মাত্র ২০ টাকার জন্য ৮ম শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যা
মাত্র ২০ টাকার জন্য শিক্ষকদের অপমান, অপদস্ত সহ্য করতে না পেরে সাথী অক্তার (১৬) নামের ৮ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ জনতা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয়ে সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
স্কুলছাত্রী সাথীর মা চায়না বেগম জানান, সদর উপজেলার ৮নং বাগাদী ইউনিয়নের শেখ বাড়িতে তারা থাকেন। তার মেয়ে সাথী চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে পড়তো। স্কুলের অফিস সহকারী ফাতেমা বেগম ও সহকারী শিক্ষক শংকর জেএসসির মডেল টেস্ট পরীক্ষার ফি বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে ২৮০ টাকা করে ধার্য করেন।
গত রোববার সাথী আক্তার স্কুলে গিয়ে শিক্ষক ফাতেমা বেগমের কাছে ২৬০ টাকা জমা দেয়। ২০ টাকা কম দেয়ায় ওই দিন সাথীকে বিদ্যালয়ের বাইরে রোদে দাঁড় করিয়ে শাস্তি দেন ওই শিক্ষক। পরদিন সোমবার সকালে সাথী আক্তার পরীক্ষা দেয়ার জন্য স্কুলে গেলে তাকে ক্লাস থেকে বের করে দেন শিক্ষকরা।
পরে সে বাড়ি এসে টাকার জন্য মায়ের কাছে কান্নাকাটি করে। তার মা চায়না বেগম টাকা জোগাড় করতে অন্য বাড়িতে গেলে এই সুযোগে সাথী রাগে-ক্ষোভে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিচারের দাবিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়। পরে বিষয়টি চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আত্মহত্যার ঘটনাটি আমরা শুনেছি এবং তাকে দেখে এসেছি। কথা শেষ করার আগেই বিক্ষুব্ধ জনতা বিদ্যালয়ে হামলা করলে তিনি বক্তব্য শেষ না করে পালিয়ে যান।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাতেমা বেগম ও শংকরের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাদের পাওয়া যায়নি। তার আগেই এলাকাবাসীর মারমুখী অবস্থা দেখে তারা পালিয়ে যান।
এদিকে এলাকাবাসী ওই বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে ধরে জানান, এর আগেও এ স্কুলের শিক্ষকদের এমন নিষ্ঠুর আচরণের কারণে আরো ক’জন ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে এবং বিষপানে আত্মহত্যা করেছে।
১৫ দিন আগেও পরীক্ষার ফি’র টাকার জন্য নানুপুর গ্রামের একছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এছাড়াও গত বছর একই বিষয় নিয়ে শিক্ষকদের অপমানে অভিমান করে দু’ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এলাকাবাসী আরো জানায়, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে যদি কোনো শিক্ষার্থী প্রাইভেট কিংবা কোচিং না করে তাহলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়। এরকম আরো অনেক অনিয়মের কথা এলাকাবাসী সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।
বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য চাঁদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা উদয়ন দেওয়ান জানান, বিষয়টি খুবই দু:খজনক। এ ব্যাপারে তদন্ত করে দেখা হবে।
ঘটনার সত্যসা নিশ্চিত করে সদর মডেল থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার মনির আহমেদ বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভয়ংকর অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে মিল্টনের বিরুদ্ধে: ডিবি প্রধান
গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যানবিস্তারিত পড়ুন
দেশের দুই জেলায় ঝড়ের পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে , দেশের দুই জেলার ওপর দিয়ে সর্বোচ্চবিস্তারিত পড়ুন
হবিগঞ্জে ট্রাক-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে ৫ জন নিহত
হবিগঞ্জের মাধবপুরের হরিতলা বাদশা গেইট এলাকায় ট্রাক ও প্রাইভেটকার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন