ঘর পালানো এক শিশুর জন্য পুলিশের আন্তরিকতা
বয়স নয় কিংবা দশ বছর। এত অল্প বয়সে সেকি রাগ তার! পড়াশোনার জন্য মা একটু বেশি চাপাচাপি করায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বাড়ি থেকে সোজা ঢাকায়। বাসযোগে বুধবার ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পৌঁছায় মেহেদী নামের শিশুটি।
এরপর অথৈ সাগরে হাবুডুবু অবস্থা তার। অজানা শহরে ছোট্ট শিশুটি কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে- দিশেহারা হয়ে এদিক-ওদিক তাকায়। এ সময় বিপদের বন্ধু হয়ে আসেন শামীম হাসান নামের এক তরুণ।
স্বর্ণের দোকানে কাজ করা এই মানুষটিও প্রথমে ভেবে পাচ্ছিলেন না শিশুটির জন্য কী করবেন। হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি এল- শিশুটিকে নিয়ে পুলিশের কাছে যাওয়া যায়। চলে গেলেন ডেমরা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলামের কাছে।
তরুণ পুলিশ কর্মকর্তা সব শুনে প্রথমে শিশুটির খাবারের ব্যবস্থা করলেন। এরপর তার সহকর্মীদের নিয়ে শিশুটির পরিবারের খোঁজ নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অবশেষে সফলও হলেন তারা।
সে কথা সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলামের কাছ থেকেই শোনা যাক। বৃহস্পতিবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মেহেদীর সঙ্গে কয়েকটি ছবি দিয়ে ইফতেখায়রুল ইসলাম লেখেন, ‘ইদানীংকালে আমাদের এলাকায় হারিয়ে যাওয়া বাচ্চাগুলো সবাই একটি নির্দিষ্ট এলাকারই হচ্ছে! গতকাল হারিয়ে যাওয়া মেহেদী আজ ফিরবে পরিবারের কাছে ইনশাআল্লাহ…
‘অ্যান্ড বাই দ্য ওয়ে ক্লাস থ্রির ফোর্থ বয় মেহেদী কিন্তু বড় হয়ে আমাদের মত পুলিশ অফিসার হতে চায়… দিন আসলেই বদলাচ্ছে….
‘বললাম কেন হবে অফিসার? বলে আপনাদের মত মানুষের উপকার করবো 🙂
মেহেদীরা ছড়িয়ে যাক পুরো দেশজুড়ে…।’
শিশুটি তার কাছে আসা এবং ওর যত্ন-আত্মি ও বাবা-মায়ের খোঁজ করার বিষয়ে ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, ‘শামীম হাসান নামে একজন লোক শিশুটিকে আমার অফিসে নিয়ে আসেন। পরে অনেক চেষ্টা করেও তার কাছ থেকে কোনো তথ্য পাচ্ছিলাম না। একপর্যায়ে শিশুটি জানায় তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়।
‘কিন্তু শিশুটিকে কোনোভাবেই কোনো কিছু খাওয়াতে না পেরে চিন্তায় পড়ে যাই। তবে নারী সহকর্মী এসআই নুর জাহান না থাকলে হয়তো খাওয়ানোই যেত না। সে শিশুটিকে খুব যত্ন করে ভাত-মাছ খাওয়াল।
‘পরে সহকর্মী এসআই বিল্লাল হোসাইনের (জনি) সহযোগিতায় শুরু করি মেহেদীর ঠিকানা ও স্বজনদের খোঁজার। পরে মেহেদীর সব বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে বিল্লাল কলাপাড়া থানায় যোগাযোগ করে। একপর্যায়ে শিশুটির দাদার ফোন নম্বর পাই। পরে দাদার সঙ্গে কথা বলে মেহেদী আমাদের কাছে পরিচয় নিশ্চিত করার পর ওর এক মামা সকালে আমাদের কাছে আসেন। তিনি কামরাঙ্গীরচর থাকেন। অন্যদিকে মেহেদীর বাবা খবর পেয়েই সড়কপথে রওনা হয়েছেন। জানতে পেরেছি তিনি ফরিদপুর চলেও আসছেন। শিশুটির মামা এলেও তার কাছে ওকে দিচ্ছি না। আশা করি সন্ধ্যার মধ্যে মেহেদীকে তার বাবার হাতে তুলে দিতে পারব।’
বাড়ি পালানো শিশুটিকে ফিরিয়ে দিতে পেরে নিজের অনুভুতি জানাতে গিয়ে ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, ‘বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে এবং স্বজনদের কাছে শিশুটিকে তুলে দিতে পেরে সত্যি ভালো লাগছে। সহকর্মী ও যারা এই কাজে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ, ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
বান্দরবানের রুমায় বন্দুকযুদ্ধে সেনাবাহিনীর সঙ্গে তিনজন কেএনএফের সদস্য নিহত হয়েছেন।বিস্তারিত পড়ুন
চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ৫
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রিলাক্স পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশেরবিস্তারিত পড়ুন
৪ হাজার কোটির খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রস্তুত
ট্রেন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত নতুনবিস্তারিত পড়ুন