শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

রিশা হত্যাকাণ্ড: এভাবে আর কতো হারাবো আমরা

বাংলাদেশ উন্নয়নের গতিতে হেঁটে নয়, দৌড়ে চলছে। নারীর সফলতা, শিক্ষা, উন্নয়নে বিভিন্ন ক্ষেত্রে শুভ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছি আমরা। আমরা আশাবাদী, আনন্দিত। এদেশের আনাচে কানাচে, শহর থেকে শহরে, রাজধানীর অলি গলিতে নারী আধুনিকতার ছোঁয়ায় আচ্ছন্ন। নারীর নিজের উদ্যোম ও আগ্রহ পরিবার ও সামাজিক জীবনকে করেছে গতিশীল। আমরা পত্রিকা খুললেই নারীর কাজে, প্রতিভায়, চেতনার অগ্রগতি দেখি। চোখের কোনে আনন্দাশ্রু ভাসে। দুদিন আগেও পত্রিকায় দেখলাম ৯টি জেলার জেলা প্রশাসক নারী।

আবার পত্রিকার পাতা খুললেই দেশের কোথাও না কোথাও নারী নির্যাতনের দৃশ্য দেখি। তখন বুকের মধ্যে হুহু করে ওঠে। গতকালও দেখেছি পুলিশ ও কিছু বহিরাগত মিলে আন্দোলনরত ছাত্রীদের পেটাচ্ছে।

কিছুদিন আগেও দেখেছি আন্দোলনরত এক নারীর কন্ঠে অগ্নি ঝরা বুলি পুলিশের উদ্দেশ্যে। পুলিশের হেলমেট, পরনের পোশাক তা জণগনের টাকায় কেনা। যে লাঠি দিয়ে আমাদের পেটাচ্ছে তা আমাদের টাকায় কেনা। পুলিশ এত সাহস কোথায় পায়। আমরা বাহবা! দিয়েছি অনেকেই। পাশে দাঁড়িয়েছি কজন? যুগে যুগে কোন কিছুই আন্দোলন না করে পাওয়া যায় নি। ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র সবকিছুই আন্দোলনের শুভ ফলাফল।

বিভিন্ন সংগঠন, এনজিও, সাধারণ সচেতন মানুষ নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে কাজ করে আসছে। নতুন নতুন আইন হচ্ছে নারীর পক্ষে। তার প্রচার আছে, কখনও প্রয়োগ আছে। আবার বিভিন্ন ফাঁক ফোকরের মধ্য দিয়ে অভিযুক্তরা সুবিধা নিয়ে চলেছে। যার সরকারি ভাবে কোন মনিটরিং হচ্ছে না।

এক শ্রেনীর সুযোগ সন্ধানী, স্বার্থান্ধ মানুষ নারীকে পিছে ঠেলতে তৎপর। এরাও সমাজের সর্বস্তরে মিশে আছে।

আমরা ছেলে ও মেয়েকে সন্তান হিসেবে দেখতে চাই। সেই স্লোগানে বিশ্বাসী হতে চাই।

কিন্তু আমরা যে বিষয়টি দীর্ঘদিন লক্ষ্য করছি একজন কর্মজীবী মায়ের কোলে কোন সন্তান এলে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সেই মাকে পেশাগত কাজটি ছেড়ে দিতে হচ্ছে সন্তান দেখভালের জন্য। সরকার থেকে ৬ মাস ছুটির ব্যবস্থা আছে। বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতেও আছে। কিন্তু এরপর দায়িত্ব কে নেবে? সংসারে যদি কোন সিনিয়র সদস্য না থাকে। উচ্চ শিক্ষিত হয়েও মাকে দিতে হয় নিজের ক্যারিয়ার বিসর্জন। আর মেয়ে সন্তান হলে সেই সাথে বেড়ে যায় উদ্বেগ। কারণ নেই আমাদের সন্তানদের জন্য যথাযথ নির্ভরযোগ্য ডে-কেয়ার।

শিশু থেকে কিশোর, তরুণ হয়ে ওঠা অব্দি মাকে বাইরের দেখভালের দায়িত্বে থাকতে হয়। স্কুল, কলেজ, কোচিং, মার্কেট সবত্র ছুটে চলতে হচ্ছে মাকে তার সন্তানের জন্য। মেয়ে সন্তানের জন্য যেন দায়িত্ব আরও বেশী। তারপর এক সময় সেই পরিপূর্ণ বেকার হয়ে ঘরে থাকছে। এতে দেখা যায় সন্তানের মেধা বিকাশ, রুচি বোধে যেমন স্বাধীনতা হারাচ্ছে, পাশাপাশি মাও তার জীবনকে পরিপূর্ণ সাজাতে ব্যর্থ হচ্ছে। আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি একজন সিনিয়র ডাক্তার তার চেম্বারে রোগী রেখে সুযোগ করে ছুটছেন কলেজ পড়ুয়া মেয়ের বান্ধবীর জন্মদিনের গিফট কিনতে। তা না হলে মেয়ের অভিমান হবে। সে একা বাইরে যায় না, বা যেতে দেয়া হয় না। শুধু নিরাপত্তার অভাবে। একজন দাপুটে নারী এডভোকেটকে মেয়ের সাথে থাকতে প্র্যাকটিস ছাড়তে দেখেছি।

