শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

লজ্জার বাঁধ ভেঙে সুস্বাস্থ্যের হাসি ফোটাচ্ছে ওরা

স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল হলেও বাংলাদেশের গ্রামীণ কিশোরীদের অধিকাংশেরই বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ের শুরুটা হয় নিরানন্দে। এরপর ধীরে ধীরে নারী হয়ে ওঠার সকল পর্যায়ে নিরানন্দই নিত্য সঙ্গী হয় তাদের। প্রাকৃতিক নিয়মে নারীর ঋতুস্রাবের সময়টা প্রচলিত নিয়মে এখনো লাজ-লজ্জার চার দেয়ালেবন্দী।

তাইতো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার এই সময়টাতে তাদেরকে মা-খালাদের দেয়া কাপড়ের ওপরই নির্ভর করতে হয়। আবার বাজারে প্রচলিত নামী ব্র্যান্ডের তুলার প্যাড কেনার সামর্থ গ্রামের কিশোরীদের নেই। আর সামর্থ থাকলেও হাতের কাছে স্বাস্থ্যকর প্যাড নেই তাদের। প্যাড যদি থাকেও তবুও নিজে কেনার সুঅভ্যাসটি এখনো গ্রামীণ সমাজে গড়ে ওঠেনি।

আজকের নারীর এই সনাতনী অচলায়তন ভাঙতে তাই প্রয়োজন ছিলো একটি সামাজিক উদ্যোগের। এমনই একটি উদ্যোগ নেন ঢাকা শহরের মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে মারজিয়া প্রভা ও তার বন্ধুরা।

ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের কথা হয় মারজিয়া প্রভার সঙ্গে। নিজের কথায় তুলে ধরেন ‘ডোনেট এ প্যাড ফর হাইজিন বাংলাদেশ’ নামের উদ্যোগের শুরুটা, মাঠ পর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞতা, কিশোরী-নারীদের হাসিমুখের ভাগীদার হওয়া এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার আদ্যোপান্ত।

যেভাবে শুরু পথচলা
২০১৫ এর শেষের দিকে ভারতের কেরালাতে সবরিমালা মন্দিরের দেখভাল ও নীতি নির্ধারণের দায়িত্বে পাওয়া গোপালকৃষ্ণন বলেছেন “ছয় থেকে ষাট বছর পর্যন্ত মেয়েদেরকে ওই মন্দিরে ঢোকা নিষেধ। একজন মেয়ে যে ঋতুমতী নন, এবং তিনি যে মিথ্যে বলে মন্দিরে ঢুকে দেবতা ও মন্দিরকে অপবিত্র করছেন না, তার নিশ্চয়তা কী ? তাই এই নির্দেশ দেন তিনি। জবাবে সারা ভারতবর্ষে মেয়েরা “হ্যাপি টু ব্লিড” আন্দোলন শুরু করে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে নিজেদের প্রথম মাসিকের বর্ণনা দেওয়া শুরু করে মেয়েরা, প্রোফাইল ছবি বদল করে নিজেদেরকে আন্দোলনের সাথে সংযুক্ত করেন।

এই আন্দোলন থেকেই অনুপ্রাণিত হন প্রভারা। শুরু করেন গ্রামে গিয়ে প্যাড বিতরণ।

উদ্যোগের শুরুটা সম্পর্কে তিনি বলেন, “বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে হুট করে একটা ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পেইনে উপস্থিত থাকার নিমন্ত্রণ পাই। আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে। আমাকে এমনি বেড়াতে যাওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। কিন্তু ওখানে গিয়ে মাথায় হাত। প্রায় ৫০০ নারীর মধ্যে ৮০% এই ব্যবহার করেন না প্যাড। ৪০% এর মত জানেই না প্যাড কিভাবে ব্যবহার করে। এরা নোংরা কাপড়, পাতা, কাপড়ের মধ্যে বালি ভরে ব্যবহার করে। অনেকে কিছুই ব্যবহার করে না। রক্ত পেটিকোটে ভরলে পুকুরে গিয়ে অনেকক্ষণ ডুব দিয়ে আসে। এভাবেই মাসিকের তিন দিন যায় তাদের। আমি শুনছি আর হতভম্ব হচ্ছি। কাপড় ব্যবহার করে কড়া রোদে শুকালেও কথা ছিল! লজ্জায় তারা বাইরেও নেড়ে দেয় না। নোংরা ভেজা সেই কাপড় পরেই কাজ করে। আর তাতেই শরীরে ইনফেকশন বাসা বাঁধে। ১৩ বছর বয়সী মেয়েরা ওখানে মা হচ্ছে। প্যাডের ব্যবহার জানছে না তারা। এক প্রজন্ম তো অস্বাস্থ্যকর মাসিকের মধ্যে দিয়ে গেলো। এখন আরেক প্রজন্মও যাবে”।

donate-a-pad-2

এই চিন্তা নিয়ে ঢাকায় ফিরে শুরু করলেন ‘Donate A Pad For Hygiene Bangladesh’ প্রজেক্টটি। ৩০-৪০ বছর বয়সী নারীদের প্যাড ব্যবহারে অভ্যস্ত করানো কঠিন। তাই টার্গেট স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্যই কাজ শুরু করে প্রভা এবং তার দল। এ দলে মেয়ে ছাড়া আছে পুরুষও। সাকির মাটি,তারেক এই স্বপ্ন দেখা মানুষগুলো হাত মিলিয়েছে প্রভার সঙ্গে।

donate-a-pad-5

মেয়েদের মাল্টিমিডিয়া সিস্টেম শর্ট ফিল্ম, ডকু, কমিক্সের মাধ্যমে প্যাড ব্যবহারের নিয়ম এবং কেন প্যাড ব্যবহার করা উচিত তা জানানোর ব্যবস্থা করেছে ওরা।

অভিজ্ঞতায় মাঠ পর্যায়:
পাইলট প্রোজেক্টের স্কুল হিসেবে বেছে নেয়া হয় নোয়াখালীর জমিদারহাট বি এন উচ্চবিদ্যালয়কে। কয়েকমাস ধরে এই স্কুলে Pad service চলছে। প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ মেয়ের কাছে পৌঁছে গেছে স্বাস্থ্যকর প্যাড। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক মেয়েদের হাতে পাখি কমিকস (সচিত্র বই) তুলে দেয়া হয়েছে। এই পাখি কমিকের মাধ্যমে প্যাড ব্যবহারের নিয়ম ও সুবিধা জানছে গ্রামীণ নারীরা। দেশখ্যাত অভিনেত্রী শম্পা রেজা, সারাহ যাকের এবং মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী এই প্রোজেক্টের জন্য বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেটা দিয়ে একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়েছে।

donate-a-pad-4

কিশোরী-নারীদের প্রতিক্রিয়া:
সেমিনার করার আগে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পিং করা হয়েছিলো। ওখানেই অনেক স্কুল ছাত্রীদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিলো জানিয়ে প্রভা বলেন, ‘একা একা গল্প করে, বিভিন্ন মোটিভ করে তাদের অনেকের লজ্জা ভাঙ্গিয়েছিলাম। পরেরদিন তারাই বান্ধবীসহ এক বিশাল দল আনে। সেমিনারের আগে ওই বিশাল দলের সঙ্গে খোলামেলা কথা বললে তারা ভীষণ উচ্ছসিত হয় এবং আড়ষ্টতা ভাঙ্গে তাদের।’

“তাই সেমিনারের দিন পুরো হলরুম ভরে যায় স্কুল শিক্ষার্থীদের। অনেকের মা ও এসে পড়েন। ঢাকার স্কুলে এখনো মেয়েরে যে লজ্জা নিয়ে থাকে জমিদারহাটের মত গ্রাম্য এলাকায় মেয়েরা এক ফুঁৎকারে সমস্ত লজ্জা উড়িয়ে দিয়েছে।”

ভালো কাজে আসে বাধা
গ্রামের নারীদের সুস্বাস্থ্যের উদ্যোগের শুরুটা সহজ ছিলো না জানিয়ে তিনি বলেন, “বাঁধা প্রথমে পেয়েছিলাম ফেসবুক ইভেন্ট খুলে। এই প্রোজেক্ট নিয়ে মানুষের প্রচুর নেতিবাচক কথা শুনেছিলাম। বিভিন্ন জায়গায় আমাকে ব্যক্তিগতভাবে নোংরা আক্রমণ করতেও অনেকে ছাড়েননি। শুধু ছেলে নয়, মেয়েরাও আমাকে কথা বলেছে এই ইস্যু নিয়ে জোরালোভাবে কাজ করার জন্য। ধীরে ধীরে এই অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে।”

তবে বাধার পরও এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে প্রভা বলেন, “এই মুহূর্তে যেভাবে কাজ চালাচ্ছি সেভাবে চালাতে পারলে আমরা নোয়াখালীর সব স্কুল আগামী ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে কভার করে ফেলতে পারব। অর্থ সংস্থান হলে এই কাজ আরও দ্রুত হবে। যে যে কাজ করার কথা বলেছি, তা যদি ঠিকঠাকভাবে করতে পারি তাহলে প্রচেষ্টা ছড়িয়ে যাবে আপনিই। তাই ইচ্ছা এই কাজগুলো ঠিকঠাক ভাবে করা।”

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

২৪ ঘণ্টা না যেতেই ফের কমলো স্বর্ণের দাম

একদিন না যেতেই আবারও স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারিবিস্তারিত পড়ুন

গরমে চুলের যত্ন নেবেন কীভাবে?

গরমে, ঘামে চুল তেলতেলে হয়ে যায়। তাই মাথার ত্বক পরিষ্কারবিস্তারিত পড়ুন

একলাফে সোনার দাম ভ‌রিতে কমলো ৩১৩৮ টাকা

দেশের বাজারে এক লাফে ৩১৩৮ টাকা কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনবিস্তারিত পড়ুন

  • ত্বকের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
  • দেশের বাজারে কমলো স্বর্ণের দাম
  • কঠিন রোগে ভুগছেন হিনা খান, চাইলেন ভক্তদের সাহায্য
  • মিস ওয়ার্ল্ড-২০২৪ জিতলেন ক্রিস্টিনা পিসকোভা
  • দুই নারী আম্পায়ারকে নিয়োগ দিচ্ছে বিসিবি
  • তিশা থেকে জয়া আহসান, কপালে বাঁকা টিপের সেলফির রহস্য কী?
  • পরোক্ষ ধূমপান থে‌কে নারী‌দের সুরক্ষা চায় ‘নারী মৈত্রী’
  • মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার ফাইনালে বাংলাদেশের নীলা
  • মন্ত্রণালয়ের নামে ‘মহিলা’ বদলে দেয়া হচ্ছে ‘নারী’
  • তরুণীরা আবেদনময়ী সেলফি তোলেন কেন?
  • যেভাবে প্রতিবন্ধকতা জয় করছেন কানিজ ফাতেমা
  • ‘বুড়ার কাছ থেকে না নিলে মারা যাব’