মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

শিশু মোটা তাজাকরণ ব্যবসা শুরুর শঙ্কা

বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের (বিবিএফ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. সুফিয়া খাতুন বলেছেন, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) গবেষণা পথ্য অনুমোদন পেলে দেশে বাণিজ্যিকভাবে গরু মোটা-তাজাকরণের মত শিশু মোটাতাজাকরণ ব্যবসাও শুরু হবে। যদিও শিশুর অপুষ্টি দূর করতে মায়ের বুকের দুধ আর ঘরের তৈরি হাড়ির খাবারই যথেষ্ট।

সম্প্রতি মহাখালীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে বিবিএফ আয়োজিত ‘মারাত্মক তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের সঠিক ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক নীতিনির্ধারকদের বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

একই অনুষ্ঠানে দেশীয় উপাদানে তৈরি রেডি টু ইউজ থেরাপেটিক ফুড (আরইউটিএফ) পথ্যের প্রধান গবেষক আইসিডিডিআরবি`র ড. তাহমিদ আহমেদ বলেছেন, মারাত্মক অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের সঠিক ব্যবস্থাপনায় সরকারিভাবে প্রণীত জাতীয় গাইডলাইন অনুসরণ করেই নতুন এ পথ্য তৈরি করা হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে কাউকে সুযোগ করে দেয়ার লক্ষ্যে এ আরইউটিএফ’র গবেষণা করা হয়নি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান বলেছেন, শিশুদের সুস্থ রাখতে যে পদ্ধতি সবচেয়ে ভাল সেটিই গ্রহণ করতে হবে।

বিবিএফ আয়োজিত নীতিনির্ধারনী এ বৈঠকে দেশের প্রখ্যাত শিশু বিশেষজ্ঞ, পুষ্টিবিজ্ঞানী, গবেষক, আন্তজার্তিক সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ও প্রাণবন্ত আলোচনায় দেশের শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করার অভিপ্রায়ের বিষয়টি সবার কথায় উঠে আসে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা ডা. নাসরিন খান জানান, তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের সঠিক ব্যবস্থাপনায় জাতীয় গাইডলাইন পূণর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খুব শিগগিরই জনস্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিশু সংশ্লিষ্ট সকল বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে পৃথক দুটি কমিটি গঠিত হবে। কমিটির সদস্যরা বিদ্যমান গাইডলাইন পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে খতিয়ে দেখে মারাত্মক অপুষ্টির শিকার শিশুদের জন্য সহজলভ্য ও উপযুক্ত পথ্য নির্ধারণ করবে।

গত ৮ জুন আইসিডিডিআরবি`র সাসাকাওয়া অডিটরিয়ামে এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি আইসিডিডিআরবি’র উদ্ভাবিত নতুন গবেষণা পথ্য রেডি টু ইউজ থেরাপেটিক ফুড (আরইউটিএফ) ব্যবহারে তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুর অপুষ্টি দূর করতে ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে বলে তথ্য প্রকাশিত হলে পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা ক্ষুব্ধ হন।

কিছুদিন যাবত এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে দেশব্যাপী বির্তক চলছে। সৃষ্ট বির্তকের অবসানে গাইড লাইন পূণর্মূল্যায়নে কমিটি গঠনের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বৈঠকে বিবিএফ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ড. এস কে রয় পুষ্টি পরিস্থিতির সার্বিক তথ্য তুলে ধরে বলেন, দেশে প্রায় চার লাখ তীব্র অপুষ্টির শিকার শিশু রয়েছে। তাদের চিকিৎসায় আইসিডিডিআরবি এর নতুন পথ্যের প্রয়োজন নেই। মায়ের বুকের দুধ ও ঘরের তৈরি খাবারই যথেষ্ট।

তিনি আরো বলেন, প্যাকেটজাত ওই পথ্যে উপাদান হিসেবে গুড়ো দুধ ব্যবহার করা হয়েছে, যা ব্রেস্টমিল্ক সাবস্টিটিউট আইন-২০১৩’র সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাছাড়া অপুষ্টির শিকার শিশুদের শতকরা ৬০ ভাগ চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ানো হলে সাময়িকভাবে মোটা তাজা হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিবে।

বিবিএফ উপদেষ্টা শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম কিউ কে তালুকদার বলেন, অপুষ্টি শিশুর চিকিৎসায় মায়ের বুকের দুধ আর ঘরের তৈরি খাবারই যথেষ্ট। নতুন করে কোনো কিছু আবিষ্কারের প্রয়োজন নেই। দেশে বহু আগে থেকেই যে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা চালু আছে সে তথ্য মায়েদের কাছে কিভাবে পৌঁছানো যায় তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা (পিএইচসি) ডা. মো. কামরুল হাসান বলেন, আইসিডিডিআরবি-এর অনেক গবেষণা দেশের জন্য মঙ্গলকর হয়েছে। যেহেতু এটি নিয়ে বির্তক হয়েছে তার মাধ্যমে একটি সঠিক দিক নির্দেশনা বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছি।

জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের সাবেক পরিচালক শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এখলাসুর রহমান প্রশ্ন রেখে বলেন, গবেষণাটি নির্দিষ্ট তিনটি এলাকায় করা হলো কেন?

