন
গফরগাঁওয়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক শামছুন নাহার
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ- ২০২৪ এ ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়েবিস্তারিত পড়ুন