সোমবার, মে ২০, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

মানসিকতা ও কিছু প্রস্তাবনা

কিছুদিন আগে পয়লা বৈশাখের ঘটনার ওপর ফেসবুকে একটি ভিডিও দেখেছিলাম। ভিডিওটা দেখলে রীতিমতো গা ঘিন ঘিন করে ওঠে। তারপর এক ধরনের রাগ এসে ভর করে। মনে হয় যদি নিজের হাতে লাঠি দিয়ে যদি কয়েকটাকে পেটান যেত। ভিডিওতে একটি অংশে দেখেছিলাম একজন ভদ্রলোক, কোলে শিশু সন্তান, ভিড়ের মধ্যে কিছু অমানুষের কাছ থেকে স্ত্রীকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। এই অবস্থায় নিজেকে কল্পনা করে একদম শীতল হয়ে গেলাম। মনে মনে চিন্তা করলাম, ওই সময় যদি দেশে বেড়াতে যেতাম, আমি হয়তো আমার ছয় বছরের কন্যা সন্তান, তিন বছরের ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে মেলায় যেতাম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রাস্তা দিয়ে আমি সাত বছর চড়ে বেরিয়েছি। গভীর রাতে বন্ধুবান্ধবসহ হল থেকে চাঁনখার পুলে খেতে যাওয়া, টিএসসিতে অনুষ্ঠান দেখে দলবেধে রাতে হলে ফেরা খুবই কমন ঘটনা ছিল। বইমেলা, পয়লা বৈশাখ, শহীদ দিবস, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় যেন প্রাণের উৎসব। আমাদের সময় (২৫ বছর আগে) আমরা এই ধরনের কিছু ঘটনা দেখেছি ও শুনেছি। দুই একটা বখাটে ছেলে, সাধারণত অছাত্ররা এই ধরনের কাজ করত। এখন দেখছি এটি একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে। সংঘবদ্ধ দল, একটি মেয়েকে ভিড়ের মধ্যে ঘিরে ফেলছে, আলাদা করে ফেলছে তার পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে এবং দলবেঁধে গায়ে হাত দিচ্ছে। না, ঘটনা কোনো অন্ধকার গুহার মাঝে নয়, প্রকাশ্যে খোলা আকাশে, শত শত মানুষের ভিড়ে বাঙালির জনপ্রিয় অনুষ্ঠানে।

প্রকাশ্যে নারীর প্রতি এই অবমাননা করার সাহস কোথা থেকে আসে, তার কারণ বের করা খুবই সহজ। কারণ এরা জানে, এই অপরাধগুলো করে পার পাওয়া যায়। আমেরিকাতে কি এসব ঘটনা ঘটে না? অবশ্যই ঘটছে। নিউইয়র্কে এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু অপরাধীদের শনাক্ত করতে বেশি সময় লাগেনি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন আগে একটা মেয়ে বিকেলে জগিং করছিল। তা দেখে এক ছেলে দূর থেকে অশ্লীল ভঙ্গি করল। মেয়েটি পুলিশে রিপোর্ট করল। ছেলেটিকে ধরতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশের একদিনও সময় লাগেনি। আইন যদি সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োগ না করা হয়, এই ধরনের অপরাধ কখনই দমন করা যাবে না।

হাজার হাজার মানুষের মধ্যে চার পাঁচটা মানুষ ক্রিমিনাল থাকবে। এদের থেকে সাধারণ নাগরিকদের রক্ষা করার দায়িত্ব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার। এখন শুনছি বলা হচ্ছে কোনো মেয়ে ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট করেনি। এই ধরনের উক্তি অত্যন্ত ভয়ংকর। এই ঘটনাকে হালকাভাবে নিলে এর পরিণতি কখনই শুভ হবে না। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেড-রেপের (ভিকটিমকে ওষুধের মাধ্যমে অচেতন করে রেপ করা) অনেক ঘটনা ঘটে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিকটিম অপরাধীকে চিনলেও এগিয়ে আসে না। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে, ভিকটিম কখনই পুলিশে রিপোর্ট করেনি। পুলিশ হিন্ট পেয়ে, ঘটনার সত্যতা যাচাই করে, এমনকি বছর খানেক পরে ভিকটিমের সঙ্গে যোগাযোগ করে চার্জশিট দিয়েছে।

কিছুদিন আগে আমেরিকাতে একটি সমুদ্র সৈকতে একটি মেয়েকে প্রকাশ্যে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। মেয়েটি তখন নেশাগ্রস্ত ছিল। নির্যাতনের পরে মেয়েটি নিজে এগিয়ে আসেনি, কিন্তু মাস খানেক পর পুলিশ ঠিকই অপরাধীকে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণত ভিকটিমের নাম গোপন রাখা হয়।

