সিলেটের ইমরান হত্যা মামলায় প্রেমিকার স্বীকারোক্তি
সিলেটে প্রেমিক ইমরান হোসেনকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন প্রেমিকা সুহাদা বেগম।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
আদালত সূত্র জানায়, বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত আদালতের বিচারক নজরুল ইসলাম সুহাদা বেগমের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দিতে তিনি জানান, প্রতিবেশী জাহাঙ্গীরকে নিয়ে ইমরানকে গলা ও পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা করেছেন। আরও জানান, হত্যার পর হাত-পা ভেঙে মরদেহ গুম করতে বস্তায় ভরে পুকুরের পানিতে গাছের শেকড়ের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।
আদালতে সুহাদা বেগমের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সিলেটের কানাইঘাটের সদর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের মো. আবু বক্করের ছেলে কানাইঘাট পৌর শহরের চয়েস টেইলার্সের মালিক দর্জি ইমরান হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দুর্গাপুর দক্ষিণ নয়াগ্রামের সৌদি প্রবাসী বদরুল ইসলামের স্ত্রী সুহাদা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক ছিলো।
বিয়ের আগে পরিবারের সঙ্গে উপজেলা সদরের পুরাতন থানা সংলগ্ন সুরমা নদীর পারে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। আর বাসার পাশেই ছিলো নিহত ইমরান হোসেনের দর্জির দোকান। ওই দোকানে সুহাদা তার পরিবারের লোকজন জামা-কাপড় সেলাই করাতেন। সেই সুবাদে ইমরানের সঙ্গে সুহাদার বেগমের স্কুল জীবন থেকেই সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তবে তাদের এ প্রেম মেনে নিতে পারেনি সুহাদার পরিবার। এ কারণে ইমরান বিয়ের প্রস্তাব দিলেও সুহাদার পরিবার কোনো সাড়া দেয়নি।
পরবর্তীতে সুহাদাকে তার পরিবারের সদস্যরা উপজেলার দুর্গাপুর দক্ষিণ নয়াগ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী বদরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের কিছুদিন পর সুহাদার স্বামী বদরুল ইসলাম সৌদি আরবে চলে গেলে সুহাদার সঙ্গে পুরনো প্রেমিক ইমরান হোসেনের পরকীয়ার সর্ম্পক গড়ে ওঠে।
আর নতুন করে তাদের এ সম্পর্কের বিষয়টি জেনে যান সুহাদার স্বামীর বাড়ির লোকজন। পরকীয়ার বিষয়টি সুহাদার আত্মীয়-স্বজনদের জানানো হলে তারা ইমরানকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেন।
এতে কর্ণপাত না করায় উভয় পরিবারই ইমরানের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে সুহাদা বেগমের ছোট ভাই ইমরান আহমেদ কৌশলে দর্জি দোকানি ইমরান হোসেনকে নিয়ে দাওয়াত খেতে সুহাদার শ্বশুর বাড়িতে যান।
এরপর ইমরান হোসেন আর বাড়ি ফেরেননি। নিখোঁজের দুই দিন পরও তার কোনো সন্ধান না পেয়ে বাবা আবু বক্কর কানাইঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
এরপরও ছেলের সন্ধান না পেয়ে শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে কানাইঘাট থানায় সুহাদা বেগম ও তার ভাই ইমরান আহমদ, দেবর মাসুম আহমদ ও লক্ষীপ্রসাদ গ্রামের উমর আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।
মামলার পর কানাইঘাট থানা পুলিশ ইমরান হোসেন নিখোঁজের রহস্য উদঘাটনের জন্য অভিযান শুরু করে। অভিযানের শুরুতেই তারা সুহাদা বেগমের দেবর মাসুম আহমদ ও নিকটাত্মীয় জাহাঙ্গীর আহমদকে গ্রেফতার করেন। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ওই রাতেই প্রেমিকা সুহাদা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর পরই সুহাদা বেগম পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি দেন। তার স্বীকারোক্তি মতে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কানাইঘাট থানা পুলিশ সুহাদার শ্বশুরবাড়ির পুকুর থেকে ইমরান হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, নিহত ইমরানের মরদেহ বিকৃত হয়ে পড়েছিলো। কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে জানান, আটককৃত সুহাদা বেগম, তার দেবর মাসুম আহমদ ও নিকটাত্মীয় জাহাঙ্গীর আহমেদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাদের শলাপরামর্শেই পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
তিনি আরও বলেন, ইমরান হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ৫
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রিলাক্স পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশেরবিস্তারিত পড়ুন
৪ হাজার কোটির খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রস্তুত
ট্রেন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত নতুনবিস্তারিত পড়ুন
উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে শোকজ শুরু করেছে বিএনপি
চলমান উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপের ভোটে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেবিস্তারিত পড়ুন