শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

স্মার্ট ছেলেরা হেলমেট ছাড়া বাইক চালায় না !

সাজু আহমেদ: বর্তমান কর্মব্যস্ত জীবনে অনকেটা সহজে চলফেরা করতে বাইকের জুড়ি নেই বললেই চলে। আর তাই বর্তমানে অনেকেরই অন্যতম প্রিয় বাহন এই বাইক। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও বেছে নিচ্ছেন স্কুটি বা মোটরসাইকেল। তবে মোটরসাইকেলের সাথে সাথে আরেকটি নাম জুড়ে আছে আর তা হলো হেলমেট, মোটরসাইকেলে চলতে মাথায় রাখা চাই হেলমেট। মাথাকে সুরক্ষা দিতে যেকোনো দুর্ঘটনা থেকে দূরে রাখতে হেলমেট খুবই জরুরি।

আমাদের দেশের বর্তমান আইনেও মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী উভয়ের মাথায় হেলমেট থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বিশেষ করে শহর অঞ্চলে উঠতি বয়সের ছেলেদের বেপোরোয়াভাবে বাইক চালাতে দেখা যায়। মাথায় কোনো হেলমেট না পড়েই তাদের বাইকের গতি এত দ্রুত বাড়িয়ে দেয় যা সত্যি ভয়ংকরই বটে। আর এতে করে ওই সকল ছেলেরা বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডসহ মেয়েদের টিজকরা যেন এক নিত্য পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হেলমেট না পড়েই টিনএজ ছেলেদের এই সকল কর্মকান্ডের একটি চিত্র তুলে ধরে ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার বি করিম । তিনি বেশ বিস্তারিত আকারে এর কুফল উল্লেখ করেছেন। তার স্ট্যাটাসটির উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হলো-

সুন্দরীদের জন্য কাজ দিবো বলেছিলাম। বুঝে নেন- সত্যি বলতে “সুন্দরী” কথাটা ব্যবহার করেছিলাম শুধু মাত্র আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। আপনি ছেলে হন বা মেয়ে হন, দেখতে সুন্দর হন আর নাই হন, আমার কাছে আপনার প্রথম পরিচয় আপনি মানুষ না, বরং আপনি একজন ফেসবুকার।

একটা গল্প শুনবেন? তিন লাইনের গল্প। এক ছেলে রাত একটায় বাড়ি ফিরেছে। ফিরে দেখে মেইন গেট বন্ধ। ধাক্কাধাক্কির পরও যখন দাড়োয়ান দরজা খুললো না তখন সে স্ট্যাটাস দিলো, “দাড়োয়ান মামা, আমি বাইরে, দরজা খুলেন”। মজা করে হলেও এটাই এখন বাস্তবতা। ফেসবুক এখন প্রায় সবাই ইউজ করে। এটা কতটা কাজের তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

আসল কথায় আসি। আমরা তো সমাজে বাস করি তাই না? আমাদের সমাজের কোন সমস্যা দেখা দিলে সেটার জন্য কি ভুটানের রাজা এসে সমাধান করে দেবে? আমাদেরই করতে হবে। তাই তো? দু’দিন আগে ঢাকার মতিঝিলে একটা খুব বাজে ঘটনা ঘটেছে। একটা বাইকার গ্রুপ একজন মহিলাকে মেরে ফেলেছে।

কিভাবে? আচ্ছা, যে মারা গেছে তার বোনের কথাটা পড়েন-“মোটর সাইকেলে থাকা তিনজনের একজন আমার বোনের ওড়না ধরে টান দেয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আপা ছিটকে মোটর সাইকেলের ওপর পড়ে। এতে ওরা গতি বাড়িয়ে দেয়। আমার বোনকে ওভাবেই টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আইল্যান্ডের উপরে আছড়ে ফেলে, বিকট শব্দ হয়।” এরপর রুনার পায়ের ওপর দিয়ে বাইক চালিয়ে নিয়ে যায় তিন বখাটে। “দৌড়ে গিয়ে দেখি আমার বোন আইল্যান্ডের পাশে পড়ে আছে। আমার দিকে এক পলক তাকাল, তারপর চোখ বুজে গেল। আর খুলল না। আপার মাথা ধরে তুলতে গেলাম, আমার হাতে ওর মগজ লেপ্টে গেল,” কথাগুলো নিহত রুনা আক্তারের বোন বীথির। উনার বাচ্চার বয়স কত শুনবেন? মাত্র ১৪ মাস।

