শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

২৯ জানুয়ারির সেই বক্তব্যই শেষ স্মৃতির সম্পদ হিসেবে সংসদ আর্কাইভে সংরক্ষিত থাকবে

স্বাধীনতার আগে থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখনও পর্যন্ত প্রভাব রেখে যাওয়া রাজনীতিবিদের অন্যতম ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। রাজনীতিক হিসেবে সর্বশেষ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য পদে থাকলেও দীর্ঘ কেরিয়ারে ছিলেন নানা ভূমিকায়।

সুপরিচিত এই রাজনীতিবিদের জন্ম ১৯৪৫ সালে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায়। রাজনৈতিক কেরিয়ারে সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এমন কী মুক্তিযুদ্ধের আগে ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোয়ারের সময়েও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি থেকে মাত্র ২৫ বছর বয়সে নির্বাচিত হয়েছিলেন এই রাজনীতিবিদ। নব্বই-এর দশকের শুরুতে তিনি যোগ দেন আওয়ামী লীগে।

“তিনি যখন পার্লামেন্টে বক্তৃতা করতেন, সকল সদস্য সেটা তন্ময় হয়ে শুনতেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নাম সব সময় লেখা থাকবে। একজন মহান নেতাকে আমরা হারালাম, তার শূন্যতা পূরণ হওয়া অত সহজ নয়”, বলছিলেন আওয়ামী লীগের আরেক সিনিয়র নেতা তোফায়েল আহমেদ।

স্বাধীন দেশের প্রথম সংসদসহ তিনি সাত বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সুন্দর বাচনভঙ্গীতে ধারালো বক্তব্য দিয়ে সংসদ অধিবেশন মাতিয়ে রাখতেন তিনি। গত ২৯ জানুয়ারি রোববার দশম জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন। সেই বক্তব্যই যে তার শেষ বক্তব্য হবে তা কেউই বুঝতে পারেননি। তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সেদিন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দেশের রাজনীতির অঙ্গনে বর্তমানে সময়ে আলোচিত নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সার্চ কমিটি গঠন ও তার সাংবিধানিক এখতিয়ার নিয়ে জোরালো যুক্তি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। ইসি গঠনের বিষয়কে বাংলাদেশের একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে জাতিসংঘকেও মাথা না ঘামানোর অনুরোধ করেন। সংসদে দেওয়ার তার সেই বক্তব্য শেষ স্মৃতির সম্পদ হিসেবে সংসদ আর্কাইভে সংরক্ষিত থাকবে।

এক সপ্তাহ আগে সংসদে দেওয়া বক্তব্যে সুরঞ্জিত সংবিধানের ৪৮ ধারা উল্লেখ করে বলেন, রাষ্ট্রপতির কথার ওপরে কোনো কথা নাই। আমরা তার প্রতি গভীরভাবে শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতি গভীরভাবে পড়াশোনা করে একটি সুন্দর সার্চ কমিটি গঠন করেছেন।

সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, অত্যন্ত আশ্চর্যের সঙ্গে দেখলাম, বিএনপি সার্চ কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাইছে। রাষ্ট্রপতির এই কমিটি করার পরে কারো কোনো কথা বলার অধিকার নেই। বিএনপিকে যদি সাংবিধানিক রাজনীতি করতে হয়, তাহলে সংবিধান জেনেই করতে হবে।

এ সময় সার্চ কমিটি নিয়ে বিএনপির দুই নেতার দুই রকম বক্তব্যের বিষয়ও তুলে ধরে সমালোচনা করেন তিনি।

ইসি গঠন নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থার মতামত ও আগ্রহের সমালোচনা করে তিনি বলেন, জাতিসংঘও ইন্টাররেস্ট দেখাচ্ছে। জাতিসংঘের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রক্রিয়ার ওপর কোনো কথা বলার এখতিয়ার বা সংশ্লিষ্টতা বিশ্বের কোনো দেশেরই নাই। তাদের যদি কোন কথা থাকে সেটা ডিপ্লোম্যাটিক চ্যানেলে তারা বলতে পারেন।

