স্বামীর বড় বোনের ছেলে আমার সমবয়সী, আমরা সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছি…
কীভাবে শুরু করব বুঝতে পারছি না। আমার বয়স ১৯। একটা প্রাইভেট বিশ্ব বিদ্যালয়ে ফাস্ট ইয়ারে বিবিএ পড়ি। আমার বিএফ ছিল কলেজে পড়ার সময়। আমাদের ১ বছর সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমাদের মধ্যে ব্রেকআপ হয়ে যায়।
আমার বিয়ে হয়েছে ১০ মাস। আমার হাসবেন্ড দেশের বাইরে থাকে। বিয়ের ১ মাস পরেই চলে যায়। আমাদের বয়সের পার্থক্য একটু বেশী। ওর বয়স ৩৯। আমার হাসবেন্ড আমাকে সময় দেয় না ঠিকমত। কাজে অনেক ব্যস্ত থাকে। আমি শ্বশুর বাড়ীতে থাকি। বাসাতে শ্বশুর, শাশুড়ি, আমার ভাসুর তার ফ্যামিলি থাকে। আর থাকে আমার হাসবেন্ডের বড় বোনের ছেলে রোহান (ছদ্মনাম)। জমজমাট বাসা। রোহান আর আমি সমবয়সী, ও অন্য একটা প্রাইভেট বিশ্ব বিদ্যালয়ে ফাস্ট ইয়ারে বিবিএ পড়ে। ওর বাবা মা ঢাকার বাইরে থাকে, তাই ও নানাবাড়ি থেকে পড়ে।
সম্পর্কে আমি রোহানের মামী। কিন্তু আমাদের মধ্যে একটা ভাল বন্ধুত্ব হয়। যদিও সবার সামনে রোহান আমাকে মামী আর আপনি করে বলে। কিন্তু একা থাকলে আমরা বন্ধুর মত থাকি। হাসবেন্ডের ফ্যামিলি অনেক কনজারভেটিভ, বাইরে যেতে পারতাম না বেশী। তাই ছাদে ঘুরতাম, রোহানও ছাদে যেত। অনেস্টলি বলতে ওর সাথে একটা সুন্দর সময় পার করি। আমরা একা থাকলে ও মাঝে মাঝে দুষ্টামি করত। যেমন আমার চুলের বেণি খুলে দিত, হাত ধরত। আমি ফান হিসেবে দেখতাম। আমিও একা থাকতাম তাই ওর দুষ্টুমিটা ভালই লাগত। আমরা একদিন ছাদে লুকিয়ে সিগারেটও খেয়েছি। আমাকে একদিন ড্রিঙ্ক করাবে বলে।
একদিন একটা আত্মীয় মারা যাবার খবর আসলে বাসার সবাই ঐখানে চলে যায়। বাসায় শুধু আমি, রোহান আর কাজের মেয়েটা ছিল। রোহান ওইদিন আমার রুমে আসে আর আমরা অনেক গল্প করি। কিছুক্ষণ পর ও রুম থেকে চলে যায়। রাতে ও আবার ফিরে আসে একটা টাকিলা আর ভদকার বোতল নিয়ে। এসে বলে আজ তোমাকে ড্রিঙ্ক করাবো। আমি প্রথমে রাজি ছিলাম না, পরে ওর জোরাজুরিতে রাজি হই। আমি আগেও ড্রিঙ্ক করেছি, তবে ওইদিন একটু বেশী করলাম। রোহান পুরা বোতল শেষ করল।
দুজনেরই অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। রোহান হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমি ওকে বোঝানোর চেষ্টা করি যে আমি তোমার মামী, এগুলা করা ঠিক না। রোহান বলে আমি কিছু বুঝি না।
সেদিন আমাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। আমি জানি এটা ঠিক হয়নি। আমরা দুজনেই পরে ভুল বুঝতে পারি। আমার নিজের কাছে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে।
আমাকে একটু পরামর্শ দিবেন, আমি এখন কী করবো? আমি কি আমার হাসবান্ডকে সব খুলে বলবো ?
