সোমবার, মে ২০, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

‘পটল কুমার গানওয়ালা’-র ‘তুলি’ চরিত্রটি ভারতের একমাত্র শিশু খলনায়ক?

অনেকে বলছেন, একজন শিশুকে দিয়ে ‘অ্যান্টি-হিরো’ চরিত্রে অভিনয় করিয়ে বাচ্চাদের কোমল মনে হিংসা ও স্বার্থপরতা ‘ইনজেক্ট’ এবং ‘ইমপোজ’ করা হচ্ছে। ঠিক এইখানেই মনে পড়ে যায় হ্যারি পটার সিরিজের কথা।

সম্প্রতি ‘পটল কুমার গানওয়ালা’ ধারাবাহিকটি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই ধারাবাহিকে শিশুদের উপরে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সকে প্রজেক্ট করা হচ্ছে বলে অনেকেই আপত্তি তুলেছেন। কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘পটল’-এর বিরুদ্ধে ক্রমশই যেন ‘খলনায়িকা’ হয়ে উঠছে আর এক খুদে চরিত্র ‘তুলি’।

বেশ কিছুদিন আগে ‘পটল…’ এবং ‘ভুতু’, এই দু’টি ধারাবাহিকই বাংলাদেশে ব্যান করা হতে পারে বলে শোনা গিয়েছিল। এদেশের দর্শকদের একাংশের ‘ভুতু’ নিয়ে খুব একটা আপত্তি নেই কিন্তু ‘পটল…’ নিয়ে রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, একজন শিশুর আর একজন শিশুর প্রতি এমন আচরণ স্বাভাবিক নয়। শিশুরা সরলমতি এবং তাদের মধ্যে এই ধরনের ‘নেতিবাচক’ হাবভাব বাস্তবসম্মত নয় বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন বহু মানুষ।

অনেকে আবার বলছেন, একজন শিশুকে দিয়ে ‘অ্যান্টি-হিরো’ চরিত্রে অভিনয় করিয়ে বাচ্চাদের কোমল মনে হিংসা ও স্বার্থপরতা ‘ইনজেক্ট’ এবং ‘ইমপোজ’ করা হচ্ছে। ঠিক এইখানেই মনে পড়ে যায় হ্যারি পটার সিরিজের কথা। হ্যারি, হারামায়ানি এবং রন যখন জাদুস্কুল হগওয়ার্টস-এর ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হয়, তখন তারা প্রত্যেকেই শিশু। বুক সিরিজটি না পড়লেও ফিল্ম সিরিজটি প্রায় সবাই দেখেছেন।

‘ড্রেকো ম্যালফয়’-কে মনে পড়ে? সে কিন্তু একদম পুঁচকে বয়স থেকেই হ্যারি-বিদ্বেষী কুচক্রী। অথচ কী আশ্চর্য, ‘হ্যারি পটার’ নিয়ে অন্যান্য নানা সমালোচনা হলেও, ‘শিশুদের মধ্যে হিংসার প্রচার করা হচ্ছে’-সুলভ কোনও কথাবার্তা ওঠেনি। শুধু ম্যালফয় কেন, হ্যারির কাজিন ‘ডাডলে ডার্সলে’ কি কম কিছু? ম্যালফয় নাহয় জাদুজগতের অংশ, কিন্তু ডাডলে তো মাগ্‌ল অর্থাৎ আমার-আপনার মতো সাধারণ মানুষ।

সাহিত্য-চলচ্চিত্র-ফ্যান্টাসি জগত থেকে বেরিয়ে এসে এবার দেখে নেওয়া যাক বাস্তবে এদেশে কী ঘটছে। ঠিক এক বছর আগে, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ‘স্কুল বুলিং’-এর শিকার হয়ে আত্মহত্যা করে চেন্নাইয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী কার্তিকা। সেই সময়েই সামনে আসে একটি মারাত্মক পরিসংখ্যান। ‘আইএমআরবি এবং ‘পেরেন্ট সার্কল’-এর যৌথ উদ্যোগে স্কুল বুলিং নিয়ে একটি সর্বভারতীয় সমীক্ষা করা হয়। সেই সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, এদেশের স্কুলগুলিতে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন ছাত্র/ছাত্রী বুলিংয়ের শিকার হয়।

ডাডলে কিন্তু হ্যারির প্রতি নিষ্ঠুরতার পাঠ নিয়েছিল তার বাবা-মায়ের কাছ থেকেই

‘পটল কুমার গানওয়ালা’-তে ‘তুলি’ চরিত্রটি অবশ্যই একটি ‘বুলি’। শুধু এখানে বুলিংটা স্কুলে না ঘটে, ঘটছে বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে এবং সেখানে সে এই গোটা বিষয়টিতে প্রশ্রয় পাচ্ছে তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের থেকে।  শিশুদের মধ্যে একে-অপরের প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ সমাজে নতুন কিছু নয় এবং বহু শিশু-কাউন্সেলরদের মত, এই আচরণগুলি শিশুরা তাদের পরিবার এবং কাছের মানুষদের থেকেই শেখে। খুব স্বাভাবিকভাবেই, যে পরিবেশে একটি শিশু বড় হয় সেই পরিবেশই নির্ধারণ করে দেয় তার মনের গঠন কেমন হবে। ভারতবর্ষে এই মুহূর্তে এমন একটি স্কুলও নেই, যেখানে ‘বুলিং’ হয় না। শুধু এদেশ কেন, বুলিং আন্তর্জাতিক স্তরেও একটি বিরাট সমস্যা।

