সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

ব্রিটিশদের সেই নীলকুঠি কালের সাক্ষী

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর লেখনিতে যে ছোট নদটি মহিমান্বিত হয়ে আছে সেই কপোতাক্ষের তীরে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ব্রিটিশদের হাতে গড়া নিদর্শন নীলকুঠি। এই নীলকুঠিতে বসে ব্রিটিশ শাসকরা যশোরের চৌগাছার বিভিন্ন এলাকাতে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

এ জনপদের মানুষের রক্ত চুষে তারা হয়েছেন লাভবান। নীল চাষ আর চিনি তৈরির কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের সময়-অসময়ে ধরে এনে এই কুঠিতে চালানো হতো নির্যাতন। ব্রিটিশ সাহেবদের ঘুরে বেড়ানো এলাকা, তাদের বহনকরা সেই বাহারি ঘোড়া রাখার স্থানগুলো এখন শুধুই স্মৃতি।

কুঠি চত্বরে বিলেতি বাবুদের দুটি কবর ছিল তাও আজ মাটির সাথে মিশে গেছে। শুধু ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে দ্বিতল ভবনটি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা বিবেচনা করে ঐতিহাসিক এই এলাকাটি সংরক্ষণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন মহল।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ভারতের বয়রা ও বাগদা সীমান্তের কোল ঘেঁষে অবস্থিত চৌগাছা। এ উপজেলাটি কেবল স্বাধীনতার তোরণদ্বার কিংবা নীল বিদ্রোহের পীঠস্থান হিসেবেই নয়- বরং ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবেও এর খ্যাতি অতীতকাল থেকেই।

ব্রিটিশ শাসনামলে তারা বর্তমান চৌগাছা পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডে নির্মাণ করেন বিশাল কুঠিবাড়ি। তারা যে শুধু শাসন করেছে তা নয়, তাদের নির্বিচারে চালানো অত্যাচারে নির্বাক ছিল মানুষ।

বৃটিশরা এই চৌগাছার বুকে নীল চাষের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করেছিল অনেকগুলো চিনি কারখানা। এরমধ্যে চৌগাছার কুঠিবাড়ি, ডাকবাংলোর পেছনে ও হাকিমপুর ইউনিয়নের তাহেরপুরের চিনিকল ছিল বিখ্যাত।

যার উৎপাদিত চিনি রপ্তানি হতো সুদূর ইংল্যান্ডে। কারখানার আশপাশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বিলেতি বাবুদের বাড়িঘর, কলমের বাগান যেখানে ম্যানেজার তার অতি আদরের পোষা কুকুর নিয়ে বিকালের হাওয়া খেতে বের হতেন। তাদের তৈরি করা কারখানায় তখন আখ থেকে কোন চিনি প্রস্তুত হতো না । খেজুর গুড় থেকেই প্রস্তুত হতো চিনি। আবহমানকাল থেকেই এ দেশের কৃষকরা খেজুর গাছ থেকে রস এবং রস থেকে গুড়, পাটালি ও চিনি প্রস্তুতের প্রক্রিয়া আয়ত্ত্ব করেছিল। তখন বাড়িতে বাড়িতে কৃষকেরা কিংবা এ দেশীয় ব্যবসায়ীরা দেশীয় পদ্ধতিতে প্রস্তুত করত চিনি। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ইংরেজ সাহেবরা এদেশে এসে চিনির কারখানা খুলে বসেন।

উনবিংশ শতাব্দীর আগে বাংলায় (উভয় বাংলা) কোন বিলেতি ব্যবসায়ী চিনি কারখানা খুলে ব্যবসায়ে নামেননি। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বর্ধমানের অন্তর্গত ধোবা নামক স্থানে ব্লেক সাহেব প্রথম ইংরেজ কুঠি স্থাপন করেন।

কিন্তু তার লোকসান হতে লাগলে, একটি কোম্পানি গঠন করে তিনি নীলকুঠি সাড়ে চার লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এবার তার প্রতিষ্ঠিত এ কোম্পানি কোটচাঁদপুর ও ত্রিমোহিনীতে কুঠি বসালো। আর ঠিক এ সময়েই কলকাতার ‘গ্রান্ড স্টোন’ ওয়াইলি এন্ড কোম্পানি চৌগাছায় এসে কারখানা খোলে। চৌগাছার এ কারখানার প্রথম ম্যনেজার ছিলেন স্মিথ সাহেব। পরে হলেন ম্যাকলিয়ড সাহেব।