অভিজ্ঞ এই পার্লামেন্টারিয়ান বলেন, সাংবিধানিক পথ ছাড়া অন্যভাবে এই জাতিকে বিব্রত করা ঠিক হবে না। এক্ষেত্রে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, এখন যেটি অবশিষ্ট আছে। সুযোগ এখনো যায় নাই। রাষ্ট্রপতি অনুসন্ধান কমিটি করে দিয়েছেন। বিএনপির যদি কোনো কথা থাকে, তারা অনুসন্ধান কমিটিতে বলতে পারেন। তারা বলতে পারেন, এই লোক না নিয়ে ওই লোক নিন। এটা সংবিধান প্রণিধানযোগ্য হতে পারে। অন্য কোনো উপায় নেই।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে এসেছে বলে দাবি করছে। তাহলে তাদেরকে সংবিধান সম্পর্কে আরো ওয়াকিবহাল ও শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

রাষ্ট্রপতি অনুসন্ধান কমিটি যেটা করেছেন, সেটা গোটা জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে উল্লেখ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনে এমন সুন্দর অ্যাপ্লিকেশন দেখি নাই। মহামান্য রাষ্ট্রপতি তিনি তো বাইরে থেকে কোনো নতুন লোক আনেন নাই। তিনি নতুন করে কাউকে শপথও করান নাই। শুধু দুজন ছাড়া। এখন এই ব্যাপারটি নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার না করে সাংবিধানিকভাবে যা উপায় আছে, তার কথা ভাবতে পারেন।

ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, আমরা কী চাই, সেটা রাষ্ট্রপতির কাছে বলে এসেছি। আমাদের নেত্রী কেবলমাত্র সংবিধানের মধ্য থেকেই ক্ষমতার ব্যবহার করতে হবে, সেটা বলে এসেছেন।

সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ তুলে ধরে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির বক্তব্য ও তার কথার ওপর, সংবিধান অনুযায়ী কারো প্রশ্ন তোলার অধিকার নেই। দেশে একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও শ্রদ্ধা রেখেই সংবিধান অনুসারে অগ্রসর হতে হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থা জাতিসংঘের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। তাদের যদি কিছু বক্তব্য থাকে তাহলে বলতে পারেন। এর বাইরে তারা যদি কোনো প্রশ্ন তোলেন, এটা আমরা জাতি হিসেবে খুবই বিব্রত হব এবং সাংবিধানিকভাবে বিশ্বের কোনো দেশের কোথাও এটা হয় না।

তিনি আরো বলেন, এই নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে নানান কথা বলছি। কিন্তু আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আমরা যে যত বড় নেতাই হই না কেন রাষ্ট্রের সংবিধানের অধীনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের একটি চুলচেরা বিশ্লেষণ নিয়েও কথা বলতে পারব না।

উল্লেখ্য, রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোর রাত ৪টা ২৪ মিনিটে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। গত শুক্রবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ল্যাবএইডে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে শনিবার রাত ৮টার দিকে তাকে নেওয়া হয় হাসপাতালের সিসিইউতে। এরপর থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

মৃত্যুকালে জাতীয় সংসদে আইন বিচার এবং সংসদ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতিও ছিলেন মি. সেনগুপ্ত। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মরদেহে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয় সংসদের স্পিকার।

তার নিজ দল ছাড়াও মি. সেনগুপ্তের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বিএনপি, জাতীয় পার্টি-সহ বৃহৎ সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

সারজিস আলম: দেশের সিস্টেমগুলোতে ক্যান্সার ধরেছে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, “দেশের সিস্টেমগুলোতে ক্যান্সারবিস্তারিত পড়ুন

জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক

অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন

বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণসহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক, শর্ত চার

চার শর্তে বাংলাদেশকে এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি মার্কিন ডলারবিস্তারিত পড়ুন

  • কেজরিওয়ালের পদত্যাগের পর কে হবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী? আলোচনায় আছেন যারা 
  • মহানবীর আদর্শে বৈষম্যহীন সমাজ ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন সম্ভব: ধর্ম উপদেষ্টা
  • নিউইয়র্কে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে শেহবাজ শরিফের 
  • কাশিমপুর কারাগার থেকে পালানো যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
  • ট্রাম্পকে হত্যা করতে চায়, কে এই রায়ান রুথ?
  • ঢাবির শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে হাসনাত আবদুল্লাহর ১৪ দাবি
  • মঙ্গলবার রাজধানীতে বিএনপির গণসমাবেশ 
  • আর্থিকখাতে যুবকদের অন্তর্ভুক্তি: আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেল বাংলাদেশ ব্যাংক
  • বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
  • অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র
  • মাজারের শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিসিদের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের
  • এক সপ্তাহের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হবে: চিফ প্রসিকিউটর