আমেরিকার মতো উন্নত দেশে এখনো অনেক মেয়ে প্রকাশ্যে এই ধরনের কেসগুলোতে এগিয়ে আসে না। আর আমাদের মতো রক্ষণশীল সমাজে মেয়েরা এগিয়ে আসবে, এটি আশা করা বোকামি।
এখন এমন অভিযোগও শুনছি, মেয়েরা কেন উগ্র পোশাক পরছে। শিক্ষিত মানুষের কাছ থেকে এই ধরনের কমেন্ট পেয়ে এখন মনে হচ্ছে, আমাদের শিক্ষার পুরো সিস্টেমের মধ্যে একটা গলদ আছে। ধন্যবাদ জানাচ্ছি সেই ছেলেটিকে, যে প্রতিবাদ করেছিল এবং দু-একটিকে পাকড়াও করে পুলিশে দিয়েছিল। এই ধরনের পরিস্থিতিতে একা প্রতিবাদ করতে গেলে, এরা মারধর করে, উল্টো প্রতিবাদকারীর ওপরই দোষ চাপিয়ে দেয়।

আমাদের সময়ে এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের একটি রাজনৈতিক মিছিলে একটি দলের ছেলেরা আক্রমণ করেছিল। এদের কাছ থেকে যে ছেলেটি মেয়েদের রক্ষা করতে গিয়েছিল, প্রতিপক্ষ তার মেয়েগুলোকে রক্ষা করার ছবি সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাপিয়ে দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল, সেইই অপরাধী।

সবচেয়ে দুঃখ পেয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের একাত্তর টিভির সঙ্গে নিউজ ক্লিপটা দেখে। বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক হিসেবে ও আমেরিকাতে বর্তমানে শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে জড়িত হওয়ার কারণে, আমি এই পেশার মানুষকে অত্যন্ত আপনজন মনে করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর পুলিশ নন, তার এত লোক বল নেই, এটা সত্যি, কিন্তু ঘটনাগুলো প্রতিহত করার মতো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না, এটাও সত্যি। হয়তো তিনি এই ধরনের পরিস্থিতি হবে সেটা ভাবতেও পারেননি। এটা স্বীকার করে নেওয়ার মধ্যে কোনো দোষের কিছু ছিল না।

উন্নত বিশ্বের সব বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পুলিশ বাহিনী রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন সময় এসেছে এটা তৈরি করার। এই ধরনের বড় অনুষ্ঠানে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ বাহিনী থাকলে এই মাত্রার অপরাধ দমন খুব সহজ হবে। সবচেয়ে আশাবাদী হয়েছি দেখে নারীরা যেভাবে ফুঁসে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়াগুলো সরব হয়েছে। অপরাধীদের ছবি প্রকাশিত হচ্ছে। যা এই নর্দমার কীটগুলোকে ধরতে সাহায্য করবে।

তবে সাবধান হতে হবে যাতে নিরপরাধ মানুষ ফেঁসে না যায়। সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে ভুয়া ছবির মাধ্যমে মানুষকে নিগৃহীত করা খুবই সহজ। ফেসবুকে বাংলাদেশিদের পরিচালিত এই ধরনের অসংখ্য গ্রুপ রয়েছে। সবশেষে বলব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে তাঁর প্রাণের মধ্যে ধারণ করে রাখে। আমার প্রাণের এই ক্যাম্পাস থেকে নর্দমার কীট ও অন্ধকারের মানুষদের খবর শুনতে চাই না, শুনতে চাই আলোকিত মানুষদের কথা, নবীনদের উচ্ছ্বাস, শিক্ষা ও গবেষণার অগ্রগতির খবর।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

যে কারনে যুক্তরাজ্য বিএনপির সম্মেলন স্থগিত

বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে মাত্র এক সপ্তাহের নোটিশে যুক্তরাজ্য বিএনপিরবিস্তারিত পড়ুন

ইউরোপ থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে বাড়ছে চাপ !

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যভুক্ত বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে থাকা বাংলাদেশিদের ফিরিয়েবিস্তারিত পড়ুন

বাংলাদেশ থেকে তিন হাজার শ্রমিক নেবে সৌদি আরব

চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পেশার প্রায় ৩ হাজারবিস্তারিত পড়ুন

  • প্রবাসী গৃহকর্মীদের জন্য নীতিমালা সহজ করল সৌদি আরব
  • বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠানো হচ্ছে বাংলাদেশিদের!
  • সবচেয়ে কম খরচে কম সময়ে পান কানাডার নাগরিকত্ব
  • মধ্যপ্রাচ্যে নানামূখী প্রতিকূলতার মুখোমুখি বাংলাদেশ
  • মালদ্বীপে কী করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা?
  • কানাডায় সাংবাদিক; অভিনয়, মডেল ও সংগীত শিল্পী; প্রযোজক, পরিচালক ও খেলোয়াড়দের দারুন সুযোগ!
  • তিন মাস শ্রমিকদের দুপুরে কাজ করাবে না সৌদি সরকার
  • সিনেট কমিটি গুরুত্ব দিচ্ছে জয়ের অভিযোগকে
  • পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী ভিসা মাত্র ১২ মাসে
  • প্রবাসীদের ভিসা সংক্রান্ত তথ্য মিলবে অনলাইনে
  • সৌদিতে শ্রম বেচাকেনার ফাঁদে ওরা ৩১১ বাংলাদেশি
  • নতুন ও সহজে নিয়মে AUSTRALIA মাইগ্রেশন এর বিপুল সুযোগ