ম্যাকলিয়ড সাহেব প্রথমে স্থানীয় সব খেঁজুরের রস কিনে নিয়ে গুড় ও চিনি প্রস্তুত করতেন। এরপর চৌগাছায় অনেকগুলো কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেদিন এখানে কতটি কারখানা স্থাপিত হয় তার সঠিক কোন হিসাব আজ আর পাওয়া যায় না। তবে বলা যায়, গোটা বাংলায় কোটচাঁদপুর ও কেশবপুর ছিল চিনি কারবারের সর্বপ্রধান স্থান এবং তার পরেই ছিল চৌগাছার স্থান।

কোটচাঁদপুরে শতাধিক চিনি কারখানা ছিল। এ থেকে অনুমান করা যায়, চৌগাছায়ও অনেকগুলো কারখানা স্থাপিত হয়েছিল।

১৮৬১ সালে নিউহাউস সাহেব চৌগাছার কারখানার শাখারূপে কপোতাক্ষ ও ভৈরবের সংগমস্থলে বর্তমান হাকিমপুর ইউনিয়নের তাহিরপুরে একটি চিনিকল খুলে ইউরোপীয় মতে চিনি প্রস্তুত করতে থাকেন।

কিন্তু ক্রমেই দেনা বাড়তে লাগলে ১৮৮০ সালের পর এমেট চেম্বার্স কোম্পানির নিকট কারখানাটি বিক্রি করে দেন । বালুচর নিবাসী ধনপতসিংহ এটি খরিদ করে নিয়ে তার মৃত্যুকাল (১৯০৬) পর্যন্ত চালিয়ে যান।

১৯০৯ সালে কাশিম বাজারের মহারাজ মনীন্দচন্দ্র, হাইকোর্টের জর্জ সারদা চরণ মিত্র, নাড়া-জোলের রাজা বাহাদুর ব্যক্তিরা রায় বাহাদুরের সম্পত্তি খরিদ করে নিয়ে তারপর চিনির কারবার নামক যৌথ কারবার খুলেন এবং ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপান থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়ে এসে পুনরায় কাজ আরম্ভ করেন।

বিলেতি বাবুরা যে শুধু চিনি প্রস্তুত করত এমনটি নই। তারা চৌগাছা এলাকাতে ব্যাপকভাবে নীল চাষ করতেন। নীল চাষের জন্য তারা স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি আদিবাসীদেরকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগাতেন। এসব কর্মজীবী মানুষকে তারা সময়ে-অসময়ে বর্তমান নীল কুঠিতে এনে নির্যাতন করতেন। বৃটিশদের বিদায়ের পর আগমন ঘটে পাকিস্তানিদের। তাদেরও বিদায় হয়েছে আমরা পেয়েছি স্বাধীন ভূখণ্ড। কিন্তু আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেই নীল কুঠি।

বর্তমানে এই কুঠি বাড়িতে বসবাস করেন কাজী আব্দুল বাতেন। তিনি জানান, পিতা মরহুম আব্দুল্লাহ হিল কাপি দি গভর্নিং গোস্ট বিহারি স্টেট কলকাতা থেকে সে সময় এই সম্পত্তি বন্দোবস্ত করে নেন।

১৯৪৭ সালের আগে এই সম্পত্তি ছিল ইংরেজদের কাছে। কুঠিবাড়িসহ প্রায় ২৫ বিঘা জমি সে আমলে তার বাবা বন্দোবস্ত করে নেয়।

তিনি জানান, প্রায় আড়াইশ বছর আগে এই কুঠি স্থাপিত। কিন্তু আজও এর প্রতিটি ইট অক্ষয় রয়েছে। সচেতন মহল এই স্থানটি সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?

এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন

৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন

১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন

লজ্জায় লাল হয়ে যায় পাখিও

লজ্জা পেলে শুধু মানুষের মুখই লাল হয়ে যায় তা কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন

  • দুই হাতের হৃদয়রেখা মিলে গেলে কি হয় জানেন?
  • ৩২১ থেকে ওজন কমিয়ে ৮৫!
  • রং নম্বরে প্রেম, বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি ঝলসে যাওয়া মুখ
  • পানিতে ভেসে উঠলো অলৌকিক হাত!
  • ১৫ বছরে একবার ফোটে ‘মৃত্যুর ফুল’
  • চা বিক্রেতা এখন ৩৯৯ কোটি টাকার মালিক
  • একটি মাছের বিষে মারা যেতে পারে ৩০ জন
  • মোবাইল কিনতে ছয় সপ্তাহের শিশুকে বিক্রি
  • পরকীয়ায় জড়াচ্ছে নারীরা প্রধান যে তিনটি কারণ নেপথ্যে
  • ২৪০০ কেজি খিচুড়ি রান্না হয় যেখানে দৈনিক !
  • পরীক্ষায় ফেল করলেই বিবাহ বিচ্ছেদ
  • কান্না থামছিল না তাঁরঃ ‘বাবা আমি আসছি’ বলে লাশ হলেন তরুণী