আমার কী করা উচিৎ?
পরামর্শ :
আপু, তোমার চিঠি পড়ে আমার রাগ করা উচিত। কিন্তু আমি রাগ করতে পারছি না মোটেও। কারণ তোমার জীবনের এই ঘটনার জন্য শুধু তুমি নও, আরও অনেক গুলো মানুষ দায়ী। তোমার পরিবার, তোমার স্বামী, শ্বশুরবাড়ি এবং ওই ছেলেটা- সবাই দায়ী। কারো দোষ কম নয়। আমি জানি এই চিঠি পড়ে অনেকেই তোমাকে বাজে কথা বলবে। কিন্তু আমি ১০০ ভাগ দোষ তোমাকে দিতে পারছি না।
যে বয়সে তোমার ভার্সিটি যাওয়ার কথা, হেসে খেলে বান্ধবীদের সাথে সময় কাটাবার কথা, প্রেম করার কথা- সেই বয়সে পরিবার তোমাকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। তাও একজন ৩৯ বছর বয়স্ক লোকের সাথে। চিন্তা করা যায়! তারপর যদি স্বামী কাছে থাকতেন, তাহলে একটা কথা ছিল। তিনি থাকেন বিদেশে। শ্বশুরবাড়ির এত শাসন যে নিঃশ্বাস নেয়া যায় না। এমন অবস্থায় ১৯ বছরের একটি মেয়ে ভুল করতেই পারে আপু। এটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ তোমার বয়সটাই এখন অস্থির, সংসারের জোয়াল ঘাড়ে নেয়ার বয়স না। তুমিও নিজেও ভুল করেছ। ব্রেকাপ হয়ে গিয়েছে বলে হুট করে বিয়েতে মত দিয়ে দিয়েছ।
তবে একটা জিনিস কি আপু, ওই ভাগ্নে ছেলেটিও ভালো না। সেও কিন্তু সুবিধাবাদী। সে ওইদিন তোমাকে মদ খাইয়েছিল এই কাজটি করার জন্যই। তাই ওই ছেলেটির প্রেমে পড়ে গেলে বা ওই ছেলেটির সাথে ঘনিষ্ঠ হলে তোমার জন্য কিন্তু একেবারেই ভালো হবে না।
তুমি এখন যা করতে পারো, সেটা হচ্ছে স্বামীর সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করো। এই মধ্য বয়স্ক লোকটিকে তুমি ভালবাসো না, ভালবাসলে প্রতারণা করতে পারতে না। তাছাড়া আমার মনে হয় না এমন দূরত্বের সম্পর্কে তুমি সুখী থাকবে। তাছাড়া এখন লোকটার সাথে সম্পর্ক রাখার অর্থ হবে তাঁকে ঠকানো। তুমি প্রথমে বাবার বাড়ি চলে যাও। সেখানে গিয়ে স্বামীকে সবই খুলে বলতে পারো যে রোহানের সাথে তোমার কী হয়েছে। সাথে এটাও বলো যে তুমি আর সংসার করতে চাইছো না।
এটা খুবই সম্ভব যে স্বামী সব শুনে তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেবেন। সেক্ষেত্রে তুমি মুক্ত। লেখাপড়া করো মন দিয়ে। নতুন করে জীবন শুরু করো। স্বামী তালাক দিলে পরিবারও আর জোর করে ওই সংসারে তোমাকে ফেরত দিতে পারবে না। আর স্বামী যদি সব জেনেও তোমাকে মেনে নেন, তাহলে বুঝবে তিনি আসলেই তোমাকে ভালোবাসেন। সেক্ষেত্রে স্বামীর সাথে সম্পর্ক জোড়া দেয়ার একটা চেষ্টা করতে পারো। তবে এই শর্তে যে তোমরা দুজন একই স্থাণে থাকবে। কাছাকাছি থাকলে এই সমস্ত সমস্যা মিটে যাবে।
তরুনী আবারও জানত চেয়েছেন, আপু আমি তালাক দিতে চাই নাহ। বিয়ে আমি নিজের মতেই করেছি। স্বামীর বয়স নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই। আমার একটু বয়স্ক স্বামী ভাল লাগে। cause they are more responsible. আমার প্রথম সম্পর্কটা ভাঙ্গার পরেই আমার এই realization.