এটি দিয়ে সারাদেশের শিশুর অপুষ্টিতে কাজ করবে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ পেডিয়েট্রিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. শহীদউল্ল্যাহ বলেন, প্যাকেটজাত যে কোনো খাবার বাজারজাতকরণে ঝুঁকি রয়েছে। বাড়ির হাড়ির তৈরি খাবার কিভাবে নিশ্চিত করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে।

বাংলাদেশ পেডিয়েটিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. আজাদ চৌধুরী বলেন, গবেষণার মাধ্যমে ভালো কিছু হলেও পরবর্তীতে তা আর গবেষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বাণিজ্যিকভাবে তা উৎপাদিত হয়ে শিশু স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হবে।

শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন বলেন, অপুষ্টির শিকার শিশুদের সুচিকিৎসায় মায়েদের সচেতন করতে মিডিয়াকে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রতিনিধি ডা. মনিরা বেগম বলেন, আইসিডিডিআরবি`র গবেষণাটি এখনো অসমাপ্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবে না।

২০১৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পুষ্টি গাইডলাইন পুণর্মূল্যায়ন করেছে। বাংলাদেশকে এটি পুণর্মূল্যায়নের পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

নিউনেটাল ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হোসনে আরা বলেন, তীব্র অপুষ্টির শিকার শিশুদের অনেক সময় বাড়িতে চিকিৎসা দেয়া যায় না। তাই হাসপাতালে এসে যেন তারা চিকিৎসকদের সঠিক উপদেশ পান তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিতে হবে।

ইউএসএইড কর্মকর্তা রোকসানা হায়দার বলেন, যে সকল এলাকায় শিশুর অপুষ্টি দূরীকরণে মায়েদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে সে সকল এলাকায় অপুষ্টির শিকার শিশুর সংখ্যা হ্রাস পায় বলে তারা প্রমাণ পেয়েছেন। তাই সঠিক তথ্য পৌঁছানোটা খুবই জরুরি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত সচিব ড. মাগদুমা নার্গিস বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সঠিক তথ্যটি মায়েদের কাছে পৌঁছানো হচ্ছে। তাই কোনটি সঠিক ও ভালো সেটি খুঁজে বের করতে হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা ডা. নাসরিন খান বলেন, আইসিডিডিআরবি`র নতুন পথ্য শিশুদের কাছে পৌঁছানোর প্রক্রিয়ায় কয়েক বছর লেগে যাবে। এ সময়ে তাহলে কি শিশুরা চিকিৎসা পাবে না?

জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান পরিচালক আলমগীর আহমেদ বলেন, শিশুর অপুষ্টি দূরীকরণে বিভিন্ন জেলায় কার্যক্রম চলছে।

নতুন পথ্যে নিয়ে সৃষ্ট বির্তকের মাধ্যমে সঠিক দিক নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রফেসর ডা. এমআর খান বলেন, আইসিডিডিআরবি`র ওধারএস গবেষণা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়েছে। তবে এ নিয়ে বির্তক হওয়ায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শিশুর জন্য যা মঙ্গলকর তা খুঁজে বের করতে হবে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

কল-কারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই: প্রতিমন্ত্রী

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, প্রতিষ্ঠানিকবিস্তারিত পড়ুন

বেনাপোলের কিশোরী জোনাকির মরদেহ যশোরে উদ্ধার

যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া মডেল মসজিদের পাশে একটি পুকুর থেকেবিস্তারিত পড়ুন

শিশুর স্কুল থেকে শেখা বদভ্যাস থামাবেন যেভাবে

স্কুল থেকে শিশুরা জীবনের দিকনির্দেশনা পেয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় বিভিন্ন নিয়মকানুনবিস্তারিত পড়ুন

  • শিশুকে ‘ডব্লিউ পজিশনে’ বসতে বারণ করুন
  • ছুটিতেও চলুক জ্ঞানচর্চা
  • রাতে জন্ম নেয়া শিশুরা কেন ব্যতিক্রম? জেনে নিন
  • রাতে জন্মানো শিশুরা যেমন হয়
  • ধুলায় বাড়ছে শিশুর কাশি; কী করবেন?
  • বিশেষ যত্নে বড় করুন প্রতিবন্ধী শিশুকে
  • আপনার যে ভুলে সন্তান ক্লাসে অমনোযোগী!
  • যেভাবে আপনার কন্যা শিশুটির ক্ষতি করছে এ যুগের খেলনা
  • ‘আমি স্বাধীনতা দেখমু, আমি যুদ্ধ করুম’
  • শীতে শিশুর প্রস্তুতি
  • শিশুর নাকে পানি ঝরার সমস্যায় কী করবেন?
  • শীতে নবজাতকের যত্নে কী করবেন