দেখা যায় আমার মা আমাকে যেভাবে আগলে রেখে উচ্চশিক্ষিত করেছেন, আমার মেয়ে সন্তানের ক্ষেত্রেও আমি তেমনটি করছি। তাহলে আমার কাছে আমার মায়ের স্বপ্ন, কিংবা চাওয়া-পাওয়া তো কিছু ছিল, তার বাস্তবায়ন কতটুকু করতে পারছি। এ ব্যর্থতা কার? আমার মেয়ে সন্তানটির ভবিষ্যত তো আমারই মত। কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার নারীর ক্যারিয়ার?একটা স্বাধীন উন্নয়নমুখী দেশে সন্তান পালনের কেন এই পিছুটান? যা নারীদের অর্থনৈতিক অর্জন থেকে দুরে রাখছে।

২৫ বছর আগে একটা মফস্বল শহরে আমার সাথে যে ঘটনা ঘটতে পারত, সৌভাগ্যবশত বেঁচে গিয়েছি, আজ রাজধানীর বুকে স্কুলের সামনে রিশার ক্ষেত্রে ঘটে গেল। অকালে হারিয়ে গেল নিস্পাপ মেয়েটি। পাঁচদিনেও ধরা পড়েনি কুলাঙ্গার ঘাতক।

পুলিশ ইচ্ছে করলে পারে না এমন কোন কাজ আছে বলে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে না। আজ যদি ফুটওভারব্রিজগুলোতে দায়িত্বরত পুলিশ থাকত, স্কুলের সিকিউরিটি মজবুত হত, কিংবা স্কুলভ্যানটি স্কুলের ভেতর থেকে ছাত্রী উঠাত তবে কি সুরাইয়া রিশাকে এভাবে জীবন দিতে হত?

যখন কোন জীবন হারিয়ে যায় হয়ত তখন আমরা জানতে পারি। এমন ঘটনা কত শত সম্ভাবনা হারিয়েছে, মূল্যবান জীবন মূহুর্তে মূল্যহীন হয়েছে, অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে তার কটার খবর আমরা রাখি? আমরা জানি এসব নির্যাতনকে কিভাবে দমাতে হয়, সরকারও জানে। কিন্তু বাস্তবায়ন কোথায়? এভাবে আর কতদিন পিছিয়ে থাকতে হবে আমাদের?

রিশা

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

খেলার জগতের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পেশাদারি কাঠামো

লাল-সবুজের তরুণ প্রজন্মের এ সময়ের প্রিয় শ্লোগান, ‘বাংলাদেশের জান, সাকিববিস্তারিত পড়ুন

আগস্টের শোককে শক্তি হিসেবে নিতে পারি আমরা তরুণেরা

“যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তিবিস্তারিত পড়ুন

বাবা যখন ধর্ষক

যেখানে আপন বাবাই ধর্ষণ করে, সেখানে সৎ বাবার ধর্ষণ আমাদেরবিস্তারিত পড়ুন

  • দুই বড় দেশ যখন প্রতিবেশী ও প্রতিযোগী
  • মৌসুমি নৌকা শোরুম
  • ভারতবিদ্বেষ কেন বেড়ে চলেছে?
  • জনগণের কাছে শেখ হাসিনাই জয়ী
  • ‘গুলিস্তান’ নেই, তবু আছে ৬৪ বছর ধরে
  • পদ্মা ব্রিজ দিয়ে কী হবে?
  • যুদ্ধাহতের ভাষ্য: ৭০– “এখন অমুক্তিযোদ্ধারাই শনাক্ত করছে মুক্তিযোদ্ধাদের”
  • আসুন, বড় হই
  • আসুন, পিঠের চামড়া না তুলে পিঠ চাপড়ে দিতে শিখি
  • বাড়িওয়ালা মওদুদ ও বাড়িছাড়া মওদুদ
  • ব্রিটেনের নতুন সরকার নিয়ে যে শঙ্কা!
  • আওয়ামী লীগ ছাড়া কি আসলে কোনো বিকল্প আছে?