কিন্তু আমরা শারীরিক সম্পর্ক করে ফেলেছি। রোহানের বাবহারেও ঐদিনের পর অনেক পরিবর্তন আসছে। ওহ আমাকে একা পেলেই এখন জড়িয়ে ধরে। কিস করে। আমার শরিরের গোপন জাইগা গুলাতে হাত দেই, টিপে আর আবারো শারীরিক সম্পর্ক করতে চাই যেন আমি ওর বিয়ে করা বউ।
আমি ওকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। আপু তালাক বাধে আমাকে অন্য suggestion দাও।
কাওসার নামের জনৈক পাঠক উত্তরে জানিয়েছেন, মুসলিম ধর্মের আইন অনুযায়ী আপনার স্বামী যে ছিল সে এখন আর আপনা স্বামী নাই, আপনার এই অবৈধ সম্পর্কের ফলে। ভাল একজন হুজুরের সাথে কথা বলুন তারপর ভেবে দেখুন কি করবেন।
রকিবুল হাসান নামের জনৈক পাঠক জানিয়েছেন, প্রথমত আপনি একজন নারী আর আপনার জীবনে যৌন চাহিদা থাকাটা টা স্বাভাবিক। আমাদের দেশে সাধারণত বিয়ের পর অনেক স্বামী তার স্ত্রীর চাহিদার কথা মাথায় রাখেন না, সুধু নিজের চাহিদা এবং কর্ম জীবন নিয়ে ব্যস্থ হয়ে পরেন আর সেই জন্য পরকীয়া এবং অবৈধ সম্পর্ক অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
আপনার এই ধরণের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার প্রধান কারণ আপনার স্বামী আপনার থেকে দূরে। তাই আপনার একাকীত্ব দুর করার মত একজনই আছে আর সে হল রোহান! যে সময়টা আপনাকে আপনার স্বামীর দেয়া উচিৎ সেই সময়টা আপনি অন্য কারও কাছ থেকে নিতে হচ্ছে। যা আপনার জন্য সত্যি দুর্ভাগ্য জনক।
আপনার জন্য পরামর্শঃ
আপনি ভুল করছেন এবং তা বুঝতে পেরেছেন। আমার প্রশ্ন হল আপনি কি ২য় বার এই ভুলে পড়বেন না এর কি গ্যারান্টি আছে ?
তাই আপনি যদি নিজেকে সৎ রাখতে চান তবে আপনার স্বামীকে সময় দিন তাকেও আপনাকে সময় দিতে বলেন। দাম্পত্য জীবনে আপনাদের উপভোগ করতে হবে তাই আপনাদের ২জন কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জীবন মানে এই নয় কর্মের মাঝে নিজের সাধ আহ্বলাগ সব ঢেলে দিবে । তাই আপনার স্বামীর সাথে ভালো সম্পর্ক করুণ।
তাকে ভালোবাসুন মন দিয়ে। তাহলেই আপনার এই একাকিত্ত দূর হবে এবং নিজেও উপভোগ করতে পারেন আপনার দাম্পত্য জীবনেকে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
তুকতাক করার অভিযোগে গ্রেফতার মালদ্বীপের নারী মন্ত্রী
মালদ্বীপের নারী মন্ত্রী ফাতিমা শামনাজ আলী সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারবিস্তারিত পড়ুন
ওডিশার প্রথম নারী মুসলিম এমএলএ সোফিয়া ফিরদৌস
ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্য ওডিশা থেকে প্রথম নারী ও মুসলিম এমএলএবিস্তারিত পড়ুন
গফরগাঁওয়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক শামছুন নাহার
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ- ২০২৪ এ ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়েবিস্তারিত পড়ুন