বি করিম লিখেছেন- আমি নিজে এই ছেলেগুলোকে পুরোটা দোষী বলবো না। দোষী আমাদের পুরো সমাজ ব্যবস্থা। বর্তমানে আমাদের সমাজের একটা ভয়ানক সমস্যা হলো তরুণ সমাজের হাতে মোটরবাইক। এটা কতটা ভয়ানক নেশা? ধরে নেন হেরোইনের চেয়েও বড় নেশা। একটা দামি বাইক থাকা মানে বন্ধুদের মধ্যে দারুন কিছু হয়ে যাওয়া। ইচ্ছে মত বাতাসে ছোটানো যায়। সহজেই গার্লফেন্ড পাওয়া যায়, তাকে নিয়ে ১৫০ কি. মি. গতিতে হাইওয়েতে ছোটা যায়… পাড়ার ভেতর যে কোন মেয়ের ওড়না ধরে টান দেয়া যায়।

আমাদের দেশে খুব অল্প খরচ করলেই প্রচন্ড দানবীয় শক্তিশালী বাইক কিনতে পাওয়া যায়। যারা চালাচ্ছে তাদের অনেকেরই লাইসেন্স নেই। সেসব দেখার মানুষও নেই। মা-বাবাদের কাছে চাইলেই দামি মোবাইলের মত দামী বাইক পাওয়া যাচ্ছে। মা-বাবারা ব্যস্ত আছেন নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে। ছেলে বাইক নিয়ে কি করছে সেটার খোঁজ রাখে ক’জন?

তিনি লিখেছেন- সমাধান তো লাগবে তাই না? বাইক চালানো নিষেধ করে দিতে হবে? না, মাথা ব্যথার ঔষধ মাথা কেটে ফেলা না। আপনি নিজের ছোট ভায়ের হাতে অবশ্যই বাইক তুলে দিবেন। কিন্তু সেটা তাকে দায়িত্ব নিয়ে চালাতে হবে। তার মাথায় এটা ঢুকিয়ে দিতে হবে তার কিছু হওয়া মানে যেমন তার পরিবারের কিছু হওয়া, তেমনই ভাবে তার কারণে অন্য কারো কিছু হওয়া মানে অন্য কোন পরিবারের সব শেষ হয়ে যাওয়া।

আমার কাছে একটা সমাধানই আছে আপাতত, সবাইকে হেলমেট পরতে বলা, আপনি যখন হেলমেট পরবেন তখন আপনি সবার থেকে আলাদা। আপনি যখন হেলমেট পরবেন তখন আপনি জানেন আপনার মাথার মূল্য কতটা, আপনি জানেন আপনার জন্য আপনার পরিবার খাওয়ার টেবিলে অপেক্ষা করছে। আপনি হেলমেট পরবেন তখন আপনি জানবেন কোন রাস্তায় কত গতিতে বাইক ছোটাতে হয়, হেলমেট পরলেই আপনি বুঝবেন আপনার মত রাস্তার অন্যদেরও নিরাপত্তার অধিকার আছে। যার তার ওড়না ধরে টান দেয়াটা তখন আপনাকে মানাবে না।

বি করিম এ বিষয়ে আরো লিখেছেন, আপনি যখন হেলমেট পরবেন তখন আপনি আর কিছু না, জাস্ট অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট। আমাদের সবার পরিবারেই কেউ না কেউ আছে যারা বাইক চালায়। তো, আমরা কি তাদের প্রতি কোন দায়িত্ববোধ করি? তারা বাইরে কি করে না করে সেটা পরের কথা, আমরা এটা কখনো দেখি যে তারা হেলমেট পড়ছে কিনা? দেখেন আমরা একদিনে রাষ্ট্র ব্যবস্থা বদলাতে পারবো না। পুলিশ দিয়ে জোর করে আইন মানাতে পারবো না। কিন্তু নিজেদের ছোট ভাইদের মাথায় হাত বুলিয়ে, চাইলে কানের নিচে দুটো থাপ্পড় দিয়ে শাসন করতে পারবো। পারবো না? সবাই নিজ নিজ গন্ডির মধ্যে এই কাজটা করেন। পারবেন?