তবে কেন হঠাৎ বাংলার মানুষের সমস্ত জনরোষ পুঞ্জীভূত হচ্ছে ‘তুলি’ চরিত্রটির বিরুদ্ধে? কেন একটি বিশেষ সিরিয়ালের টেলিকাস্ট নিয়েই সকলের আপত্তি, সামগ্রিকভাবে সমাজে ‘বুলিং’-এর অস্তিত্ব নিয়ে কেন প্রশ্ন উঠছে না? এই সিরিয়ালটির আগে কি শিশুদের মধ্যে ‘বুলিং’-এর অস্তিত্ব ছিল না নাকি এই সিরিয়ালটি টেলিকাস্ট না হলে সমাজ থেকে ‘বুলিং’ কালচার অবলুপ্ত হতো? নাকি স্কুলে অন্য কারও টিফিন কেড়ে খেওয়া নেওয়া, ক্লাসের মধ্যে অপেক্ষাকৃত নিম্নবিত্ত পরিবারের থেকে আসা ছাত্র বা ছাত্রীকে একঘরে করে দেওয়া, ইচ্ছাকৃতভাবে পরিকল্পনা করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সামনে কাউকে অপদস্থ করার মতো প্র্যাক্টিসগুলি এ বঙ্গে কোনওদিন ছিল না, নেই বা অবাস্তব?

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘মেজদিদি’ উপন্যাসের কথা। ‘মেজদিদি’ হেমাঙ্গিনীর বড় জা কাদম্বিনীর সৎভাই, নাবালক ‘কেষ্ট’ যখন আশ্রয় নেয় সংসারে, তখন হেমাঙ্গিনী দেখে কীভাবে দিনের পর দিন আধপেটা খেয়ে মুখ বুজে পড়ে রয়েছে সে। তাকে আপন করে নেয় হেমাঙ্গিনী। মেজগিন্নির এই স্নেহ কিন্তু সইত না কাদম্বিনী এবং তার ছেলে পাঁচুগোপালেরও। মনে করা যাক উপন্যাসের সেই লাইনটি… ‘… বড়গিন্নির পশ্চাতে পাঁচুগোপাল কেষ্টর কান ধরিয়া হিড়হিড় করিয়া টানিয়া আনিতেছে…’। এর পরের বাদানুবাদেও পাঁচুগোপাল কেষ্টকে চোর প্রতিপন্ন করতে উদ্যত হয়।

রবীন্দ্র সাহিত্যের মতোই বাঙালির শিরা-ধমনীতে বয় শরৎ সাহিত্য। উপরের উদাহরণটিকে কী বলবেন? শরৎচন্দ্র তাঁর উপন্যাসের মাধ্যমে শিশুদের হিংস্র হতে শিখিয়েছেন এবং অবিলম্বে শরৎ সাহিত্য পড়া বন্ধ করা উচিত? ‘পটল কুমার গানওয়ালা’ কোনও সমাজ-সংস্কারক ধারাবাহিক নয় অবশ্যই এবং সেখানে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের রেফারেন্স প্রবলমাত্রায় রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন একটাই, ধারাবাহিকটির বাইরের বাস্তব পৃথিবী কি ‘বুলিং’-বর্জিত নাকি ‘তুলি’ চরিত্রটি ভারতের একমাত্র ‘শিশু’ খলনায়ক?

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

এবার পরিবারের পছন্দে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন শাকিব খান

চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর সঙ্গে অনেক আগেই দাম্পত্যবিস্তারিত পড়ুন

বুবলী আগে থেকেই বিবাহিত, সেখানে একটি মেয়েও আছে: সুরুজ বাঙালি

ব্যক্তিজীবন নিয়ে কথা বলে বারবার শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছেন আলোচিতবিস্তারিত পড়ুন

এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা

এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে কয়েকজন চলচ্চিত্র শিল্পী। সেখানকারবিস্তারিত পড়ুন

  • অভিনেতা ওয়ালিউল হক রুমি মারা গেছেন
  • এক রোমাঞ্চকর অসমাপ্ত ভ্রমণ গল্প
  • পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন
  • শাকিব ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পুরুষের জায়গা নেই: বুবলী
  • সিনেমা মুক্তি দিতে হল না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নায়ক
  • বিশাখাপত্তনমে কয়েকদিন
  • সংগীত শিল্পী খালিদ আর নেই
  • কঠিন রোগে ভুগছেন হিনা খান, চাইলেন ভক্তদের সাহায্য
  • মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে সমাহিত হবেন সাদি মহম্মদ
  • কে কোন ক্যাটাগরিতে জিতলেন অস্কার?
  • রাজকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য পরীমনির
  • মিস ওয়ার্ল্ড-২০২৪ জিতলেন ক্রিস্টিনা পিসকোভা