নিজের বাবা, ভাই, দুলাভাই, মামা, খালু শশুর এরা কিন্তু আপনার কথা ফেলতে পারবে না। পারবে? মেয়ে যদি বাবার, বোন যদি তার ভাইয়ের হাতটা নিজের মাথায় রেখে কসম করায়, তারা হেলমেট ছাড়া জিন্দেগিতে আর বাইক চালাবে না।

আসেন ফেসবুকটাকে ইউজ করি, দুই ভাবে করতে পারেন-

এক: সবাই এই এক লাইনের স্ট্যাটাসটা কপি করে পোস্ট দেন, “স্মার্ট ছেলেটা হেলমেট বাদে বাইক চালায় না”

দুই: নিজের প্রোফাইল পিক চেন্জ করেন। একই কথাটা একটা কাগজে লিখে কাগজটা বুকের কাছে ধরে একটা ছবি তোলেন। সেটা প্রোফাইল পিক বানান। কেন সেটা করলেন সেটার জন্য দুটো লাইন লিখে দেন।

আপনি সুন্দরী হন আর যেই হন, আপনার কথা কিন্তু দুটো মানুষ হলেও শোনে। আপনার একটা স্ট্যাটাসে, একটা ছবি দেখে যদি একটা বন্ধুও সাবধান হয় তো ক্ষতি কি? আপনার বন্ধু যখন নিরাপদে প্রতিটা রাতে তার বাড়ি ফিরবে, খানিকটা ক্রেডিট কিন্তু আপনারো।

এ্যাক্সিডেন্টের পরে প্রতিবাদ, শাস্তির জন্য মানববন্ধন করার চেয়ে আগে থেকে সাবধান হওয়া ভালো না? তো অপেক্ষা কিসের? কাল আমার বোনের ওড়না ধরে কেউ টান দিক, তারপর সাবধান হবো??

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

খেলার জগতের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পেশাদারি কাঠামো

লাল-সবুজের তরুণ প্রজন্মের এ সময়ের প্রিয় শ্লোগান, ‘বাংলাদেশের জান, সাকিববিস্তারিত পড়ুন

আগস্টের শোককে শক্তি হিসেবে নিতে পারি আমরা তরুণেরা

“যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তিবিস্তারিত পড়ুন

বাবা যখন ধর্ষক

যেখানে আপন বাবাই ধর্ষণ করে, সেখানে সৎ বাবার ধর্ষণ আমাদেরবিস্তারিত পড়ুন

  • দুই বড় দেশ যখন প্রতিবেশী ও প্রতিযোগী
  • মৌসুমি নৌকা শোরুম
  • ভারতবিদ্বেষ কেন বেড়ে চলেছে?
  • জনগণের কাছে শেখ হাসিনাই জয়ী
  • ‘গুলিস্তান’ নেই, তবু আছে ৬৪ বছর ধরে
  • পদ্মা ব্রিজ দিয়ে কী হবে?
  • যুদ্ধাহতের ভাষ্য: ৭০– “এখন অমুক্তিযোদ্ধারাই শনাক্ত করছে মুক্তিযোদ্ধাদের”
  • আসুন, বড় হই
  • আসুন, পিঠের চামড়া না তুলে পিঠ চাপড়ে দিতে শিখি
  • বাড়িওয়ালা মওদুদ ও বাড়িছাড়া মওদুদ
  • ব্রিটেনের নতুন সরকার নিয়ে যে শঙ্কা!
  • আওয়ামী লীগ ছাড়া কি আসলে কোনো বিকল্প আছে?